আইসোলেশনে থাকা শিশুটির শরীরে করোনাভাইরাসের কোনো নমুনা পাওয়া না যাওয়ায় শিশুটি সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরে গেছে। এদিকে জেলার কোথাও করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া যায়নি। কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন রোববার সকালে সাংবাদিকদের এই তথ্য দেন। এদিকে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ফেরিওয়ালা, দিনমজুরসহ হৃত দরিদ্রদের জন্য শুকনা খাবারের প্যাকেট বিতরণ করা হয়েছে। কুষ্টিয়ায় এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্তের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশনে রাখা সাত মাসের শিশুটি এখন সম্পূর্ণ সুস্থ। তার শরীরে কোনো করোনা ভাইরাসের নমুনা না থাকায় রোববার সকালে সে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে ফিরে গেছে। কুষ্টিয়া শহরের কালিশংকরপুর এলাকার বাসিন্দা সিঙ্গাপুর ফেরত তহিদুল ইসলাম হোম কোয়ারেন্টিন মেনে চলছিলেন। এরই মধ্যে তার সাত মাসের শিশুটি গত ২৩ মার্চ জ্বর, ঠাণ্ঠা, কাশিতে আক্রান্ত হয়ে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়। তাকে নিউমোনিয়ার চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিল।
যেহেতু শিশুটির বাবা প্রবাসে ছিলেন তাই সন্দেহতীতভাবে বৃহস্পতিবার তাকে হাসপাতালের আইসোলেশনে রাখি। পরে শিশুটি করোনা পজেটিভ কিনা এটা পরীক্ষার জন্য রোগ তত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে (আইইডিসিআর) জানানো হয়। শুক্রবার দুপুরে আইইডিসিআর-এর দুই নমুনা সংগ্রহকারী কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশনে থাকা শিশুটির শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে যান। সেইসাথে শিশুটির পুরো পরিবারকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছিল। শনিবার থেকেই শিশুটি সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়ার পরও তাকে বাড়িতে ফেরত পাঠাতে পারছিল না। রোববার সকালে ঢাকা থেকে নমুনার রিপোর্টে কোনো করোনা ভাইরাস নেই মর্মে রিপোর্ট এলে সিভিল সার্জন সাংবাদিকদের এতথ্য জানান।।
দুপুরে শিশুটি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়িতে চলে যায়। এদিকে শনিবার সকালে জেলা প্রশাসক মো. আসলাম হোসেন স্থানীয় সাংবাদিক, স্বেচ্ছাসেবী এবং কালেক্টরেট অফিসে দায়িত্ব পালনরতদের মাঝে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে প্রতিরক্ষা সামগ্রী যেমন- সেনিটাইজার, এলকোহলে ভিজানো টিস্যু, সাবান ও মাস্ক বিতরণ করেন। এসময় জেলা প্রশাসক বিভিন্ন উপজেলায় ফেরিওয়ালা, দিনমজুরসহ হতদরিদ্রদের জন্য শুকনা খাবারের প্যাকেট বিতরণ করেন।
এদিকে করোনা সংক্রান্ত যেকোনোতথ্য আদান প্রদান ও অভিযোগ কেন্দ্র খোলা হয়েছে। নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আবু রাসেলকে এ দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় চলমান কর্মসূচিতে যে সকল খেটে খাওয়া চায়ের দোকানি, বাদাম বিক্রেতা, ফেরিওয়ালা, ভ্যান চালক বা অন্যান্য যে সকল হতদরিদ্র লোকজন কর্মহীন হয়ে পড়ছেন তাদেরকে জেলা প্রশাসনের স্থানীয় উদ্যোগে প্রয়োজনীয় খাদ্য-সামগ্রী সরবরাহ করার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটরা মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনাকালে সরেজমিনে গিয়ে ব্যক্তির কাছে খাবারের প্যাকেট পৌঁছে দিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
এ ছাড়া সরকারিভাবে প্রাপ্ত বরাদ্দসমূহও সকল উপজেলায় বিভাজন করে দেয়া হয়েছে এবং উপজেলার মাধ্যমে সেগুলো বিতরণের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এদিকে এখন পর্যন্ত করোনা সন্দেহে বা করোনার উপসর্গ রয়েছে এমন কোনো রোগী জেলার কোনো হাসপাতালে আসেনি। জেলায় বর্তমানে বিদেশ ফেরত ২৮০ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে।