প্রধান দুই দলের সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশ বৃহস্পতিবার রাত থেকে রাজধানী ঢাকার চারটি প্রবেশপথসহ গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলো তল্লাশি করেছে। এসময় শতাধিক যাত্রীকে আটক করা হয় বলে জানা গেছে। মূলত চেকপোস্টে ঢাকামুখী যানবাহনে তল্লাশি করা হচ্ছিল। অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামী লীগের ব্যানার ও মিছিল ব্যতীত প্রতিটি যানবাহন থামিয়ে যাত্রীদের ঢাকায় প্রবেশের কারণ জানতে চাওয়া হয়। একটু সন্দেহ হলেই তাদের মোবাইল নিয়ে চেক করা হয়েছে। বিএনপির সমাবেশের বিষয়ে কারো মোবাইলে কোন ধরনের মেসেজ পেলেই তাকে আটক করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাত থেকে গতকাল শুক্রবার সকাল পর্যন্ত আমিনবাজারে থেকেই কমপক্ষে অর্ধশতজনকে আটক করেছে পুলিশ। এছাড়াও বাবুবাজার, আবদুল্লাহপুর, চিটাগাং সড়কেও পুলিশের কড়া চেকপোস্ট দেখা গেছে। তবে অভিযোগ করা হয়েছে, আওয়ামী লীগের ব্যানার ও মিছিলসহকারে যেসব যানবাহন ঢাকা প্রবেশ করেছে সেসব গাড়ি থামানো হচ্ছিল না। বাকি সব ধরনের যানবাহন থামিয়ে যাত্রীদের চেক করা হচ্ছিল। এর আগে গত বুধবার রাতেও আমিনবাজার, বুড়িগঙ্গা সেতুর দক্ষিণপ্রান্ত ও সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাক এলাকায় এসব চেকপোস্ট বসানো হয়। এছাড়া টেকনিক্যাল, মাজার রোড, গাবতলী মোড়েও ব্যারিকেড বসিয়ে যান চলাচল সীমিত করা হয়েছে।
পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রাজধানীতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমাবেশে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিরোধে পুলিশ চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চালিয়েছে। যাতে করে বাইরে থেকে এসে কেউ অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে না পারে। এসময কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। সাধারণ জনগণের জানমাল রক্ষায় পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাত থেকেই ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে আমিনবাজার এলাকায় আমিনবাজার সরকারি হাসপাতালের সামনে পুলিশ অস্থায়ী চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি শুরু করে। তবে শুক্রবার ভোর থেকে সেটি আরো কঠোর করা হয়। ঢাকার বাইরের বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক হয়ে ঢাকার উদ্দেশে আসা যাত্রীবাহী পরিবহন থামিয়ে যাত্রীদের তল্লাশি করা হয়। একটু সন্দেহ হলেই ঢাকায় কোথায় কেন যাবেন সে সব জানতে চাওয়া হয়। পরে কারো কারো মোবাইল চেক করে তাতে বিএনপি সংশ্লিষ্ট কোন মেসেজ রয়েছে কি না সেটি দেখা হয়। যাদের মোবাইলে বিএনপি সংশ্লিষ্ট কোনো কিছু পাওয়া গেছে তাদেরই আটক করা হয়েছে।
গতকাল সকাল থেকে নারায়ণগঞ্জের শিমরাইল মোড়, মৌচাক, সাইনবোর্ড এলাকায় তল্লাশি চালায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি করা আমাদের রুটিন কাজ। এটি কোনো সমাবেশকে কেন্দ্র করে নয়।
ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস ও ট্রাফিক উত্তর বিভাগ) আব্দুল্লাহিল কাফী বলেন, ঢাকায় দু’টি রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে কেউ যাতে কোনো ধরনের নৈরাজ্য চালাতে না পারে, তাই তল্লাশি জোরদার করা হয়েছে। তবে এ তল্লাশি নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ। তবে এসব তল্লাশি থেকে কাউকে গ্রেফতার করা হয়েছে কি না সেটি নিশ্চিত করতে পারেননি তিনি।