শেষ চার ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে তিন জয়, তবুও বাংলাদেশ ফেভারিট নয়। আন্ডারডগ হয়েই মাঠে নামবে সাকিব আল হাসানের দল। অবশ্য এমনটাই হবার কথা, ভারত দল নিজেদের এমন উচ্চতায় নিয়ে গেছে যে, বাংলাদেশের মতো দলের জন্য তা নাগাল পাওয়া কঠিন বটে।
বিশ্বকাপে আজ নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে মাঠে নাবে বাংলাদেশ ও ভারত দুই দলই। তবে স্বাগতিকরা চতুর্থ জয়ের খোঁজে থাকলেও বাংলাদেশ আছে দ্বিতীয় জয়ের সন্ধানে। পুনের মহারাষ্ট্র ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় বেলা আড়াইটায় ম্যাচটি শুরু হবে।
বাংলাদেশ-ভারত লড়াই এখন আর অন্য আট-দশটা সাধারণ ম্যাচের মতো নয়। লড়াইটা এখন আর শুধু জয়-পরাজয়ে সীমাবদ্ধ নেই। মাঠের খেলা থেকে বিতর্কই যেন উভয় দলের লড়াই আকর্ষণীয় করে তোলার বড় কারণ। চলে অর্জনের গর্জন আর কথার লড়াই। কেউ ব্যঙ্গ করে, কেউ করে বড়াই।
শক্তি সামর্থ্য অভিজ্ঞতা অর্জনে যদিও বেশ সমৃদ্ধ ভারত, এগিয়ে বাংলাদেশের থেকে বহুগুণে, তবুও দুই দলের লড়াই হয় এখন বেশ আগুনে। একপেশে ম্যাচ খুবই কম হয়, উত্তেজনার পারদ বাড়ে; প্রতিদ্বন্দ্বিতা জমে উঠে। ফলাফলও সেই কথা বলে। বাংলাদেশও চোখ রাঙায়, চ্যালেঞ্জ ছুড়ে।
তবে এশিয়ার সদ্য চ্যাম্পিয়ন দল ভারত, বিশ্বকাপেও দারুণ খেলছে। একে তো স্বাগতিক দেশ, তার ওপর টানা তিন জয়; আত্মবিশ্বাসে টইটম্বুর রোহিত শর্মারা। বিপরীতে জয় দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করলেও টানা দুই ম্যাচ হেরে ভালো নেই বাংলাদেশ। সব মিলিয়ে শেষ সাত ম্যাচে জয় মাত্র তিনটা। ফলে সবাই ভারতের পক্ষেই ছুটাচ্ছেন বাজির ঘোড়া।
নিউজিল্যান্ডের সাবেক পেসার শেন বন্ডও বাজি ধরছেন ভারতের পক্ষেই। বন্ডের দাবি, নিজেদের ৮০ শতাংশ খেলতে পারলেই বাংলাদেশের বিপক্ষে সহজ জয় পাবে ভারত। ক্রিকইনফোর এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘ভারত দুর্দান্ত ছন্দে আছে, ৮০ শতাংশ দিতে পারলেও জয় পাবে ভারত। আমার মনে হয়, ভারত খুব সহজেই জিতবে।’
তবে অঘটনেই আশা দেখছে বাংলাদেশ। গত কয়েকদিনে বেশ কয়েকটি অঘটন দেখেছে ক্রিকেট বিশ্ব। আফগানিস্তানের কাছে ইংল্যান্ডের আত্মসমর্পণ কিংবা নেদারল্যান্ডসের কাছে দক্ষিণ আফ্রিকার অসহায়ত্ব থেকেই ভারত বধের আত্মবিশ্বাস খোঁজছে বাংলাদেশ।
আফগান ও ডাচরা যদি বড় দলকে হারাতে পারে, তাহলে বাংলাদেশ কেন নয়? এই প্রশ্ন নিশ্চয়ই সাকিবদের কানে পৌঁছেছে। তবে উত্তরটা সাকিবদের জন্য একটু কঠিনই। স্বাগতিক দেশ, আবার এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপের সবচেয়ে সফল দল ভারত। তাছাড়া খেলা হবে রান প্রসবা পুনেতে। যা ভারতীয়দের জন্য সেরের ওপর সোয়া সের!
তবুও বাংলাদেশ পারে, পারবে। নিজেদের সেরাটা দিতে পারলেই পারবে। আফগানিস্তান কিংবা নেদারল্যান্ডস জিতে যাবে, এমনটা কে ভেবেছিল কবে? এটাই বাংলাদেশের শক্তির জায়গা। তাছাড়া শেষ ৪ ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে তিন জয়ও খানিকটা আত্মবিশ্বাস দিবে সাকিবদের।
প্রধান কোচ হাথুরুসিংহেও অনুপ্রেরণা নিচ্ছেন এখান থেকেই। বুধবার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘গত দুই সপ্তাহে যা হয়েছে, বিশ্বকাপ এখন সবার জন্য উন্মুক্ত। আমাদের ছয়টি ম্যাচ বাকি। আমরা বিশ্বাস করি, আমরা ছয়টা ম্যাচ জিততে পারি। ম্যাচের আগে এটাই আমাদের অনুপ্রেরণা। তাছাড়া আমরা সম্প্রতি ভারতের বিপক্ষে ভালোই খেলেছি।’
তবে খেলতে হবে আক্রমণাত্মক ক্রিকেট। ভারত আগে ব্যাট করলে বাঁধতে হবে তিন শ’র আগেই। নিতে হবে ছোট থেকেও ছোট সব সুযোগ। যা জানেন হাথুরুও।
তিনি বলেন, ‘আশা করছি, আমরা আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী পারফর্ম করতে পারব। আমি দলকে মাঠে তাদের শতভাগ দিতে বলতে পারি। খেলার ফলাফল কেমন হবে, তার ওপর আমার কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। আমরা যদি প্রতিভা অনুযায়ী খেলতে পারি, তাহলে আমরা যেকোনো দলকে হারাতে পারি।’