দিনমজুর বাবা গেছে কাজে। পুকুরে কাপড় ধোয়ার কাজে ব্যস্ত মা। এসময় একা পেয়ে সাত বছরের এক শিশুকে ধর্ষণ করেছে রবিউল হোসেন নামে এক কিশোর। চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের এক গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ভিকটিম শিশুটিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ‘ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস’ সেন্টারে রেফার করেন।
লোহাগাড়া থানার ওসি জাকির হোসেন মাহমুদ নয়া দিগন্তকে জানিয়েছেন, রোববার রাতে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ধর্ষিত শিশুর বাবা কান্নাজড়িত কণ্ঠে নয়া দিগন্তকে বলেন, গত বৃহস্পতিবার অন্যান্য দিনের মতো আমি কাজে চলে যাই। দুপুরের দিকে আমার স্ত্রী পুকুরে কাপড় ধুতে যায়। এই ফাঁকে রবিউল আমার ঘরে ঢুকে জোরপূর্বক আমার মেয়েকে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়। মেয়ের চিৎকারে পাড়া-প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসে। আমার স্ত্রী লোকলজ্জার ভয়ে ঘটনাটি আমাকেও জানায়নি। দুইদিন পরেও আমার সাত বছরের শিশুর রক্তক্ষরণ হতে থাকলে শনিবার তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠাই। সেখান থেকে আমার মেয়েকে চমেক হাসপাতালে রেফার করা হয়।
এদিকে স্থানীয় তরুণদের সামাজিক সংগঠন ‘কিশোর আলো’র সদস্যরা ইউপি মেম্বার, চেয়ারম্যান ও থানায় খবর দিলে বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
লোহাগাড়া থানা পুলিশের ওসি জাকির হোসেন মাহমুদ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত রবিউল হোসেনকে আটক করেন।
তিনি নয়া দিগন্তকে বলেন, ‘ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক ও বেদনাদায়ক। তবে ভিকটিম ও অভিযুক্ত দুইজনই শিশু। ভিকটিমের বয়স সাত ও অভিযুক্তের বয়স ১৪ বছর। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রবিউল হোসেন অপরাধ স্বীকার করেছেন। তার বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য মমতাজ জানান, ঘটনাটি সত্য। আমাদের ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জহির উদ্দিনসহ বিষয়টি নিয়ে আমরা তৎপরতা চালিয়ে অপরাধীকে আইনের আওতায় আনার ব্যবস্থা করেছি।
সমাজসেবক নুরুল ইসলাম সিকদার বলেন, ‘সমাজে এ ধরনের ঘটনা খুবই ন্যক্কারজনক। মানুষের নৈতিক অবস্থান কতটুকু নীচে নামলে এরকম ঘটনা ঘটে।’ অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।
জানা গেছে, অভিযুক্ত রবি হোসেন স্থানীয় মোক্তার হোসেনের ছেলে। মোক্তার হোসেন একজন চিহ্নিত মাদক কারবারি। কয়েকদিন আগে তিনি মাদক মামলায় জেল খেটে এসেছেন। ছেলে রবি হোসেনকে দিয়েও তিনি মাদক বিক্রি করেন বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।