‘আমি খেপলে খারাপ আছে কিন্তু’, স্বভাবজাত হুশিয়ারি ডোনাল্ড ট্রাম্পের। ‘আমি তো নির্বাচনে হারিনি’, পুনরাবৃত্তি করেছেন প্রমাণহীন পুরনো দাবি। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তৃতীয় দফার প্রচারাভিযান শুরুর প্রথম সভায় তিনি এসব উচ্চারণ করেছেন। মসনদ ‘পুনরুদ্ধারের’ বিষয়ে সাবেক এই প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘আমি আগের থেকে আরও বেশি প্রত্যয়ী’। খবর সিএনএন ও সিএনবিসির।
চূড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে লড়ার সুযোগ পেলে ট্রাম্প যে আবার ক্ষমতায় চলে আসতে পারেন, এ প্রসঙ্গে মার্কিন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. ড্যানিয়েল ম্যালিনসন এ লেখককে ইমেইলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘আমি বলছি না যে, তার জয় পাওয়ার সম্ভাবনা শতভাগ। তবে একটা কথা কি জানেন তো, আমেরিকার রাজনীতিতে পরাজিতরা খুব কমই পুনরুত্থিত হয়। কিন্তু ট্রাম্প ভিন্ন চরিত্র, তিনি অবশ্য অনেক ছাঁচ ভেঙেছেন।’
তবে অন্য প্রচার-সমাবেশ থেকে এ দুটোর তফাত আছে। অন্যগুলোয় কানায় কানায় সমর্থক ভরা থাকে, আর তারা সে শ্লোগানে ও সুরে মাতিয়ে রাখে পুরোটা সময়। কিন্তু শনিবারের দুটো প্রচারসভা সে অর্থে ‘নীরব’ সভা ছিল যেন। নিউ হ্যাম্পশায়ারের সালেমে রিপাবলিকান দলের রাজ্য কমিটির বার্ষিক সভায় তিনি প্রচার চালান। এরপর সাউথ ক্যারোলাইনায় ক্যাপিটল ভবনে মাত্র ২০০ মানুষের সামনে বক্তব্য রাখেন। পরের সভায় উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের গভর্নর হেনরি ম্যাকমাস্টার ও সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম।
আগামী নির্বাচনে ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট ডেমোক্র্যাট নেতা জো বাইডেন লড়বেন কিনা তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে সিএনবিসি বলছে, বাইডেন দাঁড়ালে ট্রাম্প কি তাকে পরাজিত করার ক্ষমতা রাখেন- প্রকাশ্যে এমন সংশয় পোষণ করেছেন নির্বাচিত অনেক রিপাবলিকান নেতা।
এমনটা স্বীকার করেছেন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা সহযোগী ভিক্টোরিয়া কুপার। তিনি দ্য কনভারসেশনে প্রকাশিত এক প্রবন্ধে বলেছেন, ‘সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স থেকে শুরু করে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও পর্যন্ত অনেক রিপাবলিকান যারা ঐতিহ্যগতভাবে ট্রাম্পের প্রতি ও তার মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন (মাগা) আন্দোলনের প্রতি অনুগত, তারা তার চব্বিশের উচ্চাকাক্সক্ষার প্রতি তেমন একটা সমর্থন জানাচ্ছেন না।’ অবশ্য কুপার এও বলেছেন, ‘তবে ট্রাম্পের ক্ষমতা যেখানে গুরুত্বপূর্ণ সেখানে কিন্তু হ্রাস পায়নি।’
ট্রাম্পের বিদ্বেষবাদী কথার ধারও কমেনি এতটুকু। যেমন তিনি সাউথ ক্যারোলাইনায় বলেছেন, ‘বামপন্থি উগ্র বর্ণবাদী ও বিকৃতমনাদের বধ করেই ছাড়ব। ওরা আমাদের তরুণসমাজকে তাদের দলে ভেড়ানোর চেষ্টা করছে। ওদের মার্কসবাদী হাত থেকে যেন আমাদের শিশুরা রক্ষা পায়, সেজন্য যা যা করার সবই করব।’
লিঙ্গবিদ্বেষী কথাও বলেছেন ট্রাম্প। তার ভাষায়, ‘জেন্ডার আদর্শের নব্য সংস্কৃতিকে আমরা পরাহত করব। আমরা বুঝিয়ে দেব, ঈশ্বর শুধু দুটো লিঙ্গ সৃষ্টি করেছেন : নর ও নারী। পুরুষ যে মেয়েলি খেলা খেলবে, আমরা তা হতে দেব না।’
২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বাইডেনের কাছে হেরে গিয়েছিলেন ট্রাম্প। তবে এখন পর্যন্ত তিনি ওই পরাজয় স্বীকার করেননি। ভোট জালিয়াতি করে ডেমোক্র্যাটরা তাকে হোয়াইট হাউস থেকে সরিয়েছে বলে মনে করেন তিনি। তবে এখন পর্যন্ত ভোট কারচুপির কোনো প্রমাণ তিনি প্রকাশ্যে আনতে পারেননি।