রংপুরের সিনিয়র আইনজীবী ও সাবেক এপিপি আসাদুল হক হত্যা মামলায় দু’জনকে মৃত্যুদণ্ড ও একজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছে আদালত।
সোমবার দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১-এর বিচারক হাসান মাহমুদুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন।
রংপুর জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল মালেক জানান, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন রংপুর মহানগরীর তাজহাট ধর্মদাস বারো আউলিয়া গ্রামের মৃত জাফর ড্রাইভারের ছেলে রতন মিয়া (৩১) ও খোর্দ্দ তামপাট আদর্শপাড়ার মনির মিস্ত্রির ছেলে সাইফুল ইসলাম (২৮)। এছাড়াও যাবজ্জীবন দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত অপর আসামি হলেন রতন মিয়ার মা মোরশেদা বেগম (৫৯)। এছাড়া তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
এদিকে রায় ঘোষণার পর কাঠগড়া থেকে কারাগারে নেয়ার সময় পুলিশের সাথে বিতণ্ডায় জড়ায় আসামিরা। প্রিজন ভ্যানে উঠতে গিয়ে কোর্ট পুলিশের সাথে বিতণ্ডা হয়।
পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) জানান, ২০২০ সালের ৫ জুন বগুড়া আজিজুল হক কলেজের শিক্ষার্থী আরফিন নাহার অঙ্কনকে নিয়ে আইনজীবী আসাদুল হকের স্ত্রী গ্রামের বাড়ি রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বালুয়া ছড়ানে যান। এ সময় নগরীর ধর্মদাস বারো আউলিয়া বাড়িতে অবস্থান করছিলেন আসাদুল হক। বেলা দেড়টার দিকে ধর্মদাস বাড়িতে চুরি করতে গিয়ে আইনজীবী আসাদুল হকের হাতে ধরা পড়েন আসামি রতন মিয়া। এ সময় তার সহযোগী সাইফুল পালিয়ে যায়। রতন নিজেকে বাঁচাতে আসাদুল হকের গলায় এবং পেটে ছুরিকাঘাত করে দেয়াল টপকে পালানোর চেষ্টা করে। এসময় তার হাতে রক্ত মাখা দেখে স্থানীয়রা আটক করে পুলিশে দেয়।
ঘটনার দিনই আসাদুলের কন্যা অঙ্কন রতন মিয়া ও সাইফুল ইসলামের নামে হত্যা মামলা করেন। তদন্তে রতন মিয়ার মা মোর্শেদা বেগমের নাম আসে। তাদের তিনজনের বিরুদ্ধে পুলিশ চার্জশিট দেয়। পরে দ্রুত বিচার আইনে মামলার বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। স্বাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালতের বিচারক সোমবার এই রায় দেন।
পিপি জানান, আদালতের রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। এখন দ্রুত রায় বাস্তবায়ন যেন হয় সেই প্রক্রিয়ায় আগাতে চায়।
আইনজীবী আসাদুল হকের বড় মেয়ে আশা হক অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী। রায় ঘোষণার পর সন্তোষ প্রকাশ করেছেন আসাদুল হকের কন্যা আফরিন নাহার অঙ্কন।
তিনি জানান, করোনার কারণে এই মামলার বিচারকাজে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। তারপরেও আমরা সন্তুষ্ট। আদালত আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দিয়েছেন। এখন আমাদে চাওয়া রায় বাস্তবায়ন করা হোক।