পরীক্ষার হল না কি রোবটের কারখানা! বেঞ্চে সার দিয়ে বসে ছাত্র-ছাত্রীরা মাথা গুঁজে লিখছে পরীক্ষার খাতায়। কেউ ক্যালকুলেটরে করছে হিসেব-নিকেশ। চোখের কোণ দিয়ে যে পাশের বন্ধুর উত্তরপত্রে একটু চোখ রাখবে তার উপায় নেই। কারণ, সবার মাথা বাক্সবন্দি। টুকলি রোখার দাওয়াই। পরীক্ষার সময় টুকলি রুখতে ছাত্র-ছাত্রীদের মাথায় কার্ডবোডের বাক্স পরিয়ে দিল কর্নাটকের একটি কলেজ কর্তৃপক্ষ। পড়–য়ারা যাতে একে অপরের খাতা দেখতে না পারে, উত্তর জিজ্ঞাসা করতে না পারে কিংবা অন্য কোনওভাবে নকল করতে না পারে, তার জন্য এই অভিনব পদক্ষেপ। তবে মাথায় এমন বাক্স পরে হলভর্তি ছাত্র-ছাত্রীদের পরীক্ষা দেওয়ার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তে নড়ে-চড়ে বসেছেন শিক্ষা দপ্তরের কর্তারা। হাভেরির ভগত প্রি-ইউনিভার্সিটি কলেজের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বেঙ্গালুরু থেকে ৩৩০ কিলোমিটার দূরের ওই কলেজে প্রথম বর্ষের ছাত্র-ছাত্রীদের মিড-টার্ম রসায়ন পরীক্ষা চলাকালীন তাঁদের মাথায় কার্ডবোর্ডের বাক্স পরানো হয়। বাক্সে চোখের কাছে গোলাকার করে ফুটো করে দেওয়া হয়। যাতে নিজের পরীক্ষার খাতা ছাড়া আশপাশে কে কী লিখছে তা ছাত্র-ছাত্রীরা দেখতে না পায়। কলেজ কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, পরীক্ষায় নকল করা ঠেকাতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। পরীক্ষার হলে কোনওরকম সমস্যা এড়াতে এবং কর্তৃপক্ষের শাসানি এড়াতে নিজেদের মাথায় কার্ডবোর্ডের তৈরি ওই বাক্স পরার প্রস্তাব মেনেও নেয় ছাত্রছাত্রীরা। সোম্যাল মিডিয়ায় এই ঘটনা ছড়িয়ে পড়তেই অনেকে কলেজ কর্তৃপক্ষকে অমানবিক আখ্যা দিয়েছেন। এই ঘটনার কথা জানাজানি হতেই তড়িঘড়ি কলেজে পরীক্ষা চলাকালীন এই ব্যবস্থা বন্ধ করার কথা বলেন কর্ণাটকের শিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকরা। সমপ্রতি শিক্ষামন্ত্রী এস সুরেশ কুমার এই ঘটনাকে কোনওভাবেই সমর্থন করা যায় না বলে কলেজ কর্তৃপক্ষকে ভর্ৎসনা করেন। তাঁর কথায়, “ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে পশুর মতো আচরণ করার অধিকার কারও নেই। এমন অন্যায়ের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”