জমজমের পানি। অশেষ বরকতময় পবিত্র এক পানি। জমজম কূপ আল্লাহ তায়ালার এক জীবন্ত মুজিজা। পৃথিবীতে জমজমের পানির মতো এত সুমিষ্ট, সুপেয় এবং তৃপ্তিদায়ক পানি আর কাথাও নেই। এ পানি দিয়েই রাসূল সা:-এর বুক ধোয়া হয় বক্ষ বিদারণের সময়। জমজমের পানি পান করতে পারা পরম সৌভাগ্যের ব্যাপার। যে যেই মনোবাসনা নিয়ে তা পান করবে আল্লাহ তায়ালা তা কবুল করবেন। হাদিস শরিফে এসেছে, হজরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ রা: থেকে বর্ণিত- রাসূল সা: বলেছেন, ‘যে যেই নিয়তে জমজমের পানি পান করবে আল্লাহ তায়ালা তা কবুল করবেন।’ (মুসনাদে আহমাদ-১৪৮৪৯) অর্থাৎ জাগতিক এবং পরকালীন যেই নিয়তেই তা পান করবে আল্লাহ তায়ালা তার সে আশা-আকাক্সক্ষা পূর্ণ করবেন। যেমন ধরুন, কেউ নিজের সুস্থতা, সৎ পথে থাকা অথবা অন্য যেকোনো উদ্দেশ্যে তা পান করল আল্লাহ তায়ালা তার সে মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করবেন। সাহাবায়ে কেরাম রা:-ও বিভিন্ন নেক উদ্দেশ্যে তা পান করতেন।
জমজমের পানি পানকারী ব্যক্তির জন্য সুন্নত হলো পুরোপুরিভাবে পরিতৃপ্ত হয়ে পান করা। ফকিহগণ জমজমের পানি পানের কিছু আদব উল্লেখ করেছেন, যেমন- কিবলামুখী হওয়া, বিসমিল্লাহ বলা, তিন শ্বাসে পান করা, পরিতৃপ্ত হওয়া, শেষে আলহামদুলিল্লাহ বলা ইত্যাদি। জমজমের পানি ইবাদত মনে করেই পান করা উচিত। সাথে সাথে নেক দোয়াও করা। পান করার আগে দোয়া পড়ে নেয়া।
হজরত ইবনে আব্বাস রা: থেকে বর্ণিত- ‘যে যেই নিয়তে জমজমের পানি পান করবে আল্লাহ তায়ালা তা কবুল করবেন। যদি তুমি তোমার সুস্থতার আশায় তা পান করো তবে আল্লাহ তোমাকে সুস্থ করে তুলবেন, যদি পান করো কোনো কিছু হতে পানাহ চাওয়ার উদ্দেশ্যে তবে আল্লাহ তোমাকে তা থেকে পানাহ দেবেন আর যদি পান করো তৃষ্ণা মেটানোর জন্য তবে আল্লাহ তোমার তৃষ্ণা মিটিয়ে দেবেন। আর ইবনে আব্বাস রা: যখন জমজমের পানি পান করতেন তখন এই দোয়া পড়তেন- ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা ইলমান নাফিআ, ওয়া রিজকান ওয়াসিয়া, ওয়া আমালান সালিহা, ওয়া শিফাআম মিন কুল্লি দা-য়িন!’
অর্থ- ‘হে আল্লাহ! আপনি আমাদের উপকারী জ্ঞান দান করুন! আমাদের রিজিকে বরকত দিন! আমাদের নেক কাজ করার তাওফিক দান করুন! সব অসুস্থতায় সুস্থতা দান করুন!’ (আলবাদরুল মুনির, খণ্ড-৬, পৃষ্ঠা-৩০২)
শিক্ষার্থী :
জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়া, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা।