রাসুল (সা.) বলেন,
আমাকে সাতটি অঙ্গের ওপর সিজদা করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কপাল, (এবং তিনি হাত দিয়ে নাকের দিকে ইশরা করে নাককেও এর অন্তর্ভুক্ত করেন,) আর দুই হাত, দুই হাঁটু, দুই পায়ের আঙ্গুলসমূহ। আর আমরা যেন চুল ও কাপড় না গুটাই। (সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম)
১. সিজদার সময় সাতটি অঙ্গ মাটিতে লাগানো বা সাতটি অঙ্গের ওপর সিজদা করা ওয়াজিব। উল্লিখিত হাদিসে হাদিসে ওই সাতটি অঙ্গের কথা উল্লেখ করা হয়েছে; সেগুলো হলো, চেহারা, দুই হাত, দুই হাঁটু ও দুই পায়ের আঙ্গুল। সিজদা নামাজের অন্যতম ফরজ বা রোকন। সিজদা যথাযথভাবে আদায় করা ছাড়া নামাজ হবে না। তাই সিজদা যথাযথভাবে আদায়ের প্রতি যত্নবান হওয়া আমাদের কর্তব্য।
২. সিজদার সময় পা মাটিতে রাখা ওয়জিব। অন্তত এক তাসবিহ পরিমাণ সময় পা মাটিতে না রাখলে সিজদা হবে না। কেউ যদি তার দুই পা বা এক পা পুরো সিজদায় মাটি থেকে ওপরে উঠিয়ে রাখে, তাহলে তার সিজদার ফরজ আদায় হবে না। সিজদার সময় এক পা আরেক পায়ের ওপর উঠিয়ে রাখা বৈধ নয়। কারণ এ রকম ক্ষেত্রে সিজদা হবে ছয় অঙ্গের ওপর, সাত অঙ্গের ওপর নয়।
৩. ধীরস্থীরভাবে সিজদা আদায় করা অর্থাৎ সাতটি অঙ্গ জমিনে রেখে স্থীর হয়ে সিজদার তাসবিহ অর্থাৎ ‘সুবাহানা রাব্বিয়াল আ’লা’ বলা ওয়াজিব। তাড়াহুড়া করতে গিয়ে কেউ যদি যদি যথাযথভাবে সিজদা আদায় না করে, তাহলে তার নামাজ বাতিল হয়ে যেতে পারে। আবু হোরায়রা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) একদিন মসজিদে ঢুকলেন, তখন একজন সাহাবি এসে নামাজ আদায় করলেন। তারপর তিনি এসে নবিজিকে (সা.) সালাম করলেন। নবিজি সালামের জবাব দিয়ে বললেন, আবার গিয়ে নামাজ আদায় করো, তুমি নামাজ আদায় করোনি।
সাহাবি ফিরে গিয়ে আগের মত নামাজ আদায় করে আবার নবিজিকে (সা.) সালাম করলেন। নবিজি আবার বললেন, ফিরে গিয়ে নামাজ আদায় করো, তুমি নামাজ আদায় করোনি।
এভাবে তিনবার তিনি তাকে ফিরে গিয়ে নামাজ আদায় করতে বললেন।
সাহাবি বললেন, সেই মহান সত্তার শপথ! যিনি আপনাকে সত্যসহ পাঠিয়েছেন, আমি তো এর চেয়ে সুন্দর করে নামাজ আদায় করতে পারি না। আপনি আমাকে শিখিয়ে দিন।
নবিজি বললেন, যখন তুমি নামাজের জন্য দাঁড়াবে, তখন তাকবির বলবে। তারপর কুরআন থেকে কিছু আয়াত পড়বে যা তোমার জন্য সহজ হয়। তারপর রুকুতে যাবে এবং ধীরস্থিরভাবে রুকু আদায় করবে। তারপর রুকু’ থেকে উঠে সোজা হয়ে দাঁড়াবে। তারপর ধীরস্থিরভাবে সিজদা করবে। এরপর সিজদা থেকে উঠে স্থিরভাবে বসবে এবং পুনরায় সিজদায় গিয়ে ধীরস্থিরভাবে সিজদা করবে। এভাবে পুরো নামাজ আদায় করবে। (সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম)