ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ব্রিটেনের মধ্যকার বাণিজ্য আলোচনার নির্ধারিত রাউন্ডের সর্বশেষ তথা চতুর্থ দফা শুক্রবার শেষ হয়েছে। এই আলোচনার মাধ্যমে নতুন চুক্তি সম্পাদনের ব্যাপারে উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি পরিলক্ষিত হয়নি। অন্তর্বর্তী সময়সীমা আরো বাড়ানো হবে কি না সে সংক্রান্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।
করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে চার দিনের ভিডিও আলোচনার পরেও উভয় পক্ষেরই ব্যবসায়ের নিয়মকানুনসহ বিভিন্ন ইস্যুতে মতানৈক্য রয়ে গেছে। ব্রিটিশ সমুদ্রসীমায় দীর্ঘমেয়াদি প্রবেশের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের দাবির বিপক্ষে ব্রিটেনের দৃঢ় অবস্থানের কারণে সমঝোতা অনেক দূরই রয়ে গেছে। সত্যি কথা বলতে গেলে এই সপ্তাহে উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি হয়নি বলে এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রধান ব্রেক্সিট আলোচক মিশেল বার্নিয়ার।
ব্রিটেনের পক্ষ থেকে দেশটির প্রতিনিধিত্বকারী আলোচকও আলোচনাকে অর্থবহ কোনো সাফল্যের দিকে নিয়ে যেতে ব্যর্থ হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। আলোচনার অগ্রগতি হয়েছে খুব কম, তবে আলোচনা ইতিবাচক ভাষায় হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্রিটেনের প্রধান আলোচক ডেভিড ফ্রন্ট।
ব্রিটেন আনুষ্ঠানিকভাবে ৩১ জানুয়ারিতে ২৭টি জাতিরাষ্ট্রের ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে গেলেও বছরের শেষ পর্যন্ত ইইউ’র শুল্কমুক্ত অর্থনৈতিক অঞ্চলেই থেকে যায়। এখনো নতুন বাস্তবতার সাথে মানিয়ে নিতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে কাজ করে যাচ্ছে দেশটি। এই উত্তরণের সময়কাল দুই বছর বাড়ানো যেতে পারে। তবে এটি করার জন্য ব্রিটেনকে জুলাইয়ের মধ্যে একটি আবেদন করতে হবে। অথচ দেশটির প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বারবার বলেছেন, তিনি কোনো মেয়াদ বাড়িয়ে দিতে ইইউকে বলবেন না।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট ও ইইউ’র প্রধান উরসুলা ভন ডের লায়েনের সাথে বরিস জনসনের মধ্যকার একটি উচ্চপর্যায়ের রাজনৈতিক বৈঠকে এই সংক্রান্ত আলোচনায় আসন্ন অগ্রগতির সম্ভাবনা এখন সবচেয়ে বেশি। বছরের শেষের দিকে যদি উভয় পক্ষ কোনো চুক্তিতে না পেঁৗঁছে, তাহলে উভয় পক্ষের মধ্যে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে শুল্ক ও কোটা চাপিয়ে দেয়া হবে। যেমন গাড়িগুলো এক পাশ থেকে অন্য পাশে রফতানি করা হলে ১০ শতাংশ শুল্কের মুখোমুখি হবে। এটি মহামারীর পরে আরো একটি অর্থনৈতিক ধাক্কার সৃষ্টি করবে, যা ব্রিটেনকে আরো বেশি প্রভাবিত করবে বলে বেশির ভাগ অর্থনীতিবিদ মনে করেন।
গত বছর একটি চুক্তির অধীনে ছেড়ে যাওয়ার পরও ইইউ’র বাজেটে লন্ডনের অবদান রাখা নিয়ে ব্রেক্সিট সমর্থকরাও বিরক্ত। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বর্তমানের ব্যাপারে অতীত আলোচনায় নির্ধারিত সময়সীমাকে না বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। জুনের শেষের দিকে তিনি এ ব্যাপারে আবশ্যক যা কিছু করার তা করবেন। ফলে নতুন চুক্তির সম্ভাবনা দুর্বোধ্যই থেকে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। এপি ও সানডে টাইমস