শ্রেণিকক্ষে হাসাহাসি করায় গাজীপুর ক্যাডেট একাডেমি স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী সিদরাতুল মুনতাহা মীমকে ব্যপক মারধর করেন স্কুলটির পরিচালক উম্মে কুলসুম শিল্পী। এ ঘটনায় মীমকে প্রথমে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ও পরে কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়। মারধরের এ ঘটনায় স্কুলের শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও সামাজিক চাপে নির্যাতিত ছাত্রীর পরিবারের সঙ্গে মীমাংসা করেন শিল্পী।
গত বুধবার বিকেলে নির্যাতিত ছাত্রীর পরিবারের সঙ্গে মীমাংসা করা হয়। এর এক সপ্তাহ আগে গত ২৪ মে বুধবার গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলার গাজীপুর ক্যাডেট একাডেমি স্কুলে মারধরের ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত উম্মে কুলসুম শিল্পী গাজীপুর জেলা মহিলা লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সংরক্ষীত নারী সদস্য। অপরদিকে সিদরাতুল মুনতাহা মীম উপজেলার রায়েদ ইউনিয়নের বেলাশী গ্ৰামের মফিজুল হকের মেয়ে।
অভিযুক্ত শিল্পী বলেন, ‘এটা একটা ভুল বুঝাবুঝি ছিল। রাগের মাথায় মারধর করে ফেলেছিলাম। বিষয়টি ছাত্রীর অভিভাবকের সঙ্গে মীমাংসা করা হয়েছে। এ বিষয়ে আর কোনো ধরনের অভিযোগ কারো নেই।’
নির্যাতিত শিক্ষার্থীর চাচা মঞ্জুরুল হক জানান, জেলা পরিষদ সদস্য শিল্পী তাদের বাড়িতে গিয়ে এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন। মারধরের শিকার স্কুলছাত্রী এখন স্কুলে যেতে পারছে না।
তিনি বলেন, ক্লাস চলাকালীন কোনো একটি বিষয় নিয়ে হাসাহাসি করায় শ্রেণি শিক্ষক শিক্ষার্থীদের শাসিয়েছেন। একপর্যায়ে হাসাহাসির বিষয়টি জানতে পেরে উম্মে কুলসুম শিল্পী শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করে বেত দিয়ে ও প্লাস্টিকের চেয়ার দিয়ে শিক্ষার্থীদের মারধর করতে থাকেন। এ সময় বেশি হাসাহাসি করায় সিদরাতুল মুনতাহারের ওপর চড়াও হন শিল্পী। বেত্রাঘাতে তার বাহুতে ও শরীরের বিভিন্ন অংশে ক্ষতের সৃষ্টি হয়। পরে তাকে অভিভাবকরা উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসা করান।
তিনি আরও বলেন, ‘মারধরের শিকার হয়ে অসুস্থ অবস্থায় পড়ে থাকলেও কেউ খোঁজ নেয়নি। পরে এ বিষয়ে একটি অভিযোগ লিখে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে যাচ্ছিলাম। জানতে পেরে অভিযুক্ত শিল্পী আরও কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের বাড়িতে এসে দুঃখ প্রকাশ করেন।’
এ ঘটনায় শ্রেণিকক্ষে মারধরের শিকার অন্যান্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম বলেন, ‘ঘটনাটি শুনেছি। তবে আমাদেরকে কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ কে এম গোলাম মোর্শেদ খান বলেন, ‘ছাত্রীকে মারধরের বিষয়টি আমি শুনেছি। এ বিষয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে খোঁজ নিয়ে তদন্ত করতে বলেছি।’