২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর দেশটিতে পাস হওয়া প্যাট্রিয়ট আইনের আওতায় প্রথম অভিযুক্ত ব্যক্তি হচ্ছেন আবদুল্লাহ আল-ফয়সাল। তাকে নিয়ে নিউইয়র্ক টাইমস বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
আবদুল্লাহ আল-ফয়সাল, বয়স ৫৯ বছর। ধর্মীয় বিষয়ে উগ্র বক্তব্য দেওয়ার জন্য পরিচিত তিনি। নিজের ওয়েবসাইটে তার সেসব বক্তব্য প্রচার-প্রকাশ করা হয়। অংশ নেন দেশ-বিদেশের বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও। যুক্তরাজ্যের লন্ডনে গ্রেপ্তার হয়ে নয় বছরের কারাদণ্ড হয়েছিল ফয়সালের। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ঘৃণা ছড়িয়েছেন, হত্যার আহ্বান জানিয়েছেন। পরে সাজাভোগ স্থগিত রেখে তাকে নিজ দেশ জ্যামাইকায় ফেরত পাঠায় যুক্তরাজ্য সরকার।
এখন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের আদালতে বিচার চলছে ফয়সালের। তার বিরুদ্ধে ইসলামিক স্টেটের মতবাদ ছড়িয়ে দিতে ভূমিকা রাখা এবং আইএসে অংশ নিতে চাওয়া এক নারীকে (আদতে ওই নারী ছিলেন একজন গোয়েন্দা) সহায়তার করার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনা হয়েছে। গত নভেম্বরে স্টেট সুপ্রিমকোর্টে এই মামলার বিচার শুরু হয়েছে।
ফয়সালের ক্ষেত্রে নিউইয়র্কের তদন্তকারীরা হোয়াটসঅ্যাপ ও স্কাইপিতে ভুয়া আইডি খুলে তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন, চ্যাট করেছিলেন। এমনকি মধ্যপ্রাচ্যে সফর করেছিলেন। ফয়সালকে অভিযুক্ত করার সময় ম্যানহাটনের ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি ছিলেন সাইরাস আর ভ্যান্সি জুনিয়র। তিনি বলেন, সুদূরপ্রসারী এই তদন্ত তাদের শহরকে নিরাপদ রেখেছে। তিনি (ফয়সাল) এমন একটি জিহাদ উসকে দিচ্ছিলেন, যার প্রভাব ম্যানহাটনের সড়কে পড়ার আশঙ্কা ছিল।
তবে ফয়সালের আইনজীবী তাকে একজন ‘বড় বক্তা’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। তাদের মতে, সহিংসতা উসকে দেওয়ার মতো কাজ ফয়সাল করেন না। তাকে এখন জঙ্গি হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। এমনকি এটা করতে গিয়ে পরিচয় গোপন করে যোগাযোগ করেছেন গোয়েন্দারা। এটা করতে গিয়ে তারা ফয়সালকে ‘ভীষণ স্মার্ট’ বলে উল্লেখ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রকে ‘যুদ্ধের ভূমি’ বলেছেন তারা। এভাবে তারা ফয়সালের বিশ্বাস অর্জন করার চেষ্টা করেছেন।
ফয়সালের আইনজীবী অ্যালেক্স গ্রোসটার্ন আদালতকে বলেন, আদালতে যেসব তথ্যউপাত্ত উপস্থাপন করা হয়েছে, তাতে ফয়সালের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ নেই।