বহুজাতিক কোম্পানীর ষড়যন্ত্র থেকে বিড়ি শিল্পকে বাঁচাতে এবং বিড়ির শুল্ক বৃদ্ধি প্রস্তাবের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশন। সোমবার (২৭ মার্চ) সকাল ১১ টায় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে তারা।
বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক হারিক হোসেনের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি আমিন উদ্দিন বিএসসি। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান। এসময় উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম সম্পাদক লুৎফর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল গফুর, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদ আবুল হাসনাত লাভলু, প্রচার সম্পাদক শামীম ইসলাম, কার্যকরী সদস্য আনোয়ার হোসেন প্রমূখ।
লিখিত বক্তব্যে কার্যকরী সভাপতি আমিন উদ্দিন বিএসসি চার দফা দাবি পেশ করেন। তাদের দাবি গুলো হলো, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানীর আগ্রাসন বন্ধ করা, অবৈধ সংগঠনের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুক ব্যবস্থা গ্রহণ করা, বিড়ির মূল্য ১৮ টাকা থেকে নূন্যতম ২ টাকা কমিয়ে ১৬ টাকা করা এবং নিম্নস্তরের সিগারেটের মূল্য ৪০ টাকা থেকে ৫০ টাকা বৃদ্ধি করা।
লিখিত বক্তব্যে শ্রমিকরা উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিড়ি শিল্পের অবদান অপরিসীম। প্রাচীন শ্রমঘন এই শিল্প থেকে বছরে বিপুল পরিমান রাজস্ব আহরিত হয়। দেশের সুবিধা বঞ্চিত লক্ষ লক্ষ শ্রমিক বিড়ি শিল্পে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। অথচ বিদেশী বহুজাতিক কোম্পানীর ষড়যন্ত্রে দেশের প্রাচীন শ্রমঘন এ শিল্পটি আজ ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে। ব্রিটিশ বেনিয়াদের দোসর ও নব্য মীরজাফর আত্মা, প্রজ্ঞাসহ বিভিন্ন অস্থিত্বহীন সংগঠন বিড়ি শিল্প ও শ্রমিক ধ্বংস করতে বিভিন্ন অপপ্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। তারা বিড়ি শিল্পকে বন্ধ করতে বিড়ির কর ও মূল্য বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছে। যা দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র, দেশের লক্ষ লক্ষ শ্রমিকের অন্নসংস্থান বন্ধ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র। বিড়ি শিল্প ও শ্রমিকদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বন্ধ না হলে বিড়ি শ্রমিকরা তাদের সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করবে। এছাড়া অস্থিত্বহীন সংগঠনের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জোর দাবি জানাচ্ছি।
তারা আরো বলেন, বিদেশী সিগারেট কোম্পানীগুলোকে একচেটিয়া ব্যবসার সুযোগ করে দিতে কতিপয় অসাধু আমলা বিড়ির উপর ষড়যন্ত্রমূলকভাবে বিড়ির মূল্য বৃদ্ধি ও মাত্রাতিরিক্ত করের বোঝা চাপিয়ে দিয়ে থাকেন। এতে মালিকরা কারখানা বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছে। ফলে বিড়ি শ্রমিকরা কর্ম হারিয়ে অনাহারে, অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছে। বিড়ি শিল্প ও শ্রমিকদের কর্মরক্ষার্থে বিড়ির মূল্য ১৮ টাকা থেকে নূন্যতম ২ টাকা কমিয়ে ১৬ টাকা করতে হবে। একইসাথে নিম্নস্তরের সিগারেটের মূল্য ৪০ টাকা থেকে ৫০ টাকা বৃদ্ধির জোর দাবি জানাচ্ছি। এছাড়া বিট্রিশ আমেরিকান টোব্যাকো নানা ভাবে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে থাকে যা বিভিন্ন সময়ে দেশের প্রথম সারির গণমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত হয়েছে। শুল্ক ফাঁকিসহ তাদের সকল প্রকার আগ্রাসন বন্ধ করে প্রাচীন এই কুঠির শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হবে।