রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:৫০ অপরাহ্ন

ফাতি-মেসির গোলে স্বস্তির জয় বার্সার

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ১৭ জুন, ২০২০
  • ২৩৭ বার

পেনাল্টি থেকে গোলের পর ফাঁকা মাঠে লিওনেল মেসি কাকে উদ্দেশ্যে করে অদ্ভুত অমন উদযাপন করলেন তা তিনিই ভালো জানেন! তবে ওই গোলে বার্সেলোনা বড় স্বস্তি পেয়েছে সেটি নিশ্চিত। তার আগে ভয় ভাঙিয়েছিলেন আনসু ফাতি। পয়েন্ট টেবিলের তলানীর দলের সঙ্গে জয়টা যেমন সরল হওয়ার কথা ছিল হয়েছে তার উলটোটা। তবে দিনশেষে বার্সেলোনার নামের পাশে নতুন ৩ পয়েন্ট, মেসির গোল, ফাতির রেকর্ড- এসবই আলো কাড়বে বেশি।

ফুটবলের নতুন রূপের সঙ্গে ন্যু ক্যাম্পের পরিচিতি পর্বের শুরুটা আরেকটু হলেই অপ্রীতিকর হয়ে উঠতে পারত। ঘরের মাঠে ৩৮ ম্যাচ অপরাজিত থেকে মাঠে নেমেছিল বার্সেলোনা। অবশ্য লাখ খানেক ধারণক্ষমতা সম্পন্ন গ্যালারি ফাঁকা পড়ে থাকলে সেটা আর ঘরের মাঠের সুবিধা দেয় কই! অসম লড়াইয়ে সেই ‘সুবিধাটুকু’ পুরো কাজে লাগিয়ে দুর্দান্ত শুরু করেছিল লেগানেস। ১১ মিনিটে গোলের ১০ গজ দূরে বল পেয়ে গিয়েছিলেন লেগানেস স্ট্রাইকার মিগুয়েল গেরেরো। শটও করেছিলেন সেখান থেকে। তবে মার্ক আন্দ্রে টের স্টেগানকে হারাতে পারলেও, বার্সার একাদশে ফেরা ক্লেমেন্ত ল্যাংলেটে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন তখন। গোললাইন থেকে বল ক্লিয়ার করে আসলে নিজেদের রক্ষণের ভুলেরই প্রায়শ্চিত্ত করেছেন তিনি।

পরের মিনিটেই আবার গড়বড় পাকাল বার্সার রক্ষণ। গেরেরো তখন বল পেলেন সিক্স ইয়ার্ড বক্সের কোণায়। তিনি আড়াআড়ি শট করেছিলেন ভালোই। সেটা দূরেরপোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে গেলে হাঁপ ছেড়ে বেঁচেছে বার্সা। আর লেগানেস ততোক্ষণে বুঝে গেছে এমন সুযোগ এমন সুযোগ হয়ত আর পুরো সময় মাথা কুটলেও পাবে না তারা! হয়েছেও তাই।

কিকে সেতিয়েন ম্যাচের আগেই একাদশে পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। জর্দি আলবা ছিলেন না নিষেধাজ্ঞায়, তার জায়গায় জুনিয়র ফিরপোই নেমেছিলেন। মিডফিল্ডে সার্জিও বুস্কেটসের সঙ্গী হয়ে শুরু করেছিলেন আর্থার আর ইভান রাকিটিচ। আগের ম্যাচে গোল করা মার্টিন ব্রাথওয়েট, আর্তুরো ভিদাল কেউই ছিলেন না একাদশে। ভিদাল সুযোগ পেলেও সাবেক ক্লাবের বিপক্ষে আর নামাই হয়নি ব্রাথওয়েটের।

ব্রাথওয়েটের জায়গা নেমে আনসু ফাতি অবশ্য নিজের দাবিটা জোরালো করেছেন। ১৭ বছর বয়সী গোল করার আগ পর্যন্ত বার্সেলোনা তেমন আক্রমণই সাজাতে পারেনি। ৪২ মিনিটে বক্সের ঠিক ভেতরে বল পেয়ে নিজের তড়িৎ বুদ্ধির পরিচয় ফাতি দিয়েছেন গোল করে। ডান পায়ে গড়িয়ে বল মেরেছেন প্রথম সুযোগেই, লেগানেস ডিফেন্ডারের পায়ের ফাঁক দিয়ে বটম কর্নারে গিয়ে জড়িয়েছে সেই বল।

