শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:০৮ পূর্বাহ্ন

চোখের শুষ্কতা রোধে আপনার যা করণীয়

বাংলাদেশ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ১৫ মার্চ, ২০২৩
  • ৮৯ বার

মানবজীবনে চোখের গুরুত্ব অপরিসীম। চোখ আছে বলেই আমরা আমাদের চারপাশের সব কিছু স্বচ্ছভাবে দেখতে পারি। জেনে রাখা জরুরি যে, আমাদের চোখের প্রায় ৭৫ শতাংশই পানি। এই পানি হঠাৎ শুকিয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটে থাকে। আর পানি শুকিয়ে গেলে সৃষ্টি হতে পারে নানা সমস্যা। তেমন একটি সমস্যার নাম ড্রাই আই। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চোখের পানির উৎপাদন কমে যায়। ৫০ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে ড্রাই আইয়ের প্রবণতা বেশি দেখা যায়।

কারণ : যারা বেশি সময় কম্পিউটারে কাজ করেন বা টিভি দেখেন, ভিডিও গেম খেলেন, তাদের অনেকেরই ড্রাই আইয়ের সমস্যা হয়। এসি বা ফ্যানের সরাসরি বাতাস, ঘরে আর্দ্রতা কম থাকা, শুষ্ক জলবায়ু ও বায়ুদূষণের কারণেও ড্রাই আই হতে পারে। ডায়াবেটিস, জোগ্রেন সিনড্রোম ও অ্যালার্জিক কনজাংটিভাইটিসের মতো পরিস্থিতিও চোখের শুষ্কতার জন্য দায়ী। অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট, অ্যান্টিহিস্টামিন ইত্যাদি ওষুধও চোখের শুষ্কতা ঘটাতে পারে। গর্ভাবস্থায় ও মেনোপজের পর নারীদের ড্রাই আই হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

লক্ষণ : চোখে কাঁটা বিঁধে থাকার মতো অনুভূতি, খচখচ করা, চোখ দিয়ে পানি পড়া। এ কারণে মাথাব্যথা থেকে জ্বর ও নাক বন্ধ রোগও হয়ে থাকে। মুখ শুকিয়ে যাওয়া, লালাগ্রন্থির নিঃসরণ কমে যাওয়া বা একটানা কথা বললে খারাপ লাগার অনুভূতি হলে এ-সংক্রান্ত অন্য রোগের অনুসন্ধান করতে হবে।

কিছু ঘরোয়া প্রতিকার : প্রচুর পরিমাণ পানি পান করতে হবে। কফি, অ্যালকোহল ও ক্যাফিনযুক্ত অন্যান্য পানীয় কমাতে হবে। পানিযুক্ত ফল, যেমন তরমুজ, শসা, স্ট্রবেরি, পিচ ইত্যাদি খাওয়া ভালো। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডযুক্ত খাবার খাদ্যতালিকায় রাখুন। এক নাগাড়ে অনেকক্ষণ তাকিয়ে থাকলে চোখ তাড়াতাড়ি আর্দ্রতা হারিয়ে ফেলে। তাই মাঝেমধ্যে চোখের পাতা ফেলুন। চোখের আর্দ্রতা ধরে রাখতে পারে, এমন চোখের ব্যায়াম করতে হবে। মিনিটে ১৫-৩০ বার চোখের পাতা পিটপিট করা প্রয়োজন। ২০ সেকেন্ডের বেশি চোখ খোলা রাখা উচিত নয়। ২০ মিনিট পরপর কম্পিউটারের মনিটর থেকে চোখ সরিয়ে কয়েক সেকেন্ড বিশ্রাম দেওয়া উচিত। কম্পিউটারে কাজ করার সময় আই প্রোটেক্টর স্পেক্টাকল ব্যবহার করা যায়। বাইরে বের হলে রোদচশমা পরবেন। হালকা গরম পানিতে পরিষ্কার কাপড়ের টুকরা ডুবিয়ে নেওয়ার পর সেটি নিংড়ে নিয়ে চোখের ওপর পাঁচ মিনিট রাখুন। এরপর আঙুলের হালকা চাপে চোখের ওপরের ও নিচের পাতায় কাপড়টা মালিশ করুন। এতে চোখের ভেতরের ময়লা পরিষ্কার হয়ে যাবে। কাপড় ঠাণ্ডা হওয়া পর্যন্ত এটা করতে পারেন। নারকেল তেল চোখ আর্দ্র রাখে, জ্বালাপোড়াভাব কমায়। পরিষ্কার তুলায় নারকেল তেল দিয়ে চোখের ওপর ১৫ মিনিটের জন্য রাখতে পারেন। পরিষ্কার টিস্যুতে অ্যালোভেরা জেল নিয়ে চোখের নিচের পাতায় আলতো হাতে মালিশ করুন। ১০ মিনিট পর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে পারেন।

চিকিৎসা : কারণ অনুসারে ওষুধ ব্যবহার করলে চোখের শুষ্কতা দূর করা যায়। কৃত্রিম চোখের পানি ব্যবহার উত্তম। মিথাইল সেলুলোজ, সফট কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার এবং প্যারোটিড ডাক্ট প্রতিস্থাপনের মাধ্যমেও চোখের শুষ্কতা দূর করা যায়।

লেখক : অধ্যাপক ডা. একে আজাদ

চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ ও ফ্যাকো সার্জন

বিভাগীয় প্রধান, চক্ষুরোগ বিভাগ

আল-রাজী হাসপাতাল, ফার্মগেট, ঢাকা

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com