ভারত পেঁয়াজ রফতানিতে ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয়ার পরপরই আরেক দফা অস্থির হয়ে উঠেছে পেঁয়াজের দাম। প্রতি কেজির দাম এখন ৭০ টাকা ছুঁয়েছে। পাইকারিতে এক দিনের ব্যবধানে কেজিতে বেড়েছে ১২ টাকা পর্যন্ত। গত শনিবারও পাইকারিতে প্রতি কেজি পেঁয়াজ সর্বোচ্চ ৫৩ টাকা দরে বিক্রি হয়। কিন্তু ভারতের রফতানিতে শুল্ক আরোপের ঘোষণা আসার পরই অস্থির হতে থাকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যটি। অথচ এখনো নতুন শুল্কের পেঁয়াজ দেশেই আসেনি। নির্দিষ্ট কোনো কারণ বলতে না পারলেও ভারত সীমান্তে দাম বেড়েছে বলে একটাই জবাব। গতকাল রোববার খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারেই প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৬২-৬৫ টাকা দরে। ২ টাকা পরিবহন খরচ যোগ করে আরো ৩ টাকা নিজেদের লাভ ধরে ৭০ টাকা কেজি দরে তা ভোক্তাদের হাতে পৌঁছাচ্ছে।
ভোগ্যপণ্য ব্যবসায়ী মনসুর আলম জানান, প্রতি কেজি পেঁয়াজ খুচরায় ৬৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, যা দুই দিন আগে ছিল ৫৬ টাকা পর্যন্ত।
আরেক ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম জানান, পেঁয়াজে খুচরা ব্যবসায়ীরা কেজিপ্রতি সর্বোচ্চ ৩ টাকা লাভ করতে পারেন। সীমান্তে ভারতীয় পিয়াজের দাম বেড়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, গতকাল পাইকারিতে ৬৫ টাকা এবং খুচরায় যাদের আগের মাল আছে তারা ৬৫ টাকা এবং নতুন করে ক্রয় করা পিয়াজ ৬৮-৭০ টাকা দরে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যায় ফলন নষ্ট হওয়ার এবং পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধির অজুহাতে চলতি মাসের শুরুর দিকে রফতানি মূল্যবৃদ্ধি করে সেখানকার পেঁয়াজ সরবরাহকারীরা। এখন আবার রফতানিতে ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণায় দেশীয় সিন্ডিকেট রাতারাতি বাড়িয়ে দিয়েছে পেঁয়াজের দাম।
মাছ-সবজি কিনতে হিমশিম অবস্থা
এ দিকে চট্টগ্রামের বাজারগুলোতে মাছ ও সবজির সরবরাহ সঙ্কটের অজুহাতে অতি উচ্চমূল্যে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি এবং মাছ। কাজীর দেউড়ি বাজারে গতকাল প্রতি কেজি কাঁচামরিচ ২৪০-২৬০ টাকা, শসা ৮০ টাকা, ঝিঙা ১২০ টাকা, চিচিঙ্গা ৭০ টাকা, টমেটো ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ৫০ টাকা, বরবটি ১৪০ টাকা, পটোল ৬০, করলা ৭০, ঢেঁড়স ৮০ টাকা এবং কচুর ছড়া মানভেদে ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল।
নগরীর চকবাজারে গিয়ে দেখা যায়, প্রতি কেজি বাগদা চিংড়ি ৮০০ টাকা, ছোট সাইজের কোরাল ৬৫০ টাকা, ছোট তাইল্লা ৭০০-৭৫০ টাকা, পাবদা ৫০০ টাকা, ছোট সাইজের বাটা ৬০০ টাকা, দেশী তেলাপিয়া ৩০০ টাকা, নাইলোটিকা ২৮০ টাকা, রুই ৩৫০-৪০০ টাকা, লইল্লা চিংড়ি ৭০০ টাকা, কাতলা ৩৫০-৪০০ টাকা, ছোট মাছ ৪৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। একই বাজারে সবজির দামও চড়া। এ ছাড়া দেশী মুরগী প্রতি কেজি ৬০০ টাকা, সোনালী মুরগি ৩২০ টাকা এবং ফার্মের মুরগি ১৭৫ টাকা দরে কেজি বিক্রি হচ্ছিল। ফার্মের লাল ডিম প্রতি ডজন ১৫৫ টাকা এবং হাঁসের ডিম ২০০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা যায়।
চকবাজারে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী আবদুল আহাদ এ প্রতিবেদককে জানান, বাজারে কোনো কিছুরই হিসাব মিলানো যাচ্ছে না। বাজারে গিয়ে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠে যাচ্ছে বলেও তিনি জানান।