সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এ দেশের গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন, তাকে ২ বছর ৭ দিন যাবত কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। তিনি অত্যন্ত অসুস্থ, আমরা তার মুক্তির মাধ্যমে সুচিকিৎসার দাবি জানিয়েছি। কিন্তু সরকার কোনো সহযোগিতা করেনি। আমরা আবারো বলছি বেগম খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ তাকে মুক্তি দিন।
শনিবার দুপুরে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে এ কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, ১৬ কোটি মানুষের নয়নের মণি বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আমাদের ঘোষিত কর্মসূচি ছিলো বিক্ষোভ মিছিল। এতে পুলিশ বাধা দিয়েছে, নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করেছে, কার্যালয়ের সামনে ব্যারিকেড দিয়ে বাধা দিয়েছে। সরকার মনে করছে এভাবে দমন-নিপীড়ন, বাধা দিয়ে খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করবে। জনগণের যে প্রাণের দাবি তাকে বাধাগ্রস্ত করবে। কিন্তু তারা ভুলে গেছে এভাবে দমন-নিপীড়ন করে জনগণের ন্যায্য দাবিকে দমন করা যায় না।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এসরকার বেআইনি, দখলদারী সরকার, জনগণের কোনো ম্যান্ডেট ছাড়া তারা জোর করে ক্ষমতা দখল করে আছে। একদলীয় শাসন কায়েম করতে সমস্ত দমন নিপীড়ন, নির্যাতনের পথ বেছে নিয়েছে। আজ সরকারের উপর জনগণের কোনো আস্থা নেই, আমাদোর ২৫ লাখ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতা অর্জন করেছে সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। এটা ফেব্রুয়ারি মাস, ১৯৫২ সালে এদেশের মানুষ মায়ের ভাষার জন্য নিজের বুকের তাজা রক্ত দিয়ে দাবি আদায় করেছে।
স্থায়ী কমিটির জ্যেষ্ঠ সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আজকের সমাবেশকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু নেতাকর্মীদের সাহসিকতার ফলে আজকের এ সমাবেশ সফল হয়েছে।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় আন্দোলন করেছেন বলেই আজ তিনি কারাগারে। আমরা বলতে চাই, খালেদা জিয়াকে নয় সারা বাংলাদেশকে কারাগারে রাখা হয়েছে। আজ আইনের শাসন নেই। মানুষ সুবিচার পায় না, সব জায়গায় মানুষের নিরাপত্তার অভাব।
মোশাররফ বলেন, টেন্ডারবাজী, চাঁদাবাজী, ক্যাসিনোবাজী করে দেশকে শেষ করে দিয়েছে। এখন দেশের মানুষ এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। আজ দেশে সব কিছুতে পচন ধরেছে। এ থেকে এ দেশকে মুক্ত করতে হবে। জনগণকে মুক্ত করতে হবে। গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে। আর এসব অর্জন করতে হলে সবার আগে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আনতে হবে। তার নেতৃত্বে এ দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে।
স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে শত প্রতিকূলতার মাঝেও আমরা এখানে সমবেত হয়েছি। আমাদেরকে খালেদা জিয়ার প্রতি ভালোবাসা নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। আমাদের জেলে নিক, নির্যাতন করুক, গুম-খুন করুক কোনো কিছুতেই প্রতিবাদ থামবে না। আমাদের আন্দোলন চলতেই থাকবে।
তিনি বলেন, আজ খালেদা জিয়া নয় দেশের গণতন্ত্র, স্বাধীনতা, বাকস্বাধীনতা, আইনের শাসন ও জনগণ বন্দী। তার মুক্তির মাধ্যমে দেশের গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা মুক্তি পাবে। আমরা ইনশাআল্লাহ আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবো।
স্থায়ী কমিটির অপর সদস্য আবদুল মঈন খান বলেন, সরকার বিচার বিভাগকে প্রভাবিত করে খালেদা জিয়াকে জামিন দিচ্ছে না। কারণ সরকার জানে খালেদা জিয়া মুক্ত হয়ে রাজপথে নামলে জনগণের স্রোতে সরকার ভেসে যাবে। তাই খালেদা জিয়ার জামিন বাধাগ্রস্ত করছে। তাকে আটকে রাখছে। আমরা খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠ করবো।
খালেদা জিয়ার নাম উল্লেখ না করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমরা মায়ের মুক্তির জন্য সমবেত হয়েছি। মায়ের মুক্তির সংগ্রাম কেউ থামাতে পারে না। কোনোভাবে বাধাগ্রস্ত করতে পারে না। মায়ের মুক্তি জনগণ, গণতন্ত্র, আইনের স্বাসন ও স্বাধীনতার মুক্তি। মায়ের মুক্তির আন্দোলনের আমাদের যোগ দিয়ে মাকে মুক্ত করতে হবে।