জাহাজের ধাক্কায় যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোরের একটি সেতু ভেঙে যাওয়ার পর সেখানকার বন্দরের বেশিরভাগ অংশ বন্ধ আছে। ফলে কয়েক কোটি টন কয়লা, শত শত গাড়ি এবং কাঠ ও জিপসামের চালান আটকে গেছে।
মঙ্গলবার বাল্টিমোর শহরের কাছে কন্টেইনারবাহী একটি জাহাজ ফ্রান্সিস স্কট কি সেতুতে আঘাত করলে সেতুটি ভেঙ্গে নদীতে পড়ে। ওই ঘটনায় সেসময় বহু যানবাহন পাটাপস্কো নদীতে পড়ে যায়।
মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দুর্ঘটনার দিন প্রায় ৪০টি জাহাজ বাল্টিমোর বন্দর ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। আরও কিছু জাহাজ বন্দরে ভেড়ার কথা ছিল। কিন্তু নদীতে ভেঙে যাওয়া সেতুর অংশ পড়ে থাকায় জাহাজ চলাচল সম্ভব হচ্ছে না। দুর্ঘটনার কারণ জানতে শুরু হওয়া তদন্ত শেষে জাহাজ চলাচলের পথ পরিষ্কার করার পর বন্দরের কার্যক্রম পুরোপুরি চালু হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের পরিবহনমন্ত্রী পিট বুটিগিগ বলছেন, বাল্টিমোর বন্দর বন্ধ থাকায় সরবরাহ ব্যবস্থার উপর বড় ও দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়তে পারে। চ্যানেল পরিষ্কার করতে ও বন্দর খুলে দিতে কতদিন লাগতে পারে তা বলার সময় এখনও আসেনি।
বাল্টিমোর এলাকায় ইউরোপীয় গাড়িনির্মাতা মার্সেডিজ, ফল্কসভাগেন ও বিএমডাব্লিউর বড় উপস্থিতি রয়েছে। জার্মান গাড়িনির্মাতা বিএমডাব্লিউর এক মুখপাত্র রয়টার্সকে জানিয়েছেন, অল্পসময়ের জন্য কিছু বিলম্ব ছাড়া শিগগিরই কোনো প্রভাব পড়বে বলে তারা আশঙ্কা করছেন না। বন্দরের গাড়ি টার্মিনালটি সেতুটির সামনে অবস্থিত হওয়ায় এখনও সেখানে যাওয়া-আসা করা যাচ্ছে বলে জানান তিনি।
তবে মার্কিন গাড়িনির্মাতা ফোর্ড জানিয়েছে, তাদের কিছু কাজ অন্য বন্দরে সরিয়ে নিতে হবে। সে কারণে সরবরাহ ব্যবস্থার উপর প্রভাব পড়বে।
লজিস্টিক প্ল্যাটফর্ম ফ্লেক্সপোর্টের সিইও রায়ান পিটারসন বলছেন, ২০২৩ সালে মাত্র ১১ লাখ কন্টেনার হ্যান্ডলিং করেছে বাল্টিমোর বন্দর। ফলে লোহিত সাগরে হুতি আক্রমণের কারণে যত ক্ষতি হচ্ছে বাল্টিমোর বন্দর বন্ধ থাকায় ক্ষতি সে তুলনায় অনেক কম হবে।
ভেঙে পড়া ফ্রান্সির স্কট কি সেতুটি তৈরিতে ৫০ কোটি থেকে ১২০ কোটি ডলার খরচ হতে পারে। সময় লাগতে পারে অন্তত দুই বছর। প্রতিদিন প্রায় ৩০ হাজার পরিবহণ সেতুটি ব্যবহার করতো।