পাকিস্তানের মাটিতে তাদেরকেই ২-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করেছে বাংলাদেশ। ঐতিহাসিক সেই জয়ের মূল অস্ত্র ছিলেন অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। বলে-ব্যাটে দুর্দান্ত নৈপুণ্য দেখিয়ে হয়েছিলেন সিরিজ সেরা। পুরস্কার হাতে পেয়েই মিরাজ ঘোষণা দিয়েছিলেন, সিরিজ সেরার প্রাইজমানি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত এক রিকশাচালকের পরিবারকে দেবেন। সেই কথা এবার রাখলেন তিনি।
আজ সেই রিকশাচালকের পরিবারের কাছে পুরস্কার তুলে দেন মিরাজ। নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাকাউন্টে সেটির জানানও দিয়েছেন এই স্পিন অলরাউন্ডার।
ফেসবুকে মিরাজ লেখেন, ‘সম্প্রতি অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিও আমার চোখে পড়েছিল। ভিডিওতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত এক রিকশাচালক ভাইয়ের সন্তানের কান্নাজড়িত কণ্ঠের কথাগুলো আমাকে বারবার ভাবিয়ে তুলেছে। সে ভাইয়ের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর সংকল্প করেছিলাম। কথা দিয়েছিলাম পাকিস্তান সিরিজের ‘‘ম্যান অব দ্যা সিরিজ’’-এর পুরষ্কারের অর্থ তুলে দেব তাদের হাতে। অবশেষে পূরণ হলো সে লক্ষ্য।’
মিরাজ তার স্ট্যাটাসে আরও লেখেন, ‘গতকাল আমার বাবা ও মায়ের হাত দিয়ে এই অর্থ তুলে দিতে সক্ষম হয়েছি আরিয়ান, আরমান ও আমেনার মায়ের হাতে। জানি, হারানো জীবনের তুলনায় এই অর্থ কিছুই নয়। আমার এই সামান্য অর্থে তাদের জীবনকে কিছুটা সহজ করাটাই আমার সার্থকতা।’
পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে ব্যাট হাতে ১৫৫ রান করার পাশাপাশি বল হাতে নিয়েছেন ১০ উইকেট। এর মধ্যে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে ২৬ রানে ৫ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর লিটন দাসের সঙ্গে অবিশ্বাস্য এক জুটি গড়েন মিরাজ। যে জুটিতে একাধিক রেকর্ডও ভেঙেছেন এই দুজন। এমন পারফরম্যান্সের পরই সিরিজ সেরার পুরস্কারও পেয়েছেন মিরাজ।
সেদিন পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিকতা শেষের পর নিজের মতো বাংলায় কিছু কথা বলার অনুমতি চান মিরাজ। এরপর সিরিজ সেরার প্রাইজমানি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত রিকশাচালকের পরিবারকে দেওয়ার কথা জানিয়ে বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, আমি প্রথমবারের মতো দেশের বাইরে ম্যান অব দ্য সিরিজ হয়েছি। সম্প্রতি আমাদের দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন হয়েছে, যেখানে অনেকে শহীদ হয়েছেন। এই আন্দোলনে একজন রিকশাচালক আহত হয়েছিলেন, পরে উনি মারা যান।এই ম্যান অব দ্য সিরিজের পুরস্কারটা তার পরিবারকে আমি দিতে চাই।’