আরো একবার স্বপ্নভঙ্গ পিএসজির, চ্যাম্পিয়নস লিগে আরো একবার ব্যর্থ তারা। শিরোপা তো বহুদূর, শেষ ষোলোতেই পিএসজির যাত্রা শেষ হয়ে গেছে। মেসি কিংবা এমবাপ্পেও বুধবার রাতে হতে পারেননি উদ্ধারকর্তা, ফলে আলিয়াঞ্জ এরিনায় বায়ার্নের কাছে ০-২ গোলে ধরাশায়ী পিএসজি, বিপরীতে দুই লেগ মিলিয়ে ৩-০ ব্যবধানে জয় নিয়ে শেষ আটে বায়ার্ন মিউনিখ।
প্রথম লেগে নিজেদের মাটিতে ১-০ গোলে হেরে যাওয়ায় বুধবার জয়ের বিকল্প ছিলো না পিএসজির৷ সেই লক্ষ্যেই খেলতে থাকে তারা, দাপটও চালাতে থাকে মাঠে। সুবাদে ১৪তম মিনিটেই বল জালে জড়ান এমবাপ্পে৷ তবে গোল উল্লাসে মেতে উঠা হয়নি পিএসজির, গোলরক্ষক সোমারকে ফাউল করায় গোলটি বাতিল হয়ে যায়।
আরো একাধিক সুযোগ তৈরী করে পিএসজি, তবে কাঙ্খিত গোল আসেনি। ২৪তম মিনিটে আরো একটা সুযোগ পায় মেসি-এমবাপ্পে জুটি; তবে জটলা বেধে যাওয়ায় গোলমুখ খুঁজে পায়নি বল। বিপরীতে মিনিট সাতেক পর থম ভালো সুযোগ পায় বায়ার্ন। তবে জামাল মুসিয়ালার শটে ঝাঁপিয়ে ব্যর্থ করে দেন পিএসজি গোলরক্ষক জানলুইজি দোন্নারুম্মা।
এরই মধ্যে দুঃসংবাদ পায় পিএসজি। ম্যাচের ৩৬ মিনিটে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন তাদের অধিনায়ক মারকুইনহোস। তবুও মেসি-এমবাপ্পেদের আক্রমণের ধার কমেনি। দুই মিনিট পরই প্রথম গোলের দেখা পেয়ে যেতে পারত পিএসজি। বায়ার্ন গোলরক্ষকের বোকা বানিয়ে জালের উদ্দেশ্যে বল শুট করেন ভিটিনহা। তবে শেষ মুহূর্তে বায়ার্ন ডিফেন্ডার ডিলিখট গোল লাইন থেকে তা আটকে দেন।
তবে দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই নিজেদের গুছিয়ে নেয় বায়ার্ন মিউনিখ। সাজানো ছন্দময় ফুটবল খেলে ম্যাচটা নিজেদের আয়ত্তে নিয়ে আসার চেষ্টায় মত্ত হয় তারা। সুবাদে টানা তিনটি আক্রমণ চালায় স্বাগতিকরা, যদিও পাওয়া যায়নি গোলের দেখা।
৫২তম মিনিটের মাথায় প্রথমে মুসিয়ালার শট গোলমুখে প্রতিহত হয়। ফিরতি বলে জশুয়া কিমিচ চেষ্টা করলেও চুপো-মোতিং অফসাইডে থাকায়তা নষ্ট হয়। এর পরের মিনিটে বল জালেও জড়িয়ে দেন ক্যামেরুনিয়ান এই স্ট্রাইকার, তবে অফসাইডের ফাঁদে পড়ে গোল বাতিল হয়ে যায়।
টানা আক্রমণে চাপে পড়ে যায় পিএসজি। সেই চাপ থেকে বেরিয়ে আসার আগে গোল হজম করে বসে তারা। বায়ার্ন এগিয়ে যায় ৬১তম মিনিটে। নিজেদের অর্ধে মার্কো ভেরাত্তি বল হারালে পেয়ে যান লেয়ন গোরেটস্কা। সুযোগ থাকলেও নিজে শট না নিয়ে তিনি খুঁজে নেন অরক্ষিত চুপো-মোটিংকে। বাকিটা অনায়াসে সারেন পিএসজির সাবেক এই ফরোয়ার্ড।
৬৬ মিনিটের মাথায় সার্জিও রামোস সমতায় ফেরাতে পারতেন পিএসজিকে, তবে তার হেড ঝাপিয়ে পড়ে থামিয়ে দেন বায়ার্ন গোলরক্ষক সেমার। ৮২তম মিনিটেও সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন রামোস। তবে অভিজ্ঞ এই স্প্যানিশ ডিফেন্ডারের হেড এবার লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
এদিকে নিজেদের হারিয়ে খুঁজতে থাকেন মেসি-এমবাপ্পে। নেইমারের অনুপস্থিতি এইদিন তাদের বেশ ভুগিয়েছে। বল নিয়ে এগিয়ে গেলেও শেষটায় এলোমেলো হয়ে যাচ্ছিলো আক্রমণ। ফলে গোল হয়েছিল সোনার হরিণ। এদিকে পাল্টা আক্রমণে ৮৯ মিনিটে দ্বিতীয় গোলটি হজম করে বসে পিএসজি, গোল করেন সের্গে জিনাব্রি; ২-০ গোলে এগিয়ে যায় বায়ার্ন মিউনিখ।
আরো একটা গোল পেতে পারত স্বাগতিকরা, তবে অতিরিক্ত সময়ে সাদিও মানের জালে পাঠানো বল অফসাইডের ফাঁদে আটকা পড়ে। ফলে শেষ পর্যন্ত ২-০ গোলের জয় নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় বায়ার্নকে, সব মিলিয়ে ৩-০ গোলে এগিয়ে থেকে চ্যাম্পিয়নস লিগে শেষ আটে পা রাখল জার্মান জায়ান্টরা।
শেষ আটে তাদের সঙ্গী এসি মিলান। প্রথম লেগে ঘরের মাঠে ১-০ গোলে জেতা ইতালিয়ান চ্যাম্পিয়নরা গতরাতে গোলশূন্য ড্র করেছে টটেনহ্যাম হটস্পারের মাঠে। ফলে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে শেষ আটে পা রেখেছে ইতালিয়ান দলটি।