তুন করে সংক্রমণ অথবা মৃত্যু— দুই-ই ধীরে ধীরে কমছে করোনা-বিধ্বস্ত ইতালি ও স্পেনে। মানুষকে ঘরবন্দি রাখায় ফল দিয়েছে, বোঝা যাচ্ছে সেটাও। এই প্রবণতা দেখে আপাতত কিছুটা আশা-ভরসা পাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক উপদেষ্টা তেমনটাই বলেছেন। তবে এখন যুক্তরাষ্ট্রের যা পরিস্থিতি, তাতে ফের একটা ৯/১১ দেখার মতো মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছে গোটা দেশ, জানিয়েছেন সার্জেন জেনারেল ভাইস অ্যাডমিরাল জেরোম অ্যাডামস।
এখন তাই পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়টিতে জোর দেয়া হচ্ছে আমেরিকায়। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এতে যদি ঠিকমতো গুরুত্ব দেয়া না হয়, তা হলে এই সপ্তাহ ছাড়াও আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ফের করোনা-প্রকোপের শীর্ষ ছোঁবে আমেরিকা। এখন আমেরিকায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩ লাখ ৪০ হাজারের কাছাকাছি। মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার ৫০০ ছাড়িয়েছে। তা সত্ত্বেও বিভিন্ন হাসপাতালে পর্যাপ্ত সরঞ্জাম নেই বলে অভিযোগ উঠছে। মিশিগানের গভর্নর জানিয়েছেন, তাদের প্রদেশে সরঞ্জামের অভাব মারাত্মক
পর্যায়ে পৌঁছেছে।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, এই সপ্তাহে নিউ ইয়র্ক, নিউ জার্সি এবং ডেট্রয়েটে মৃত্যু এবং হাসপাতালে আক্রান্ত রোগীদের ভিড় অতিরিক্ত বাড়বে। অন্য শহরগুলোতে একই ধাঁচে সংক্রমণ বাড়বে পরবর্তী সপ্তাহগুলোয়।
তবে স্পেনের প্রায় সব এলাকাতেই নতুন করে সংক্রমণের হার কমেছে বলে দাবি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক সূত্রের মতে, “এই প্রবণতা এই রকমই থাকবে কি না, তা বুঝতে আরো কয়েক দিন লাগবে। তবে এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, সংক্রমণের হার কমছে।” গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ৬৩৭ জন। ইটালিতেও একই চিত্র। এখন বিশ্বে সব চেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে ইটালিতেই— ১৬,৫২৩। কিন্তু এখন নতুন করে সংক্রমণ এবং মৃত্যু কমেছে। সব চেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত লম্বার্ডিতেও করোনা আক্রান্তের হার নিম্নগামী। তবে এখানে লকডাউন কবে তোলা হবে, তা নিয়ে এখনো কিছু ভাবা হয়নি বলেই জানিয়েছে প্রশাসন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে সব চেয়ে ভয়ঙ্কর আর্থিক পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে চলেছে ফ্রান্স, সোমবার এই কথা বলেছেন দেশের অর্থমন্ত্রী। এ দেশে মৃতের সংখ্যা ৮৯১১। রাশিয়ায় এক দিনে আক্রান্ত হয়েছেন অন্তত ১ হাজার মানুষ। এখানে মৃতের সংখ্যা ৪৭।
চীনে লকডাউন শিথিল হতে না হতেই ভিড় বাড়ছে বিভিন্ন পর্যটনস্থলে। করোনা-অতিমারির ঝুঁকি এখনো দূর হয়নি— স্বাস্থ্য দফতরের এই সতর্কতাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে আনহুই প্রদেশের হুয়াংশান মাউন্টেন পার্কে মাস্ক পরেই হাজির জনতা। একই দৃশ্য সাংহাইয়ে। কয়েক সপ্তাহ বন্ধ থাকার পরে শহরের বিভিন্ন নামী রেস্তরাঁয় মানুষের ঢল। বেইজিংয়েও পার্ক এবং অন্য খোলা জায়গায় স্থানীয়দের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা