বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪৮ অপরাহ্ন

ঢাকার কাছাকাছি ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে যেসব অঞ্চল

বিডি ডেইলি অনলাইন ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২৩
  • ৫০ বার

রাজধানী ঢাকাসহ শনিবার সকালে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অফিস জানায় রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল পাঁচ দশমিক ছয়। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়।

এরপর অনেকেই ভবন ছেড়ে খোলা জায়গায় বেরিয়ে আসেন। স্বজনদের খবর নিতে থাকে থাকেন কেউ কেউ। সামাজিক মাধ্যমেও নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানাতে থাকেন সবাই। তবে এই ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।

আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক জানান এর উৎপত্তিস্থল বাংলাদেশের অভ্যন্তরেই। তিনি নিজেও মোহাম্মদপুরের বাসা থেকে তার পরিবারকে নিয়ে খোলা জায়গায় বের হয়ে আসেন বলে জানান বিবিসিকে।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক সংস্থা ইউএসজিএস বলছে, ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল পাঁচ দশমিক ছয় রিখটার স্কেল। আর এর উৎপত্তিস্থল রামগঞ্জের আট কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব-উত্তরে। আর এর গভীরতা ছিল ১০ কিলোমিটার।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অফিসও নিশ্চিত করেছে লক্ষীপুরেই রামগঞ্জ থেকেই এই ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়।

লক্ষীপুর সদর থেকে রওশন খুকি জানান ,তারা হালকা ঝাঁকুনি টের পেয়েছেন। ভয়ে সবাই বাইরে বেরিয়ে এসেছেন বলে জানান তিনি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিশেষ করে ফেসবুকে সকালের এই ভূমিকম্প নিয়ে দেখা যায় নানা প্রতিক্রিয়া। শাহাব সোহাগ লিখেছেন, ‘৫.২ মাত্রার ভূমিকম্প, দূরত্ব মাত্র ৫৭ মাইল। সময়ের হিসাবে পূর্বে এর চেয়ে বেশি স্থায়িত্বের ভূমিকম্প অভিজ্ঞতা আছে কি না মনে পড়ছে না।’

অর্থাৎ বেশ কিছু সময় ধরে ঝাঁকুনি অনুভবের কথা বলছেন অনেকেই।

তবে যারা রাস্তায় বা সমতলে ছিলেন তাদের অনেকই ভূমিকম্পের অনুভূতি টের পাননি।

ঢাকার কাছে যেসব ভূমিকম্প
ভূতত্ত্ববিদদরা বলছেন, সিলেট থেকে চট্টগ্রাম অঞ্চলে কয়েকটি প্লেট থাকার কারণে এসব এলাকা ভূমিকম্পের বড় ধরণের ঝুঁকিতে রয়েছে।

ঢাকায় গত কয়েক বছরের মধ্যে যেসব ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে, সেগুলোর অধিকাংশের উৎপত্তিস্থলই ছিল বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলে সিলেট বা চট্টগ্রাম অঞ্চলে। অনেকগুলো ভূমিকম্পের কেন্দ্র ছিল ভারতের মিজোরাম বা ত্রিপুরা রাজ্যে।

তবে ঢাকার আশেপাশে উৎপত্তিস্থল রয়েছে, এমন ভূমিকম্পও মাঝেমধ্যেই হতে দেখা গেছে।

ভূতত্ত্ববিদ হুমায়ুন আখতারও বলেন, ‘২০০৮ থেকে ২০১২-১৩ পর্যন্ত ঢাকার কাছাকাছি নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা অঞ্চলে গ্রীষ্মের সময় অনেকগুলো ছোট ছোট ভূমিকম্প হতে দেখেছি আমরা।’

ভূমিকম্প শনাক্তকারী সংস্থা আর্থকোয়েকট্র্যাকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১২ সালের ১৮ মার্চ এই অবস্থানেই – দোহার থেকে ১৪.২ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে – ৪.৫ মাত্রার ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়েছিল।

ঢাকার কাছে ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইল অঞ্চলেও গত ২০ বছরের মধ্যে একাধিক ছোট ছোট ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়েছে।

তিন বছর আগে, ২০২০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইলের ১২ কিলোমিটার পূর্বে ৪ মাত্রার ভূমিকম্প হয়।

এছাড়া ২০০৮ এ টাঙ্গাইলের কাছে নাগরপুরে এবং ২০১৯ সালে মির্জাপুরে চার মাত্রার নিচে ভূমিকম্প হয়েছে বলে বলছে আর্থকোয়েকট্র্যাক।

পাশাপাশি গত ১৫ বছরে নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ ও কিশোরগঞ্জে কমপক্ষে চারবার ভূমিকম্প হয়েছে বলে জানাচ্ছে সংস্থাটি।

আর ঢাকার কাছে ফরিদপুরেও গত ১৫ বছরের মধ্যে দু’বার চার মাত্রার বেশি শক্তিশালী ভূমিকম্প হয়েছে বলে নথিবদ্ধ করেছে সংস্থাটি।

তবে গত ১৫-২০ বছরের মধ্যে ঢাকার কাছে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প হিসেবে নথিবদ্ধ করা হচ্ছে ২০১০ সালের সেপ্টেম্বরে নারায়ণগঞ্জে পাঁচ দশমিক এক মাত্রার একটি ভূমিকম্পকে।

বাংলাদেশে সর্বশেষ ১৮২২ এবং ১৯১৮ সালে মধুপুর ফল্টে বড় ভূমিকম্প হয়েছিল। ১৮৮৫ সালে ঢাকার কাছে মানিকগঞ্জে সাত দশমিক পাঁচ মাত্রার একটি ভূমিকম্পের ইতিহাস রয়েছে।

সূত্র : বিবিসি

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com