ব্যাংক ঋণের সুদহারের ক্যাপ তুলে দেওয়ার কথা ভাবছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ঋণ বিতরণের ৯ শতাংশ সুদহার তুলে দিয়ে একটি রেফারেন্স রেটভিত্তিক সুদহার দেওয়ার জন্য কাজ করছে সংস্থাটি। গতকাল রবিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রানীতিবিষয়ক বৈঠকে এসব বিষয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।
সূত্র জানায়, বৈদেশিক ঋণের নিয়ম অনুযায়ী বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর জন্য ঋণের সুদহার নির্ধারণ করা হবে। যেমন লাইবর রেটের সঙ্গে ব্যাংক নির্ধারিত সুদ যোগ করে মোট সুদহার নির্ধারণ করা হয়। ঠিক সেভাবে পাঁচ ধরনের বন্ডের সুদহারের গড় রেটের সঙ্গে একটি রেট নির্ধারণ করে দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেই রেট চার থেকে পাঁচ শতাংশের মধ্যে রাখার চিন্তা করছে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
বৈঠক সূত্রে আরও জানা যায়, আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথমার্ধের জন্য জুনের তৃতীয় সপ্তাহে নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করতে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, নতুন মুদ্রানীতি নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। আগামী জুনের তৃতীয় সপ্তাহে মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হবে। চলমান মুদ্রানীতির কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ ও আগামী মুদ্রানীতিতে কী কী থাকবে সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বৈঠকে।
তিনি আরও বলেন, নতুন মুদ্রানীতিতে ব্যাংক ঋণের সুদহার কী করা যায় সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এখানে ব্যান্ডিং ও রেফারেন্সের রেটের কথা ভাবা হচ্ছে। এসব বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। আগামী মুদ্রানীতিতে এসব বিষয়ে বিস্তারিত ঘোষণা করা হবে।
এর আগে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইর আয়োজনে আন্তর্জাতিক বিজনেস সামিটে ব্যাংক ঋণের সুদহারে পরিবর্তন আসছে এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। ওই অনুষ্ঠানে গভর্নর বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংক পলিসিগত কাজ করছে। চাহিদা কমিয়ে মূল্যস্ফীতি কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে। এ ছাড়া ডলারের বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখার চেষ্টা করছি। একাধিক হারও বাদ দেব। বিনিময় হার হবে বাজারভিত্তিক ও এক। আমরা এর কাছাকাছি। শিগগির একটি বাজারভিত্তিক বিনিময় হার ব্যবস্থা দেখতে পাবেন। আর সুদের হার নিয়েও কাজ শুরু করেছি। এরই মধ্যে আমানতের সুদের হারের ফ্লোর ও সিলিং প্রত্যাহার করেছি। বাজারভিত্তিক সুদহার নির্ধারণ করে করিডোর প্রথা চালু করা হবে। শিগগির আমরা এ নতুন উদ্যোগ চালু করতে সক্ষম হব।
উল্লেখ, ২০২০ সালে ১ এপ্রিল থেকে ক্রেডিট কার্ড ছাড়া অন্য সব ধরনের ঋণের সুদহার এক অঙ্কে নামিয়ে আনার নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। সেই নির্দেশনা এখনো কার্যকর রয়েছে।