বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৩৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
ভারত থেকে চিন্ময়ের মুক্তি দাবি কিসের আলামত, প্রশ্ন রিজভীর আইনজীবী হত্যার ভিডিও ফুটেজ দেখে গ্রেফতার ৬ : প্রেস উইং চিন্ময় ইস্যুতে ভারতের বিবৃতি দেয়া অনধিকার চর্চা : উপদেষ্টা নাহিদ রয়টার্সের মনগড়া সংবাদের প্রতিবাদ জানালো সিএমপি হাইকোর্টের নজরে ইসকন-চট্টগ্রামের ঘটনা : আদালতকে পদক্ষেপ জানাবে সরকার ইসকন ইস্যুতে দেশি-বিদেশি ইন্ধন থাকতে পারে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যা, যে নির্দেশ দিলেন প্রধান উপদেষ্টা স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও তাদের লেজ রেখে গেছে : তারেক রহমান আইনজীবীকে ‘কুপিয়ে হত্যা করল’ ইসকন সদস্যরা অনির্দিষ্টকালের জন্য সেন্ট গ্রেগরি হাইস্কুল বন্ধ ঘোষণা

ডাক্তারদের কমিশনবাণিজ্য, ব্যয় বাড়ে চিকিৎসার

বাংলাদেশ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
  • ৭৬ বার

দেশে প্রতিবছর চিকিৎসার পেছনে রোগীদের যত অর্থ ব্যয় হয়, তার বড় অংশই যায় রোগ নির্ণয়ে। এসব রোগ নির্ণয়ের (ডায়াগনসিস) সিংহভাগই হয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে, যেখানে সরকারি হাসপাতালের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি অর্থ খরচ হয়। এ তথ্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের। আর এই অতিরিক্ত ব্যয়ের প্রধান কারণ হিসেবে দায়ী করা হচ্ছে বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে চিকিৎসকদের অনৈতিক সুবিধা গ্রহণকে। সরকারিভাবে সুযোগসুবিধা বৃদ্ধি পাওয়ার পরও বর্তমানে দেশের ৮৫ ভাগ রোগী বেসরকারি চিকিৎসার ওপর নির্ভরশীল। এর পেছনের অন্যতম প্রধান কারণও এই অনৈতিক চর্চা। এ অবস্থায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও চিকিৎসকরা লাভবান হলেও চিকিৎসার উচ্চ ব্যয় মেটাতে গিয়ে প্রতিবছর দারিদ্র্যসীমায় চলে যাচ্ছে অর্ধকোটি মানুষ।

চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশের সরকারি হাসপাতালের ২০-২৫ শতাংশ চিকিৎসক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে রোগী পাঠিয়ে বিশেষ সুবিধা নেন। এই কাজে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে কনস্যালট্যান্ট, সহযোগী ও সহকারী অধ্যাপকরা। তবে অধ্যাপক ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের অনেকে এড়িয়ে যান। দেখা গেছে, যত বড় নামকরা প্রতিষ্ঠান, চিকিৎসকদের কমিশন প্রদানের হার তার তত বেশি।

সম্প্রতি এ নিয়ে আক্ষেপ ঝরেছে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আনোয়ার হোসেন হাওলাদারের কণ্ঠেও। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর একটি হোটেলে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘চিকিৎসার সরকারি ব্যয় আগের তুলনায় বেড়েছে। তার পরও মানুষের চিকিৎসা ব্যয় বেড়েই চলেছে। যার বড় একটি কারণ চিকিৎসকদের একটি অংশের অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ।’

চিকিৎসকদের এমন অনৈতিকতা বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) আইনের বিরোধী বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। তবে নিজে থেকে পদক্ষেপ নেওয়ার সক্ষমতা নেই বিএমডিসির। সমস্যা সমাধানে সরকারি হাসপাতালেই প্রাইভেট প্র্যাকটিস চালুর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। যদিও তা কতটুকু সুফল আনবে তা নিয়ে রয়েছে নানা প্রশ্ন।

সরেজমিনে জানা গেছে, ডায়াগনস্টিক পরীক্ষার পেছনে খরচের তুলনায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে রোগীদের গুনতে হচ্ছে অন্তত পাঁচগুণ বেশি অর্থ। চিকিৎসকদের কমিশন দেওয়ায় খরচ বেড়ে যায় বলে জানিয়েছেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা।

রাজধানীর ধানমন্ডির প্রথম সারির একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের তথ্য বলছে, থাইরয়েড হরমোন টিএসএইচ পরীক্ষার ক্ষেত্রে ৬০ টাকার রিএজেন্ট, ৫০ টাকার সহায়ক ম্যাটেরিয়াল, জনবল ও লজিস্টিক বাবদ ৫০ টাকাসহ সর্বোচ্চ খরচ হয় ১৬০ টাকা। একইভাবে লিপিড প্রোফাইলে ২৭৭ টাকা এবং হেপাটাইটিস নির্ণয়ে খরচ ১৯০ টাকা। অথচ এসব পরীক্ষায় ডায়াগনস্টিক সেন্টারভেদে টিএসএইচ পরীক্ষয় ১৬০ টাকার বিপরীতে ৬০০-১১০০ টাকা, লিপিড প্রোফাইলে ৭৫০-১৫০০ টাকা এবং হেপাটাইটিসে ৪৫০-১২০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। ফলে একেকটি রোগ নির্ণয়ে রোগীদের পরিশোধ করতে হচ্ছে খরচের পাঁচ থেকে দশগুণ বেশি অর্থ।

