বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
ইসকন ইস্যুতে দেশি-বিদেশি ইন্ধন থাকতে পারে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যা, যে নির্দেশ দিলেন প্রধান উপদেষ্টা স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও তাদের লেজ রেখে গেছে : তারেক রহমান আইনজীবীকে ‘কুপিয়ে হত্যা করল’ ইসকন সদস্যরা অনির্দিষ্টকালের জন্য সেন্ট গ্রেগরি হাইস্কুল বন্ধ ঘোষণা অহিংস গণঅভ্যুত্থানের আহ্বায়কসহ ১৮ জনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ ঢাকা ও চট্টগ্রামে ১০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন রাষ্ট্রদ্রোহের ঘটনায় যুক্ত থাকলে ছাড় দেয়া হবে না : আসিফ মাহমুদ চিন্ময়কে গ্রেফতারের নিন্দা জানিয়ে ভারতের বিবৃতি মানুষ কেন তাদের ওপর বিক্ষুব্ধ, গণমাধ্যমের তা স্পষ্ট করা উচিত : নাহিদ ইসলাম

বাজেট ঘাটতি ২ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা

এনবিডি নিউজ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ১২ এপ্রিল, ২০২৩
  • ৫২ বার

বাড়ছে বাজেটের আকার। সেই সঙ্গে আসছে বাজেটে পাল্লা দিয়ে বাড়বে বাজেটে ঘাটতির পরিমাণও। আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য সর্বকালের রেকর্ড ঘাটতি বাজেট ঘোষণা হতে যাচ্ছে। মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) তুলনায় ঘাটতি দাঁড়াবে ৫ দশমিক ২ শতাংশ। আগামী অর্থবছরে মোট ব্যয়ের পরিমাণ ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৫৯ হাজার ৯৫৫ কোটি টাকা। আর আয়ের পরিমাণ ধরা হয়েছে ৫ লাখ কোটি টাকা। ফলে বাজেট ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ২ লাখ ৫৯ হাজার ৯৫৫ কোটি টাকা। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।

জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের জিডিপির আকার ৪৪ লাখ ৪৯ হাজার ৯৫৯ কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরে জিডিপির আকার দাঁড়াবে ৫০ লাখ ৬ হাজার কোটি টাকা। এর বিপরীতে আগামী অর্থবছরে ঘাটতির পরিমাণ ধরা হচ্ছে প্রায় ২ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা। তবে ঘাটতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে।

জানা গেছে, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ নিচ্ছে সরকার। যার প্রথম কিস্তিু ইতোমধ্যে ছাড় করা হয়েছে। দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ ছাড়ের বিষয়ে আলোচনা শুরু হবে খুব শিগগিরই। আইএমএফের এ ঋণের অর্থ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে সরাসরি যুক্ত হবে। এতে ডলার সংকট কিছুটা হলেও প্রশমিত হবে। একইভাবে বিশ্বব্যাংক থেকে আসবে এক বিলিয়ন ডলার। ১০ এপ্রিল থেকে সদর দপ্তরে শুরু হয়েছে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের বসন্তকালীন সভা। সেখানে বাংলাদেশের পক্ষে এক বিলিয়ন ডলার বাজেট সহায়তার বিষয়ে এক ধরনের সিদ্ধান্ত আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই সহায়তা পাওয়া গেলে বাজেট ঘাটতির অর্থায়নে সহায়ক হিসেবে কাজ করবে।

এদিকে গত ৪ এপ্রিল অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে আর্থিক, মুদ্রা ও মুদ্রা বিনিময় হারসংক্রান্ত সমন্বয় কাউন্সিল ও সম্পদ কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেখানে প্রাথমিকভাবে বাজেট ঘাটতির লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ দশমিক ২ থেকে ৩ শতাংশ। তবে এই অঙ্ক চূড়ান্ত নয়। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা। তার আগের বছর এই ঘাটতি ধরা হয় ২ লাখ ৪ হাজার কোটি টাকা।

এদিকে বাজেট ঘাটতি ও ভর্তুকি কমাতে গ্যাস-বিদ্যুৎসহ জরুরি পণ্য ও সেবার মূল্য সমন্বয়ের পাশাপাশি রাজস্ব আদায় বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে আইএমএফ। অন্যদিকে বিশ্বব্যাংক ও এডিবির কাছ থেকে দেড় বিলিয়ন ডলার বাজেট সহায়তা পাওয়ার আশা করছে সরকার। শেষ পর্যন্ত ২০২৩-২৪ বাজেটে ঘাটতি দাঁড়াতে পারে পৌনে তিন লাখ কোটি টাকারও বেশি, যা চলতি অর্থবছরের বাজেটে ধরা হয়েছে ২ লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা।

সরকারের বার্ষিক আয়ের চেয়ে ব্যয়ের পরিমাণ সব সময়ই বেশি। তবে করোনা মহামারীর পর শুরু হওয়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে যে বৈশ্বিক মন্দা চলছে, তা কবে শেষ হবে এটা কেউই বলতে পারছেন না। যার ফলে সরকারের আয় আরও কমে গেছে। অথচ ব্যয় বেড়েছে। ফলে বছর শেষে সরকারের বাজেট ঘাটতি আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে মানুষের দৈনন্দিন ব্যয়ও বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ হারে। এতে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতিও চাপের মুখে পড়েছে।

তবে বিশ্বব্যাংক ও এডিবির কাছ থেকে বাজেট সহায়তার অংশ হিসেবে প্রায় এক বিলিয়ন ডলার অর্থ বৈদেশিক ঋণ ও অনুদান হিসেবে পাওয়ার প্রত্যাশা করছে সরকার। এতে হয়তো বাজেট ঘাটতির চাপ কিছু কমতে পারে। অবশ্য ডলার সংকট মোকাবিলায় আইএমএফের অনুমোদিত ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ পেতে শুরু করেছে সরকার। এদিকে বাজেট ঘাটতি ও ভর্তুকি কমাতে মূল্য সমন্বয়ের পাশাপাশি রাজস্ব আদায় বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে আইএমএফ। এর অংশ হিসেবে জ্বালানি ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে।

আগামী বাজেটে মোট রাজস্বপ্রাপ্তির লক্ষ্যমাত্রা চার লাখ ৮৬ হাজার কোটি টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরে চার লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকার লক্ষ্য দেওয়া আছে। আয় ও ব্যয়ের মধ্যে বড় পার্থক্য থাকায় নতুন বাজেটে সরকারকে বিভিন্ন উৎসব থেকে ধার করতে হচ্ছে।

এদিকে অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে সরকারের রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি ছিল ১৫ হাজার কোটি টাকা। অর্থবছর শেষ হতে আর মাত্র আড়াই মাস বাকি। বছর শেষে এ ঘাটতি আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া সুদের হার কমানোয় সঞ্চয়পত্রের বিক্রিতে ভাটা পড়েছে। যার ফলে ৭ মাসে সরকারের ব্যাংকঋণ বেড়েছে ৭৭ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যানমতে, চলতি র্অবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) বাজেট ঘাটতি অর্থায়নে ব্যাংকঋণ বেড়েছে ৭৭ শতাংশ। যে হারে ব্যাংকঋণ বাড়ছে তা অব্যাহত থাকলে বেসরকারি বিনিয়োগের ওপর চাপ আরও বেড়ে যাবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com