পৃথিবীর পঞ্চম বৃহত্তম মহাদেশ অ্যান্টার্কটিকা, যার ৯৮ শতাংশই ঢেকে আছে বরফে। মহাদেশের উপদ্বীপ অঞ্চলটিতে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পেরিয়েছে। যে কারণে গলছে জমে থাকা বরফ। গবেষকরা বলছেন, কিছুক্ষণের রেকর্ড করা তাপমাত্রার ফলাফল ভবিষ্যতের জন্য অশনিসংকেত!
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি অ্যান্টার্কটিকার নতুন এ তাপমাত্রার রেকর্ড নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। যেখানে বলা হচ্ছে- অ্যান্টার্কটিকার সেমুর দ্বীপে গত ৯ ফেব্রুয়ারি ২০ দশমিক ৭৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেন গবেষকেরা। প্রথমবারের মতো এটি করা হয়। অঞ্চলটি দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের কাছাকাছি অবস্থিত। গবেষকদের ভাষ্য, অ্যান্টার্কটিকায় এত উচ্চ তাপমাত্রা এর আগে কখনো দেখা যায়নি।
এর আগে গত ৬ ফেব্রুয়ারি মহাদেশটিতে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২০১৫ সালের মার্চে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় সাড়ে ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অ্যান্টার্কটিকায় এ রকম তাপমাত্রা গ্রীষ্মকালেও দেখা যায় না।
ব্রাজিলীয় বিজ্ঞানী কার্লোস শেফার মহাদশেটিতে বরফ গলে পড়ার ভয়াবহতা প্রকাশ করতে গিয়ে বলেছেন, ‘অ্যান্টার্কটিকায় এত উচ্চ তাপমাত্রা এর আগে কখনো দেখিনি।’ তার এই মন্তব্য বার্তা সংস্থা এএফপি নিজেদের প্রতিবেদনে প্রকাশ করেছে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়- শেফার আরও বলেছেন, ‘অল্প সময়ের এই তাপমাত্রা থেকে কোনো পূর্বানুমান করে নেওয়া উচিত নয়। তবে এই ঘটনা আমাদের ইঙ্গিত দেয়, অ্যান্টার্কটিকায় যা হচ্ছে, তা মোটেও স্বাভাবিক ঘটনা নয়।’
এতে আরও বলা হয়, মাহদেশের একটি অঞ্চলে দীর্ঘিদিন ধরে তাপমাত্র রেকর্ড করা হয়নি। বরং যেটি করা হয়েছে, তা মাত্র একটি সময়ে কিছুক্ষণের জন্য।
প্রায় চার দশক আগে অ্যান্টার্কটিকায় সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, সেবার ১৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। ১৯৮২ সালের জানুয়ারি মাসে অ্যান্টার্কটিকায় গবেষকরা এটি রেকর্ড করেন।
গত ৫০ বছরে অ্যান্টার্কটিকার গড় তাপমাত্রা বেড়েছে প্রায় ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বলে তথ্য দিয়েছে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা। বলা হচ্ছে, বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির প্রভাব অ্যান্টার্কটিকাতেও পড়েছে। মহাদেশটির পশ্চিমাংশের প্রায় ৮৭ শতাংশ হিমবাহও এ সময়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। অ্যান্টার্কটিকার ইতিহাসের উষ্ণতম মাস ছিল গত জানুয়ারি মাস।