যুক্তরাষ্ট্রের ভূতত্ব বিভাগ জানিয়েছে, বিপুল জনসংখ্যা-অধ্যূষিত নিউ ইয়র্ক সিটির শহর এলাকায় শুক্রবার সকালে ভূমিকম্প হয়েছে। তবে বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গোটা উত্তরপূর্বাঞ্চল জুড়েই তারা এই কম্পন অনুভব করেন।
ভূতত্ব বিভাগ জানিয়েছে, নিউ জার্সির লোবানন এলাকায় প্রথমিকভাবে ৪.৭ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এ এলাকাটি নিউ ইয়র্ক সিটির ৪৫ মাইল পূর্বে ফিলেডেলফিয়ার ৫০ মাইল উত্তরে অবস্থিত।
নিউ ইয়র্কের দমকল বিভাগ জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে কোনো ক্ষয়ক্ষতির কথা জানা যায়নি। নিউ ইয়র্কের মেয়রকে এই ভূমিকম্প সম্পর্কে অবহিত করা হয় বলে তার মুখপাত্র ফেবিয়েন লেভি জানিয়েছেন । তিনি আরো বলেন, ‘যদিও এই ভূমিকম্পের ব্যাপারে কোনো বড় ধরণের ক্ষয়ক্ষতির খবর আমাদের কাছে নেই, আমরা এখনো এ ব্যাপারটি খতিয়ে দেখছি।’
নিই ইয়র্ক সিটির কেন্দ্রস্থল ম্যানহাটানে যানবাহনের নিয়মিত শব্দ আরো জোরালো হয়ে ওঠে যখন গাড়ি চালকরা মুহূর্তের জন্য কেঁপে ওঠা রাস্তায় তাদের গাড়ির হর্ণ বাজান। ব্রুকলিনের কোনো কোনো বাসিন্দা বিকট শব্দ শুনতে পান এবং তাদের ভবন যে নড়ছে তা টের পান।
এই ভূমিকম্প সম্পর্কে ভয়েস অব আমেরিকাকে এক একান্ত সাক্ষাত্কারে নিউ ইয়র্কের সাপ্তাহিক বাঙালি পত্রিকার সম্পাদক কৌশিক আহমেদ বলেন, ‘ডেস্কে বসে কাজ করছিলাম। সামনে দু’টি ল্যাপটপ। হঠাত্ আমার চেয়ার, টেবিল, ল্যাপটপ, টেবিল ল্যাম্প, দেয়াল ঘড়ি এবং মাথার উপরের ঝাড়বাতি কাঁপতে শুরু করল, বুঝতে পারলাম ভূমিকম্প।’ তার পর কী করলেন, এই প্রশ্নের জবাবে কৌশিক আহমেদ বললেন, ‘চেয়ার ছেড়ে উঠে পড়লাম । চোখের সামনে ভাসতে লাগলো গত সপ্তাহে তাইওয়ানের ভূমিকম্পের ধ্বংসাবশেষের ছবি।’
কৌশিক আহমেদ ভয়েস অফ আমেরিকাকে জানান, তিনি তারপর তার স্ত্রীকে ডেকে নিয়ে নিচে নামলেন। নিচে নেমে দেখলেন, চেরি ফুলের গাছগুলো কাঁপছিল। তার পর ভূমিকম্প থেমে গেল। তিনি বললেন, ‘মাত্র ৩০ সেকেন্ডে যেন প্রচণ্ড ঝড় বয়ে গেল। সংবাদকর্মীরা তত্পর হয়ে উঠলেন। মনে তখনো ভয়, কারণ ভাবছিলাম, এই-ই বুঝি শেষ নয়, আবার কেঁপে উঠলো বুঝি। ফোনে এলো জরুরি বার্তা, আফটার শক সম্পর্কে সতর্কীকরণ।’
এ দিকে বল্টিমোর, ফিলেডেলফিয়া, কানেটিকাট এবং যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলের অন্যান্য অঞ্চল থেকেও ভূমিকম্পের খবর পাওয়া গেছে ।
নিউ ইয়র্কের গভর্ণর ক্যাথি হোচুল এক্স এ পোস্ট করেছেন যে এই ভূমিকম্প গোটা নিউ ইয়র্ক রাজ্যজুড়েই অনুভুত হয়েছে। তিনি লেখেন, ‘এর যেকোনো প্রক্রিয়া বা ক্ষতির ব্যাপারটা আমার টিম খতিয়ে দেখছে আর আমরা সারা দিন ধরে এ ব্যাপারে আপনাদের হাল নাগাদ খবর দেব।’
সূত্র : ভয়েস অব আমেরিকা