রাজধানীর ধানমন্ডির ল্যাবএইড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে লিপিড প্রোফাইল পরীক্ষার মূল্য ১ হাজার ৩৯০ টাকা। একই মানের পপুলার ও ইবনে সিনায় তা ১০০০ ও ৮০৭ টাকা। একইভাবে টিএসএইচ পরীক্ষায় ল্যাবএইডে যেখানে ১ হাজার ৩০০ টাকা, পপুলারে তা ৯০০ এবং ইবনে সিনায় নেওয়া হচ্ছে ৬৫৭ টাকা। অর্থাৎ একই এলাকার প্রায় একই মানের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে দামের পার্থক্য কয়েক ধরনের।

ল্যাবএইডের ধানমন্ডির শাখার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা আমাদের সময়কে জানান, ‘আমাদের এখানে প্রতি মাসে গড়ে লাখের বেশি প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা হয়ে থাকে। এসব পরীক্ষার বড় একটি অংশ আসে সরকারি হাসপাতালের চুক্তিবদ্ধ চিকিৎসকদের মাধ্যমে। ফলে ওই চিকিৎসকদের বড় একটি অংশকে কমিশন দিতে হয়।’

দীর্ঘদিন ধরে কিডনি সমস্যায় ভুগতে থাকা আয়েশা বেগমকে (৪২) গত ৮ ফেব্রুয়ারি আনা হয় রাজধানীর জাতীয় কিডনি রোগ ও ইউরোলজি ইনস্টিটিউটে। প্রতিষ্ঠানটিতে সব ধরনের পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকলেও দুই ধরনের প্রসাব পরীক্ষা করাতে রোগীর স্বজনকে পাশের পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পাঠান দায়িত্বরত চিকিৎসক।

আবার পেটব্যথা নিয়ে একই দিন দুপুর ১২টায় শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগে যান শামিমা সুলতানা (৩০)। পরে মেডিসিন থেকে সার্জারি বিভাগে পাঠানো হয়, ভর্তিও করানো হয় তাকে। এ হাসপাতালে এমআরআই ছাড়া প্রায় সব ধরনের পরীক্ষা হলেও সিটি স্ক্যান করতে পাশের ভিক্টোরিয়া হেলথ কেয়ারে পাঠান কর্তব্যরত চিকিৎসক।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল, হৃদরোগ ও কিডনি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা নিতে আসা অনেক রোগীকে পাশের পপুলার, ভিক্টোরিয়া হেলথ কেয়ার, রয়্যাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মতো প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয়। এতে করে সরকারি হাসপাতালের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি দামে পরীক্ষা করাতে হচ্ছে রোগীদের।

পিছিয়ে নেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের মতো প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসকরাও। গত ২৩ ডিসেম্বর দাঁতের সমস্যা নিয়ে প্রতিষ্ঠানটিতে যান মো. আব্দুল কাইয়ুম। প্রতিষ্ঠানটিতেই দাঁতের চিকিৎসায় সব ধরনের ব্যবস্থা রয়েছে। তবে সিরিয়াল পেতে দেরির কথা বলে ল্যাবএইডে পাঠানো হয় তাকে।

আব্দুল কাইয়ুম বলেন, ‘আমরা দাঁতের রুট ক্যানেল করতে হবে। সরকারিতে করতে হলে এক মাস লেগে যাবে বলে জানান ওই চিকিৎসক। পরে বলেন, ল্যাবএইডে যান, আমি বলে দেব। তাই ওখানে করিয়েছি। যেখানে সরকারিতে করালে আমার সর্বোচ্চ ৫শ টাকা লাগত, সেখানে খরচ হয়েছে চার হাজার টাকা।’

বিএসএমএমইউ হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. জিল্লুর রহমান আমাদের সময়কে বলেন, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কয়েক শিফটে কাজ করা স্টাফ, বিল্ডিং ভাড়া সবকিছু হচ্ছে রোগীর রোগ নির্ণয় খরচের ওপর। কিন্তু পরীক্ষার পেছনে খরচের তুলনায় সেটি কিছু নয়। সমস্যা হচ্ছে আমরা চিকিৎসকরা কমিশন খাচ্ছি। এ ব্যবস্থা না থাকলে অধিকাংশ ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ হয়ে যেত। আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, বর্তমানে ২০-২৫ শতাংশ চিকিৎসক এই বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত, যার প্রভাব পড়ছে রোগীদের ওপর।

