যুক্তরাষ্ট্রে করোনার উৎপত্তিস্থল নিউইয়র্কে জনসাধারণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। সোমবার সেখানে এক ভূতুড়ে পরিস্থিতি বিরাজ করতে দেখা গেছে। তবে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি শিগগির দেশের কয়েকটি অংশের লকডাউন শিথিলের আহ্বান জানাবেন।
ট্রাম্প সেদেশের অর্থনৈতিক ক্ষতি বেড়ে যাওয়াকে এড়িয়ে চলতে চান। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, শিগগিরই তিনি দেশটিতে ব্যবসা-বাণিজ্য উন্মুক্ত করে দিবেন।
তিনি জানান, আগামী সপ্তাহের প্রথমার্ধে সামাজিক দূরত্ব তৈরির সময় অতিক্রান্ত হলে ১৫ দিনের কঠোর নিষেধাজ্ঞা শিথিলের আহ্বান জানাতে পারেন। তবে, তিনি এ ব্যপারে গভর্ণরগণের স্ব স্ব রাজ্যের চুড়ান্ত সিদ্ধান্তের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
এদিকে, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এবং রাজ্যসমূহের গভর্ণরগণ করোনাভাইরাসের ভয়াবহতম পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। তারা জানান, এই কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরো অন্তত কিছুদিন বিদ্যমান থাকা দরকার বলে তারা মনে করছেন এবং নিউইয়র্কের মেয়র সারাদেশে লকডাউনের আহ্বান জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে কোভিট-১৯-এ পর্যন্ত ৫৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং প্রায় ৪৪ হাজার মানুষ সেখানে এই বৈশ্বিক মহামারীতে আক্রান্ত।
কয়েক লাখ লোককে বাড়িতে অবস্থানের নির্দেশ দেয়া হয়েছে, অপ্রয়োজনীয় বাণিজ্য, স্কুলগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। নগরীতে এক ঘুমন্ত পরিবেশ বিরাজ করছে যা অতীতে কখনো দেখা যায়নি।
ওয়াল স্ট্রিট-এর ৪২ বছর বয়সী এক ব্যবসায়ী এএফপি’কে বলেন, ‘এই পরিস্থিতি শঙ্কিত করে তুলেছে। কতটা অস্বাভাবিক লাগছে তা বর্ণনা করার মতো না।’
নিউ ইয়র্ক সিটিতে এখন ১২ হাজারেরও বেশি মানুষ আক্রান্তের খবর নিশ্চিত হয়েছে এবং এই মহামারীতে মৃত্যু হয়েছে প্রায় ১ শ’ মানুষের । যা যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যে নজীরবিহীন ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘আমি আমার নিজের এবং রোগীদের নিয়ে শঙ্কিত। কারণ, এ অবস্থা কয়েক মাস ধরে চলতে পারে।’
ট্রাম্প বলেছেন, তিনি যেখানে চলাচলে নিষেধাজ্ঞার প্রয়োজন নেই সেখানে লোকজনকে চলাচলে শিথিল করবেন, যাতে করে তারা কাজে ফিরে আসতে পারে।
মেয়র বিল ডি ব্লাসিও ‘মহামারি মোকাবিলায় নিউইয়র্ক কেবলমাত্র শুরুর মুখোমুখি হয়েছে’ বলে সতর্কতা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ন্যাশনাল গার্ডের সৈন্যরা একটি কনভেনশন সেন্টারে হাসপাতাল তৈরি করছে।
তিনি আরো বলেন, ‘আগামী সপ্তাহ আরো খারাপের দিকে গড়াচ্ছে, পরবর্তী সপ্তাহগুলোর পরিস্থিতি তার চেয়েও ভয়াবহ রূপ নেবে।’
তিনি বলেন, ট্রাম্পের উচিত হবে নিউইয়র্ক, ক্যালিফোর্নিয়া এবং ইলিনোইসের মতই সমগ্র দেশে লকডাউন জারি করা।
সূত্র : এএফপি