রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:৫৩ অপরাহ্ন

যে কারণে স্পেনে দ্রুত ছড়াচ্ছে করোনা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২৮ মার্চ, ২০২০
  • ২৩৮ বার

স্পেনে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা প্রতিদিন বেড়েই চলেছে। গতকাল শুক্রবার ৭৬৯ জন এ ভাইরাসে প্রাণ হারান। আর দেশটিতে মোট প্রাণহানির সংখ্যা ৫ হাজার ১৩৮ জনে পৌঁছেছে। এ ছাড়া লাগামহীনভাবে প্রতিদিন বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। গতকাল বৃহস্পতিবার ৭ হাজার ৫৭১ জন নতুন করে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। এর আগের দিন বৃহস্পতিবার রেকর্ড সংখ্যক ৮ হাজার ৫৭৮ জন আক্রান্ত হন।

আরেকটি উদ্বেগজনক ঘটনা হলো শুক্রবার পর্যন্ত দেশটির ১৬.৫ শতাংশ চিকিৎসকও এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। যেখানে ইতালিতে আক্রান্ত হয়েছেন আট শতাংশ।

স্পেনে করোনাভাইরাস এত দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার কারণ কী? তা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

স্পেনে ভাইরাসটির এত বিস্তার ঘটার সবচেয়ে বড় কারণ হিসেবে স্পেনের গণমাধ্যম চিহ্নিত করেছে, ভাইরাসজনিত মহামারি সম্পর্কিত একরকম সমস্যা মোকাবিলার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম না থাকাকে। পাশাপাশি জনস্বাস্থ্য সেবার সরঞ্জামের অসম বণ্টনের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।

গত বুধবার, স্পেনের মেডিকেল ইউনিয়নগুলোর কেন্দ্রীয় সংস্থা (সিইএসএম) দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পর্যাপ্ত প্রতিরক্ষামূলক সরঞ্জাম সরবরাহ করার জন্য সুপ্রিম কোর্টে একটি মামলা দায়ের করেছে।

দেশটির বিশেষজ্ঞরা এটিকে সম্ভাব্য একটি কারণ হিসেবে স্বীকার করলেও অন্যান্য কিছু বিষয়ের দিকেও নির্দেশ করেছেন।

ইউরোপে রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের বরাত দিয়ে নাভারা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনস্বাস্থ্য ও প্রতিরোধক মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক সিলভিয়া কার্লোস চিলেরন বলেন, ‘কোভিড-১৯ এর প্রভাব একটি দেশের প্রস্তুতির ধরন এবং দ্রুত প্রতিরোধ ব্যবস্থা প্রয়োগের ক্ষমতার ওপর নির্ভর করে।’

তিনি জানান, স্পেনে যেমন দ্রুত বিস্তার ঘটছে এমন ক্ষেত্রে জনবল ও সরঞ্জাম ঠেকানোর নিশ্চয়তা দেয় না। প্রভাব আরও গুরুতর হয়। এর ফলে সমাজের ঝুঁকিপূর্ণ ক্ষেত্রে মৃত্যু হয় বেশি। বিশেষ করে যখন চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিতরাই আক্রান্ত হয়ে পড়েন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দক্ষিণ স্পেনের একটি হাসপাতালের চিকিৎসক বলেন, ‘সাধারণভাবে মানুষ লকডাউন মেনে চলছে এবং ছোটখাটো অসুস্থতা নিয়ে হাসপাতালে আসছেন না। এতে করে সংক্রমণের ঝুঁকি কমছে। কিন্তু হাসপাতালগুলোতে স্যানিটারি সামগ্রীর ঘাটতি রয়েছে করোনার মতো সংকট মোকাবিলার জন্য। যার ফলে স্বাস্থ্যকর্মীদের সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা বহুগুণ বাড়িয়ে দিচ্ছে এবং এটি বড় বিষয়।’

সতর্কতা জারির আগেই স্পেনে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে উল্লেখ করে কর্ডোবা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের গবেষক হোসে হার্নান্দেজ বলেন, ‘করোনভাইরাস সম্পর্কে কিছুদিন আগেও পর্যাপ্ত তথ্য ছিল না। করোনভাইরাস যে কতটা ঝুঁকিপূর্ণ সে বিষয়েও জনগণ জানত না।’

জনগণের মধ্যে সচেতনতা না থাকায় কিছুদিন আগেও (৮ মার্চ) স্পেনে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালিত হয় ব্যাপক জনসমাগমের মধ্য দিয়ে। এই মাসের মাঝামাঝি সময় পর্যন্তও সেখানকার সাধারণ জনগণ কোনো ধরনের রাখ ঢাক ছাড়াই বারগুলোতে পার্টি করেছে।

দেশটির আবহাওয়াও করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। সেখানে তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং উচ্চ আর্দ্রতার কারণে ভাইরাসের বিস্তার হতে পারে কি না সে বিষয়ে গবেষণা চলছে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com