‘বেগম জিয়ার প্রতি প্রতিহিংসাপরায়ণ সরকার ও সরকারপ্রধানের নিষ্ঠুর আচরণ যেন থামছেই না। দেশনেত্রীকে মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছে সরকার’ -এমন দাবী করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে সরকারের এধরণের অমানবিক আচরণের লক্ষ্য একটাই-তাহলো তাকে তিলে তিলে শেষ করে দিতে পারলেই ক্ষমতার মসনদ হারানোর কোনো ভয় থাকবে না।
মঙ্গলবার মহাখালিতে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নি:শর্ত মুক্তি এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা ও সাজা প্রত্যাহারের দাবিতে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে দলটির নেতাকর্মীরা। বিক্ষোভ মিছিলটি মহাখালী কাঁচাবাজার থেকে শুরু হয়ে বাসস্ট্যান্ডের কাছাকাছি গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়।
সমাবেশে রিজভী বলেন, ‘দেশের একজন জনপ্রিয় নেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে সরকারের এই নজীরবিহীন হিংসাশ্রয়ী নিষ্ঠুর আচরণে সারাদেশের মানুষের ক্ষোভ এখন তরঙ্গায়িত হয়ে উত্তাল ঢেউয়ে রুপান্তরিত হচ্ছে। ’
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘দেশে এখন গুনী, সম্মানীয় ও দেশবরেণ্য ব্যক্তিদের মান-সম্মান ধুলোয় লুটোপুটি খাচ্ছে। দেশজুড়ে চলছে তুঘলকী শাসন। ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’ এটি তোয়াক্কা না করে বরং এখন দেশে চলছে এক ব্যক্তির চোখ রাঙ্গানীর শাসন। এজন্যই আমরা দেখছি দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী যিনি সম্পূর্ণ নির্দোষ অথচ তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে কারাগারে রাখা হয়েছে এবং দেশের প্রধান বিচারপতিকে বন্দুকের নলের মুখে দেশ থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে। এই সাবেক প্রধান বিচারপতির একটি রায় আওয়ামী সরকারের বিপক্ষে ছিল বলেই আওয়ামী সরকার তার প্রতি ক্ষুব্ধ হওয়ার অংশ হিসেবে সম্প্রতি একজন মন্ত্রী তাকে নিয়ে যে অশালীন ভাষায় বক্তব্য দিয়েছেন-তাতে এটি প্রমাণিত হয়েছে যে, দেশের বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণে রেখে সর্বক্ষেত্রে প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে চায় সরকার।’
তিনি বলেন, ‘দেশে আইনের শাসন নেই বলেই চারবারের প্রধানমন্ত্রী, যিনি বারবার হারিয়ে যাওয়া গণতন্ত্রকে সাহসিকতার সাথে লড়াই চালিয়ে স্বৈরশাহীর কবল থেকে উদ্ধার করেছেন, যিনি গণমানুষের সর্বাধিক প্রাণপ্রিয় নেত্রী সেই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে কারাবন্দী করে রেখেছেন প্রতিহিংসাপরায়ণ বর্তমান সরকারপ্রধান।’
রিজভী বলেন, ‘বিনা ভোটে জোর করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকারী বর্তমান শাসকগোষ্ঠী ভালোভাবেই জানে যে, এবার ক্ষমতা হারালে জনগণের ওপর নির্বিচারে চলা জুলুম-নির্যাতনের ন্যায্য হিস্যা জনগণ আদায় করে ছাড়বে। আর এই উপলব্ধি থেকেই গদি হারানোর ভয়ে পথ নিষ্কন্টক করতে এবং জনগণের ওপর প্রতিশোধ নিতে আন্দোলন-সংগ্রামের অগ্রনায়ক বলিষ্ঠ কন্ঠস্বর বেগম খালেদা জিয়াকে কারারুদ্ধ করা হয়েছে-যাতে জনগণের ভোট ও নির্বাচনের অধিকার নিয়ে কেউ প্রতিবাদী হতে সাহস না পায়।’
সমাবেশে তিনি বেগম খালেদা জিয়ার নি:শর্ত মুক্তি এবং তাকে তার পছন্দের হাসপাতালে সুচিকিৎসার সুযোগ দানের দাবি জানিয়ে কারাবন্দী সকল নেতাকর্মীরও নি:শর্ত মুক্তি দাবি করছি।
বিক্ষোভ মিছিলে বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন। এসময় নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসা দাবি এবং তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে তারা স্লোগান দিতে থাকেন।