বাইডেন প্রশাসনের নতুন অভিবাসন নীতির ফলে দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্তে আশ্রয় প্রার্থনার জন্য আবেদন করার যোগ্য অভিবাসীর সংখ্যা কমে গেছে। বাইডেন প্রশাসনের সম্প্রতি আদালতে দেওয়া এমন বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন আইনজীবীরা।
আদালতের নথি থেকে জানা যাচ্ছে, দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্ত অতিক্রমকারী একক প্রাপ্তবয়স্ক অভিবাসীদের মাত্র ৪৬ ভাগকে আশ্রয় প্রার্থনা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। অথচ ২০১৪ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত এই হারটি ছিল ৮৩ ভাগ।
আমেরিকান সিভিল লিবারটিজ ইউনিয়নের নেতৃত্বাধীন অভিবাসী আইনজীবীদের আনা একটি মামলায় বাইডেন প্রশাসন যুক্তি দিয়েছে যে তাদের আশ্রয়নীতি যদি আদালত আটকিয়ে দেয়, তবে সীমান্ত অতিক্রমের সংখ্যা রেকর্ড হারে বাড়তে পারে। আর এতে করে সীমান্ত এলাকায় অভিবাসীর সংখ্যা সেখানকার জনসংখ্যাকে ছাড়িয়ে যাবে। এর পরিণতিতে মাত্রাতিরিক্ত লোকজন এড়াতে আদালতের তারিখ ছাড়াই অভিবাসীদের ছেড়ে দিতে পারে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্ট।
বর্ডার অ্যান্ড ইমিগ্রেশন পলিসির অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি ব্লাস নানেজ-নেটো এই বক্তব্য দেন বলে জানা গেছে। বিষয়ীট প্রথম প্রকাশ করে লস অ্যাঞ্জেলস টাইমস।
গত মাসে করোনাকালীন টাইটেল ৪২ বাতিল হয়ে যাওয়ার পর ডিএইচএস কেবল ওইসব অভিবাসীকেই আশ্রয় প্রার্থনার অনুমতি দিচ্ছে যারা যেসব এলাকা অতিক্রম করেছে, সেখানে আশ্রয় প্রার্থনার আবেদন করেছিলেন কিংবা তাদের বিষয়টি ব্যতিক্রমধর্মী। ব্যতিক্রমধর্মী বলতে বিশেষভাবে নাজুক সম্প্রদায়ের কথা বলা হয়েছে। তাদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে না দিলে তারা নির্যাতনের শিকার হতে পারে বলে শঙ্কা থাকলে তাদের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।
কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রটেকশনের হিসাব অনুযায়ী, টাইটেল ৪২ অবসানের পর সীমান্ত অতিক্রমের সংখ্যা কমে গেছে। আগে যেখানে দৈনিক ছিল ১০ হাজারের বেশি, সেখানে এখন হচ্ছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার।
অভিবাসী আইনজীবীরা বলছেন, এই ধরনের বিধিনিষেধ ফেডারেল আইন এবং যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতার পরিপন্থী।
ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটির সিইও ডেভিড মিলিব্যান্ড বলেন, এসব কড়াকড়ির ফলে অভিবাসীরা আবার নিজেদেরকে আদমপাচারকারীদের হাতে তুলে দিতে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করার অধিকার কারো নেই, তবে প্রত্যেকেরই আশ্রয় প্রার্থনা করার এবং কিছু নিরাপত্তা লাভ করার অধিকার আছে।’
ক্যালিফোর্নিয়ার অকল্যান্ডের এক বিচারক আগামী মাসে অভিবাসন-সংক্রান্ত মামলাটির রায় দেবেন। তবে তিনি যে রায়ই দেন না কেন, তা উচ্চতর আদালতে চ্যালেঞ্জ করা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।