অবশেষে প্রমাণিত হলো যে, বিএনপির যুক্তরাষ্ট্র শাখা অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েনি। ১০ বছরের অধিক সময় যাবত কমিটি না থাকলেও এর পুরনো নেতৃত্বদের গ্রহণযোগ্যতা এখনও হাই কমান্ডে রয়েছে। তা দৃশ্যমান হলো ৮ নভেম্বর রাতে নিউইয়র্কে আয়োজিত সমাবেশে ঢাকা থেকে ভার্চুয়ালে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের বক্তব্য প্রদানের মধ্য দিয়ে। জুইশ সেন্টারের এই অনুষ্ঠানে ৩০/৩২ বছর যাবত সক্রিয় বিএনপির অনেকেই ছিলেন। সকলেই বাংলাদেশে চলমান বিএনপির আন্দোলনের সাথে সংহতি প্রকাশ এবং আন্তর্জাতিক জনমত গড়তে কাজের সংকল্প ব্যক্ত করেছেন। কেউ কেউ আন্দোলনের জন্যে তহবিল গঠনের কথাও উল্লেখ করেছেন।
মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেছেন, ‘সরকারের দুঃশাসন থেকে দেশকে রক্ষা করে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আন্দোলনে সবাইকে যোগ দিতে হবে। দেশে মানবাধিকার নেই, গণতন্ত্র নেই। শুধু বিএনপি নয় দেশের আপামর জনতাকে সঙ্গে নিয়ে স্বৈরশাসনের অবসান ঘটাতে হবে। যে আন্দোলন দানা বেঁধেছে তার ফলে এটা বলা যায় যে, সরকারের বিদায় ঘটবেই। সরকারের পতন শুধু সময়ের ব্যাপার’।
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের গণতন্ত্র এবং স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিকল্প নেই এবং এই দাবি আদায়ে সকলকে অনড় থাকতে হবে। এখন পদ-পদবি নিয়ে দলাদলির সময় নয়, এখন হচ্ছে আন্দোলনের এবং নিজ নিজ আত্মীয়-স্বজনকে বিএনপির কর্মসূচিতে সম্পৃক্ত করার সময়’।
এই সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও মূলধারার রাজনীতিক গিয়াস আহমেদ। বিএনপি নেতা মিল্টন ভূইয়ার সমন্বয়ে পরিচালনা করেন সাবেক যুগ্ম সম্পাদক কাজী আজম এবং কোষাধ্যক্ষ জসীম ভূইয়া। পরিচালনায় বিশেষ সহযোগিতায় ছিলেন যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক এম এ বাতিন।
এ সভায় বিশেষ সম্মানিত অতিথি ছিলেন সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক সম্পাদক কণ্ঠশিল্পী বেবী নাজনীন। সমন্বয়ের দায়িত্বে ছিলেন বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান।
আলোচনায় আরও অংশ নেন ডা. মজিবুর রহমান মজুমদার, কামাল সাঈদ মোহন, শরাফত হোসেন বাবু, আবদুস সবুর, অ্যাডভোকেট জামাল আহমেদ জনি, আনোয়ার হোসেন, মন্জুর চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা বাবর উদ্দিন, নিয়াজ আহম্মেদ জুয়েল, নুর মোহাম্মদ, জাহাঙ্গীর সরকার, আনোয়ারুল ইসলাম আনোয়ার, ফারুখ হোসেন মজুমদার, জহির মোল্লা, মোশারফ হোসেন সবুজ, আবু সাঈদ আহমমেদ, মাকসুদুল হক চৌধুরী, এম এ বাতিন, পারভেজ সাজ্জাদ, জাহাঙ্গীর সোহরাওয়ার্দী, আতিকুল আহাদ, সাইফুর খান হারুন এবং মাজহারুল ইসলাম জনি প্রমুখ।
নেতৃবৃন্দের মধ্যে আরও ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র জাসাসের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার সায়েম রহমান, সৈয়দ এম রেজা, শাহ আলম, আব্দুস সবুর, ফিরোজ আহমেদ, এস এম ফেরদৌস, শরিফ লস্কর, শাহাদৎ হোসেন রাজু, এবাদ চৌধুরী, আবুল কাশেম, মিজানুর রহমান মিজান, বাসিত রহমান, সৈয়দা মাহমুদা শিরিন, রফিকুল ইসলাম দুলাল, আমানত হোসেন, মোর্শেদ আলম বাবর, হাসান আহমেদ, সাইফুর খান হারুন, মোস্তাক আহমেদ, জাকারিয়া অপু।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতৃত্বে বরাবরই বিভিন্ন সিটি ও স্টেট কমিটি গঠিত হয়েছে। কিন্তু এক দশকের অধিক সময় কমিটি না থাকায় কেন্দ্রীয় সমন্বয়ে বেশ কটি সিটি ও স্টেটের কমিটি হওয়ায় কেউ কেউ প্রচার করছেন যে, কেন্দ্রীয়ভাবে আর কোনো কমিটির প্রয়োজন নেই। তবে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র ব্যানারের আয়োজনে মহাসচিবের বক্তব্য প্রদানের মধ্যদিয়ে সে ধরনের আশংকা দূর হলো বলে তৃণমূলের কর্মীরা মনে করছেন।