শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৯:০৫ অপরাহ্ন

কর্মসূচিতে না যাওয়ায় সিট থেকে নামিয়ে দিল ছাত্রলীগ নেতা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ৪ জুন, ২০২৩
  • ৪১ বার

দলীয় কর্মসূচিতে না যাওয়ায় আবাসিক হলের সিট থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) দুই শিক্ষার্থীর বিছানাপত্র ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে হল শাখা ছাত্রলীগের দুই নেতার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতারা হলেন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাঈম আলী ও সহসভাপতি মাজহারুল ইসলাম।

গতকাল শনিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের ৩৫১ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় ভুক্তভাগী দুই শিক্ষার্থী হলেন, অর্থনীতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী জোনায়েদ আহমেদ ও একই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জোবায়েদ হাসান। এ ঘটনায় তারা প্রাধ্যক্ষ বরাবর মৌখিক অভিযোগ দিয়েছেন।

এ দিকে অভিযুক্ত নাঈম আলী অভিযোগ অস্বীকার করলেও আরেক অভিযুক্ত মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘বিছানাটা একটু নিচে নামিয়ে দিয়েছি, যাতে পরবর্তীতে সে আমার কাছে আসে।’

ভুক্তভোগী ও হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা জানান, শনিবার দুপুর দুইটার দিকে ৩৫১ নম্বর কক্ষে যান হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাঈম আলী ও সহসভাপতি মাজহারুল ইসলাম। তারা কক্ষের সবাইকে দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিতে ডাকেন। আগামী ৫ জুন জোবায়েদের পরীক্ষা থাকায় তিনি কর্মসূচিতে যেতে পারবেননা বলে জানান। এরপরও তাদেরকে কর্মসূচিতে যেতেই হবে বলে হুমকি দেন ছাত্রলীগের ওই দুই নেতা। কিছুক্ষণ পরে আবার ওই কক্ষে অভিযুক্তদের দুজন অনুসারী যান। তারা রুমের সবাইকে কর্মসূচিতে যেতে বলেন। অন্যথায় হল থেকে নামিয়ে দেওয়া হবে বলে হুশিয়ারি দেন।

তারা আরও জানান, বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ফের ওই কক্ষে যান মাজহারুল ইসলাম ও তার এক অনুসারী। তারা ভুক্তভাগীদের বিছানাপত্র নামিয়ে দেন। এ সময় ভুক্তভাগীদের কেউ রুমে ছিলেন না।

ভুক্তভোগী জোনায়েদ আহমেদ বলেন, ‘আমি রাজনৈতিকভাবে হলে উঠিনি। প্রাধ্যক্ষ স্যারের মাধ্যমে হলে উঠেছি। এর আগেও তারা আমাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেছে। কিন্তু আমি কাউকে কিছু বলিনি। আজকেও তারা আমাকে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যাওয়ার জন্য ডাকে। কিন্তু আমি না যাওয়ায় বিছানাপত্র নামিয়ে দিয়েছে।’

আরেক ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জোবায়েদ হাসান বলেন, ‘তারা আমাদরকে নিয়মিত রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যাওয়ার জন্য ডাকে। আজ যখন নাঈম ও মাজহার আমাদরকে ডাকতে আসে তখন তাদেরকে আমার পরীক্ষার কথা জানাই। কিন্তু তারা বিষয়টির কোনো বিবেচনায় করেননি।’

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা নাঈম আলী বলেন, ‘অভিযাগটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আমি ওই রুমে যাইনি। আর মাজহারুল গিয়েছিল কি না আমি বিষয়টি অবগত না। তবে আমি তাদেরকে ডেকে বিষয়টি সমাধান করবো।‘

আরেক অভিযুক্ত মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘তারা ছাত্রলীগের মাধ্যমেই হলে উঠেছে। যারা আমাদের কর্মী তাদেরকে আমরা কর্মসূচিতে ডাকি। স্বাভাবিকভাবেই তারা না আসলে আমরা একটু শাসন করি। এর মানে তাদেরকে বের করে দিয়েছি, বিষয়টি এমন নয়। বিছানাটা একটু নিচে নামিয়ে দিয়েছি, যাতে পরবর্তীতে সে আমার কাছে আসে।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমদ রুনু বলেন, খোঁজখবর নিয়ে ছাত্রলীগের কারো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসাইন বলেন, ‘অভিযুক্ত মাজহারুল আমাদের হলের শিক্ষার্থী না। আবাসিক শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করে এবং ঘটনা তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধ প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করব। আর ভুক্তভোগীরা নিজেদের সিটেই থাকবে।’

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com