নিউইয়র্কের সড়ক পথে নিত্য ছুটে চলছে পাবলিক বাস। বাসের গায়ে বাংলা ভাষায় স্লোগান শোভা পাচ্ছে। ‘স্থানীয় সরকার পরিবর্তন করতে চান? আপনি সে জন্য ভোট দিতে পারেন’—সুদূর আমেরিকার সরকারি বাসের গায়ে এমন লেখনী দেখলে মনটা আনন্দে ভরে উঠবে। এমন আনন্দের কথাই উচ্চারিত হয়েছে নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুন্নেসার কণ্ঠে।
আসন্ন স্থানীয় সরকার নির্বাচনকে সামনে রেখে নিউইয়র্ক নগরে চলছে প্রচারণা। নির্বাচনবিমুখ কর্মপাগল নাগরিকদের নির্বাচনে উৎসাহিত করতে চলছে প্রচারণা। বাংলাদেশি বহুল কুইন্সে চলাচলকারী এমন কিছু পাবলিক বাসে দেখা যাচ্ছে বাংলায় লেখা এমন প্রচারণা।
কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুন্নেসা বলেন, ‘বাংলায় লেখনী দেখে মনটা আনন্দে ভরে গেল। বাংলা ভাষা আমাদের প্রাণের ভাষা, যখন দেখি আমার প্রাণের ভাষা বাংলা শোভা পাচ্ছে নিউইয়র্কের গণপরিবহনে, তখন গর্বে মন ভরে যায়। বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশি আমেরিকানদের অবদান অপরিসীম। নিউইয়র্কের বাসে প্রচারিত বাংলা ভাষার বিজ্ঞাপনটি তারই একটি প্রতিচ্ছবি।
সম্প্রতি নিউইয়র্কে অবস্থিত লাগার্ডিয়া ও জেএফকে বিমানবন্দরে অন্যান্য ভাষার সঙ্গে বাংলা ভাষায় ‘স্বাগতম’ অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা চলছে। বিষয়টি বাস্তবায়নের জন্য কনসাল জেনারেলের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ চলছে। সম্প্রতি নিউইয়র্কের কনস্যুলেট থেকে বিভিন্ন লাইব্রেরিতে বাংলা বই সরবরাহ করা হচ্ছে। নিউইয়র্কে এখন বাংলায় ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে পারবেন বাংলাদেশি-আমেরিকানরা।
কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুন্নেসা নিউইয়র্কে বসবাসরত বাংলাদেশি আমেরিকানদের আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বিদেশের মাটিতে গর্বিত বাংলাদেশকে তুলে ধরার জন্য। আমেরিকায় বাংলা ভাষা প্রচারের জন্য তারা অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন।
নিউইয়র্কে বসবাসরত প্রবীণ সাংবাদিক মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘ছুটে চলা বাসে বাংলা লেখা দেখলেই আনন্দে মনটা চাঙা হয়ে উঠে। বহু অভিবাসীর এদেশে আমরা বাঙালিরা যে একটি শক্ত অবস্থানে ক্রমশ এগিয়ে যাচ্ছি, এটি তারাই প্রতিফলন।’
নিউইয়র্কে বসবাসরত প্রবাসীরা দীর্ঘদিন একইভাবে স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণের চেষ্টা চালিয়ে আসছেন। নিউইয়র্কের প্রধান প্রধান রাজনৈতিক নেতারা বাঙালি প্রবাসীর এই দাবির বিষয়ে সহানুভূতিশীল। শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য নিউইয়র্কে কনস্যুলেট থেকেও বেশ কিছু দিন ধরে চেষ্টা চালানো হচ্ছে। বাংলা ভাষার জন্য যে জাতি জীবন দিয়েছে, যাদের জীবনের বিনিময়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এসেছে, তাদের দাবিতে নিউইয়র্কে শিগগিরই একটি স্থায়ী শহীদ মিনার গড়ে উঠবে, এমনটাই প্রত্যাশা এখন সবার।