তাহলে কী রাশিয়া বিশ্বকাপের মতো কাতারের মাটি থেকেও প্রথম রাউন্ডে বিদায় নেবে চার বারের চ্যাম্পিয়ন জার্মানি। আল বায়েত স্টেডিয়ামের ম্যাচের ৮২ মিনিট পর্যন্ত এই আলোচনাই ছিল অধিকাংশের মুখে। অন্যদিকে স্প্যানিশ দর্শকরা টানা দ্বিতীয় ম্যাচ জিতে নক আউট পর্ব নিশ্চিতের অপেক্ষায়।
কাতার বিশ্বকাপের প্রথম হাই ভোল্টেজ ম্যাচে হারেনি কোনো দলই। একই সাথে বাড়ি ফেরার বিমান ধরতে ব্যাগও গোছাতে হচ্ছে না জার্মানদের।
‘ই’ গ্রুপের এই ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত ১-১ গোলে ড্র হওয়ায় পঞ্চম বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন এখনো টিকে আছে জার্মানদের। অন্যদিকে ২০১০ সালের আসরের চ্যাম্পিয়নদের শেষ ১৬ নিশ্চিত করতে ১ ডিসেম্বর রাত পর্যন্ত বসে থাকতে হবে। সেদিন রাত ১টায় গ্রুপের শেষ ম্যাচে স্পেনের প্রতিপক্ষ জাপান। জামার্নীকে জিততে মোকাবেলা করতে হবে কোস্টারিকাকে।
দুই সাবেক চ্যাম্পিয়নের লড়াই।
ম্যাচটাকের উপভোগ্য করে ছেড়েছেন দুই দলের খেলোয়াড়রা। একে বারে শেষে মিনিটে লেরয় সানে যদি গোলরক্ষক উনাই সিমনকে কাটানোর পর বলটি স্ট্রাইকার নিকলাস ফ্লুকরোককে দিতে পারতেন তাহলে রাতটা জার্মানদেরই হতো। সেই বল ক্লিয়ার করেন স্পেন ডিফেন্ডার। ৮৩ মিনিটে এই ফ্লুকরোকের ডান পায়ের তীব্র শটেই হার এড়ানো সমতাসূচক গোল জার্মানদের। করিম আদেইমির পাস থেকে ডান পায়ের বুলেট গতির শটে স্তম্ভিত করে দেন স্পেনের গোলরক্ষক উনাই সিমনকে। বক্সের ভেতর থেকে নিয়ে ছিলেন কোনাকোনি শট। এর গতি এতোই তীব্র ছিল যে হাত বাড়িয়ে তা থামানের চেস্টার সুযোগই পাননি স্পেন কিপার।
তবে ম্যাচটা শুরু হয়েছিল স্পেনের দাপট দিয়ে। আগের ম্যাচে কোস্টারিকাকে ৭ গোলে উড়িয়ে দেয়া দলটি ম্যাচের ৬ মিনিট বয়সেই এগিয়ে যেতে পারতো। বক্সের বাইরে থেকে দানি আলমোর প্রচন্ত গতির শটে প্রথমে বাধা জার্মান কিপার ম্যানুয়েল নুয়্যার। এরপর তা ক্রসবারে লেগে ফেরত আসে। ২৫ মিনিটে গোলরক্ষক সিমনের ভুল পাসে গোলের কাছে চলে গিয়েছিল প্রথম ম্যাচে জাপানের কাছে হেরে যাওয়া জার্মানি। শেষ পর্যন্ত তিনি নিজেই সার্জে গেনার্বের শট ডান দিকে শরীর ফেলে রুখে দেন। ১২ ও ৩৩ মিনিটে জর্দি আলবা এবং ফারান টরেসের দুটি শট অল্পের জন্য লক্ষ্য মিস করে।
চাপে থাকা জার্মানি খেলার ধারার বিপরীতে ৩৯ মিনিটে ফ্রি-কিক থেকে গোলও পায়। তবে অফসাইডের কারণে এন্থনিও রুডিগারের হেডের সেই গোল বাতিল করেন রেফারি। ৪৪ মিনিটে জার্মানির আইকে গুনদিগানকে হতাশ করেন স্পেনের শেষ প্রহরী। ৫৭ মিনিটে রদ্রির শট ন্যুয়ার কর্নার করার পর ৬২ মিনিটে ম্যাচের প্রথম গোল। অভিজ্ঞ জর্দি আলবার ক্রসে দূর্দান্ত এক গোল বদলি হিসেবে নামা আলভারো মোতারার। ডান পায়ের ফ্লিকে বোকা বানান ন্যূয়ারকে। ৬৪ মিনিটে আলবার পাসে মার্কো এসেনসিও বল বার উচিয়ে মারলে ব্যবধান দ্বিগুনের সুযোগ হারায় লুইস এনরিখের দল।
বাকি সময়ে কোচ হ্যান্সি ফ্লিক আসরে টিকে থাকতে চেষ্টা কৌশল অবলম্বন করেন। বদল করেন তিন ফুটবলার। এতেই ড্র করা ২০১৪সালের আসরের চ্যাম্পিয়নদের। ৭৩ মিনিটে জামাল মুসিয়ালার শট সিমনের বাধায় জালে না গেলেও ৮৩ মিনিটে জার্মান লিগ ওয়েরডের ব্রেমেনে খেলা বদলী স্ট্রাইকার ফ্লুকরোকের শটে নক আউটে যাওয়ার রেসে থাকা জার্মানদের।