শরীরের অন্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মতো কিডনি খুব গুরুত্বপূর্ণ দুটি অঙ্গ। মানবদেহের বর্জ্য নিঃসরণ করে দেহ সুস্থ ও রোগমুক্ত রাখতে এ অঙ্গ বিশেষ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু তেমন কোনো লক্ষণ প্রকাশ না করে দেহের এ গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ বিকল হয়ে পড়তে পারে যে কোনো সময়। তাই সাবধানতা, যেমনÑ কিডনি রোগ থেকে মুক্ত রাখতে পারে, তেমনি দেহের গুরুত্বপূর্ণ দুটি অঙ্গÑ কিডনিকেও ভালো রাখতে পারে।
কিডনি ভালো রাখবেন যেভাবে : নিয়মিত হাঁটুন। সাইকেল চালান। বাসা থেকে কর্মস্থলের দূরত্ব বেশি না হলে সাইকেল চালিয়ে যাতায়াত করতে পারেন। সপ্তাহে এক বা দুবার সাঁতার কাটুন।
খাবারে পরিমিত হোন : অতিরিক্ত আহার ওজন বাড়ায়। বাড়তি ওজন কিডনি রোগের সুযোগ সৃষ্টি করে। ভোজনে সতর্ক হোন। ফাস্টফুড এড়িয়ে চলুন। বাসা বা রেস্তোরাঁর মসলাদার খাবার এড়িয়ে চলুন।
লবণাসক্তি কমিয়ে ফেলুন : অনেকের পাতে লবণ না হলে চলেই না। প্রতিদিন আমাদের শরীরের প্রয়োজনে এক চা-চামচ লবণই যথেষ্ট, তরকারিতে ব্যবহৃত লবণ থেকেই পাওয়া যায়। তাই বাড়তি লবণের প্রয়োজন নেই। অতিরিক্ত লবণ শুধু কিডনি রোগের ঝুঁকিই বাড়ায় না, উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকিও বাড়ায়।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন : উচ্চ রক্তচাপ শুধু হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকিই বাড়ায় না, কিডনি বিকলেও ভূমিকা রাখে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শমতো নিয়মিত উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ওষুধ সেবন করে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
ডায়াবেটিসেও নজর দিন : ডায়াবেটিসও কিডনি বিকলের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখুন। কেননা ডায়াবেটিসে আক্রান্তের অর্ধ শতাংশেরই কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এ ঝুঁকি থেকে রেহাই পেতে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীরা নিয়মিত রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করান এবং প্রতি তিন মাস অন্তর কিডনি ফাংশন টেস্ট করান।
ধূমপান থেকে বিরত থাকুন : অনেকেই জানেন না, ধূমপান কিডনি রোগ সৃষ্টি করতে পারে। ধূমপানের ফলে রক্তে চর্বি জমাট বাঁধার মাত্রা বেড়ে যায়। ফলে কিডনিতে রক্তপ্রবাহের মাত্রা কমে গিয়ে কিডনির কার্যক্ষমতা হ্রাসের মাধ্যমে কিডনি বিকল হতে পারে। ধূমপানের ফলে হতে পারে কিডনি ক্যানসারও।
ওষুধ যখন কিডনি বিকলের কারণ : অনেকে অসুস্থতা বোধ করলে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই পাড়ার ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনে খান। বিশেষ করে বেদনানাশক ওষুধ। অপ্রয়োজনীয় ওষুধ সেবনে কিডনি বিকল হতে পারে। কেননা ওষুধের অপ্রয়োজনীয় উপাদান কিডনিকেই দেহ থেকে বের করে দিতে হয়। এতে কিডনির ওপর চাপ পড়ে।
নিয়মিত কিডনি পরীক্ষা করান : অনেকেরই কিডনি রোগের ঝুঁকি রয়েছে। যেমনÑ উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস রোগী-যাদের দেহের ওজন বেশি এবং যাদের পরিবারে কিডনি রোগে আক্রান্তের ইতিহাস রয়েছে, এ ধরনের মানুষ নিয়মিত কিডনি পরীক্ষা করাবেন।