ফাতি একটা গোল করলে একটা নতুন রেকর্ড হয়- এই যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। লিগের পঞ্চম গোল করে আরও একবার রেকর্ডবুকে নাম লিখিয়েছেন তিনি। এই শতাব্দীতে লা লিগায় অন্তত ৫ গোল করা দ্বিতীয় কনিষ্ঠ ফুটবলার তিনি। প্রথম জন বোয়ান কিরকিচ। সাবেক বার্সেলোনা স্ট্রাইকারের রেকর্ডটা মৌসুমের বাকি সময়ে ছাড়িয়ে যেতে চাইলেও বোয়ানের পদাঙ্ক হয়ত অনুসরণ করতে চাইবেন না তিনি।

ফাতি অবশ্য বেশিক্ষণ মাঠে থাকেননি। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর দিকে লুইস সুয়ারেজের বদলি হয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন তিনি। প্রথমার্ধে বার্সার সেরা খেলোয়াড় ছিলেন ফাতিই। অন্যদিকে অ্যান্টোয়ান গ্রিযমান আরও একবার ছিলেন নিষ্ক্রিয়। যদিও এরপর কোচের আস্থার প্রতিদান দিয়েও ফেলেছিলেন গ্রিযমান। নেলসন সেমেদোর নিচু ক্রস থেকে ৬৬ মিনিটে বল জালেও জড়িয়েছিলেন তিনি। তবে ভিএআরে বাতিল হয়েছে সেই গোল। মেসির কাছ থেকে পাস রিসিভ করার আগে সেমেদো ছিলেন অফসাইডে।

পরের মিনিটে আরও লম্বা ভিএআর চেক। তার আগে চোখ জুড়ানো মেসির ড্রিবলিং আর গতির খেলা। মিডফিল্ড থেকে লেগানেসের দুই খেলোয়াড়কে কাটিয়ে বক্সের ভেতর ঢুকে পড়েছিলেন মেসি। ফিরতি পাস তার দিকে আসার আগেই অবশ্য হলেন ফাউলের শিকার। রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজানোর পর প্রায় মিনিট দেড়েকের ভিএআর চেকে রেফারির সিদ্ধান্তই বহাল থেকেছে। তবে লেগানেস ডিফেন্ডাররা নিশ্চয়ই প্রতিবাদ করবেন ওই সিদ্ধান্তের! ভাগ্য মন্দ না হলে অমন পেনাল্টি হয়ত পায় না বার্সা!

স্পটকিক থেকে মেসি গোলরক্ষককে ভুল দিকে পাঠিয়ে বল মেরেছেন অন্য প্রান্তে। তাতে ক্যারিয়ারের ৬৯৯ নম্বর গোল পাওয়া হয়ে গেছে মেসির। গোলের পর এক হাত কোমরে দিয়ে, আরেক হাতের তর্জনী উঁচিয়ে নতুন এক উদযাপন করেছেন মেসি। ক্যারিয়ারের ৬৯৯ তম গোলের পর অদ্ভুত উদযাপনে মেসি কী বুঝাতে চাইলেন তা তিনিই ভালো জানেন!

দুই গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর মোটামুটি জয় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল বার্সার। তবে বার্সার পরের ম্যাচের প্রতিপক্ষ সেভিয়ার চিন্তাটা তখন থেকেই করতে হয়েছে সেতিয়েনকে। জেরার্ড পিকে চোটে পড়ে পরে মাঠ ছেড়েছেন। স্যামুয়েল উমতিতি বদলি নেমে দেখেছেন হলুদ কার্ড, নিষেধাজ্ঞার কারণে পরের ম্যাচে তিনি মিস করবেন পরের ম্যাচ। পিকে শেষ পর্যন্ত খেলতে না পারলে রক্ষণ নিয়ে আরেকটু বেশিই ভাবতে হবে বার্সাকে।

ম্যাচের বাকি সময়েও অবশ্য লেগানেস হাল ছাড়েনি। রেলিগেশ বাঁচাতে আসলে তারা প্রাণপনে লড়ে গেছে পুরো সময়। দিনশেষে হারটা তারা মেনেছে সামর্থ্যের কাছে।

লা লিগা আবার শুরু হওয়ার পর রেলিগেশন জোনে থাকা দুই দলের বিপক্ষে পুরো ৬ পয়েন্টই পেল বার্সেলোনা। এবার শুরু হচ্ছে তাদের ‘আসল’ লড়াই। সেভিয়ার পরই আবার বার্সাকে খেলতে হবে অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের সঙ্গে। তার আগে নিশ্চিতভাবেই বার্সাকে ছন্দে ফিরতে হবে পুরোদমে।

সূত্র : প্যাভিলিয়ন

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com