দুই বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সম্পর্কে আজ নিজেদের মনোভাব জানাবেন যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ। এ মধ্যবর্তী নির্বাচনের ফলাফলের ওপর বাইডেনের বাকি মেয়াদ কেমন যাবে তা অনেকাংশে নির্ভর করবে। রিপাবলিকানদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা পেলে বিভিন্ন ইস্যুতে বাইডেন বেকায়দায় পড়বেন। আইন পাশেও বাইডেন প্রশাসন বাধার সম্মুখীন হবে। খবর এপি, এএফপি, বিবিসি ও রয়টার্সের।
দুই বছর ধরে হাউজ ও সিনেট উভয়কক্ষেই ডেমোক্র্যাটিকরা সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রেখেছেন। ফলে আইন পাশ করা বাইডেনের পক্ষে অনেকটা সহজ ছিল। জরিপে দেখা গেছে, প্রতিনিধি পরিষদের (হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভস) নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেন রিপাবলিকানরা। অপরদিকে সিনেট ধরে রাখতে পারেন ডেমোক্র্যাটরা। চার বছর মেয়াদের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মাঝামাঝি সময়ে মধ্যবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ক্ষমতা ধরে রাখার পাশাপাশি প্রেসিডেন্টের জনপ্রিয়তা যাচাইয়েরও অন্যতম মাধ্যম এটি। এ নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থীদের সমর্থনে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং রিপাবলিকান প্রার্থীদের সমর্থনে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বেশ কয়েকটি নির্বাচনি প্রচারে অংশ নেন। জনগণকে তারা দলীয় প্রার্থীদের পক্ষে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান।
এদিকে, মধ্যবর্তী নির্বাচনের ঠিক আগে জনপ্রিয়তা ফিরে পেয়েছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। রয়টার্স-ইপসোস পরিচালিত এক জনমত জরিপে দেখা গেছে-৪০ শতাংশ মার্কিনি বাইডেনের পারফরম্যান্সে খুশি। জুনের শুরুর দিকে থেকে যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। দুদিনের জরিপে দেখা গেছে, এতে অংশ নেওয়া ৭৮ শতাংশ সমর্থক বাইডেনের ওপর খুশি। গত মাসে এ সংখ্যা ছিল ৬৯ শতাংশ। গত বছর আগস্ট থেকে বাইডেনের জনপ্রিয়তা পড়তির দিকে ছিল। তখন থেকে তা ৫০ শতাংশের নিচে চলে যায়। সবচেয়ে বেশি নেমেছিল এ বছর মে মাসে-৩৬ শতাংশ।
উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং কোভিড-১৯ মূলত এ পরিস্থিতির জন্য দায়ী। অপরদিকে, গ্যালাপের জরিপে দেখা গেছে-মধ্যবর্তী নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থীরা এগিয়ে আছেন। রিপাবলিকান প্রার্থীরা বিজয়ী হলে পরবর্তী নির্বাচনেও প্রভাব ফেলতে পারে।
নির্বাচনের আগের জরিপগুলোও বাইডেনের পক্ষে ওঠানামা করেছে। এছাড়া কংগ্রেসের স্পিকারের পরিবারের ওপরও হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসব বিষয় মধ্যবর্তী নির্বাচন এবং আগামী নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে। বিপরীতে কিছু সিদ্ধান্ত যেমন-৭ আগস্ট সিনেটে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে একটি ঐতিহাসিক বিল অনুমোদন পায়। এরসঙ্গে ওষুধের মূল্যহ্রাস এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে করপোরেট কর বাড়ানোর প্রস্তাব রেখে করা বিলেও অনুমোদন দেন সিনেটররা। সিনেট ও প্রতিনিধি পরিষদ নিয়ে মার্কিন কংগ্রেস গঠিত। কংগ্রেসের সদস্য সংখ্যা ৫৩৫ জন। এর মধ্যে সিনেটের সদস্য ১০০ জন, বাকিরা প্রতিনিধি পরিষদ সদস্য। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গরাজ্য দুজন করে সিনেট সদস্য নির্বাচিত করে, যারা সিনেটর হিসাবে পরিচিত এবং ছয় বছরের জন্য তারা নির্বাচিত হন। প্রতি দুই বছর পরপর সিনেটের এক-তৃতীয়াংশ আসনে নির্বাচন হয়। এবারের মধ্যবর্তী নির্বাচনে ১০০টি আসনের মধ্যে ৩৫টিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য ৪৩৫। প্রত্যেক সদস্য অঙ্গরাজ্যের একটি নির্দিষ্ট ডিস্ট্রিক্টের প্রতিনিধিত্ব করেন। তারা দুই বছর মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হন।