শস্য ভাণ্ডার হিসেবে খ্যাত পশ্চিম বগুড়ার আদমদীঘিতে প্রচুর পরিমাণে শীতের শাকসবজি বাজারে উঠতে শুরু করেছে। তবে বাজারে আমদানির পরিমাণ বেশি হওয়ায় দাম কমেছে। সবচেয়ে দাম কমেছে মুলার। পাইকারি বাজারে প্রতিকেজি মূলা এখন ১ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। দাম কমায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন চাষিরা।
এদিকে মূলার গায়ে দাগ হওয়ায়, বাজারে চাহিদা না থাকায় এবং মূলা বাজারজাত করতে শ্রমিকের মূল্যও উঠবেনা চিন্তা করে ফসলি জমি থেকে এসব মূলা তুলে ফেলে দেওয়া হচ্ছে।
আরেক কৃষক দেলোয়ার হোসেন জানান, তিনি খরচ তুলতে কয়েকমণ মূলা হাটে নিয়ে এসে বিপদে পড়েন। এক টাকা দরেও মূলা বিক্রি করতে পারেননি। এবার মূলা চাষ করে তিনিও হতাশ হয়েছেন। এজন্য মূলা তুলে ফেলে দিয়ে তিনি ওই জমিতেই অন্য শাকসবজি চাষ করবেন।
উপজেলার ছাতিয়ানগ্রাম হাটের মূলা ব্যবসায়ী আইয়ুব আলী ও সোহেল রানা জানান, শুরুর দিকে আশানুরুপ দাম পেলেও মূলার বাজারমূল্যে দ্রুত ধস নেমেছে। শুরুর দিকে আড়াই হাজার টাকা মণ থাকলেও এখন ৪০ টাকা মণ দরে মূলা বিক্রি করতে হচ্ছে। এ ছাড়া হাটে প্রচুর মূলার আমদানি হয়েছে, তাই দাম কম। ফলে মূলা নিয়ে হাটে এসে ক্রেতার অভাবে বসে থাকতে হয়। কেউ দাম করছে না, এ কারণে কৃষকের লাভ তো দূরের কথা খরচও উঠছে না।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় চলতি রবি ২০২২-২৩ মৌসুমে ৩১৫ হেক্টর জমিতে শীতকালীন শাকসবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে এবার ৩২০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। মৌসুমের শুরুতে শাকসবজির দাম কিছুটা বেশি থাকলেও উৎপাদন বেশি হওয়ায় কমেছে দাম। শাকসবজি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিঠু চন্দ্র অধিকারী জানান, মৌসুমের শুরু থেকেই কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া আবহওয়া ভালো থাকায় ফলনও ভালো হয়েছে। ফলে লক্ষ্যমাত্রা ছেড়ে গেছে। এবার অন্য সবজির সঙ্গে চাষিরা একসঙ্গে প্রচুর পরিমাণ মূলা চাষ করেছেন। ফলন ভাল হওয়ায় হাট-বাজারে আমদানিও বেশি। তাই দাম দ্রুত কমে যাচ্ছে।