এই চিকিৎসকের কথার প্রমাণও মেলে গুলশান ২-এর নামকরা একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এক মাসের কমিশন লেনদেনের চিত্রে। চিকিৎসকভেদে সেখানে ২৫ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কমিশন দেওয়া হয়। শুধু ডিসেম্বরে মাসেই ওই প্রতিষ্ঠানটি অর্ধকোটি টাকা কমিশন দিয়েছে চিকিৎসকদের, যেখানে একেকজন চিকিৎসক গড়ে পেয়েছেন সাড়ে ৫ লাখ টাকা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিংহভাগ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগী দেখার ফি নির্ধারণ করেন চিকিৎসকরাই। প্রতিষ্ঠানগুলোর মুনাফা নির্ভর করে সরকারি হাসপাতাল থেকে পাঠানো রোগীর ওপর। তবে একেক প্রতিষ্ঠানের কমিশনের হার একেক রকম। সবচেয়ে বেশি এগিয়ে কনসালট্যান্ট পদের চিকিৎসকরা। এরপর সহকারী অধ্যাপক। এসব কমিশনের টাকা অধিকাংশ সময়ে নগদ (খামে করে) দেওয়া হয়। এ ছাড়া ব্যাংকের মাধ্যমেও কোনো কোনো চিকিৎসক নেন বলে জানিয়েছেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর একাধিক কর্মকর্তা।

তবে সুবিধা নেওয়ার কথা স্বীকার করলেও বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চান না অধিকাংশ চিকিৎসক। পপুলার হাসপাতালের একজন শিশু বিশেষজ্ঞ আমাদের সময়কে বলেন, ‘সরকারি প্রতিষ্ঠানের বাইরে আমি এখানে (পপুলার) বসি। নিজেও এটার সঙ্গে জড়িত ছিলাম। তবে এখন এড়িয়ে চলি।’ এর বেশি কিছু বলতে রাজি হননি তিনি।

চিকিৎসকদের এমন অনৈতিক সুবিধার কারণে ডায়াগনস্টিক পরীক্ষায় খরচ বেশি হওয়ার প্রধান কারণ বলে জানান বেসরকারি ইম্পালস হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. জাহির আল আমিন। আমাদের সময়কে তিনি বলেন, কমিশনবাণিজ্যের কারণে দিন দিন চিকিৎসা ব্যয় মারাত্মক পর্যায়ে যাচ্ছে। যেসব হাসপাতালে রোগ নির্ণয়ের ব্যবস্থা আছে, সেখানে ডাক্তার, নার্স থেকে শুরু করে শয্যার ভাড়াসহ আনুষঙ্গিক খরচের একটি অংশ আসে পরীক্ষা-নিরীক্ষার খরচ থেকে। কিন্তু যারা শুধুই ডায়াগনস্টিক পরীক্ষা করেন, সেখানে অনেক বেশি খরচ বহন করতে হয় রোগীদের। সেন্টারগুলোতে পরীক্ষার সিংহভাগই চিকিৎসকদের রেফার করা। বেশির ভাগই এই কমিশন খাচ্ছেন। আমার হাসপাতালে দিচ্ছি ২০ শতাংশ, অন্য কোথাও তাকে ৫০ শতাংশ দিচ্ছে। ফলে আমার ডাক্তারদেরই কেউ কেউ এখানে পরীক্ষা না দিয়ে অন্যখানে পাঠাচ্ছেন।

চিকিৎসকদের কমিশনবাণিজ্যের কথা স্বীকার করে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সাবেক মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এমএ আজিজ বলেন, ‘অল্প কিছু চিকিৎসক এই অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িত। অথচ এই অপবাদ গোটা চিকিৎসক সমাজকে বইতে হয়। চিকিৎসকদের সতর্ক হওয়ার পাশাপাশি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকদেরও এই সুবিধা দেওয়া থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। নতুবা সরকার এখানে কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারে।’

বিষয়টি নিয়ে কথা হলে বিএমডিসির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মাহমুুদ হাসান আমাদের সময়কে বলেন, ‘বিএমডিসি আইন অনুযায়ী কোনো চিকিৎসক এমন অনৈতিক কাজ করতে পারেন না। আমরা ব্যবস্থা নিতে চাইলেও সম্ভব হয় না। কারণ, কেউ অভিযোগ না দিলে বিএমডিসি নিজে থেকে পদক্ষেপ নিতে পারে না।’

এদিকে, চিকিৎসকদের এমন অনৈতিক সুবিধা বন্ধে আগামী ১ মার্চ থেকে সরকারি হাসপাতালেই চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিসের সুযোগ দিচ্ছে সরকার। তবে এ পদক্ষেপে সরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবায় আরও অব্যবস্থাপনা তৈরি হবে বলে মনে করেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. আবু জামিল ফয়সাল। আমাদের সময়কে তিনি বলেন, এতে করে বরং অনৈতিকতার সীমা আরও বাড়বে। এমনও হতে পারে, এটি চালু হলে রোগীদের বৈকালিক কনসালটেশনের সময় আসতে বলা হবে। তার মতে, সরকারি প্রতিষ্ঠানের সুযোগসুবিধা বাড়িয়ে সরকারি চিকিৎসকদের শুধু সেখানেই কাজে লাগানো উচিত। আর বেসরকারি ডাক্তাররা বেসরকারিতে সেবা দেবেন। তা হলে উভয় খাতে চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলোর সেবার মান এবং চিকিৎসকদের পেশাদারি বাড়বে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com