রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:০৮ পূর্বাহ্ন

করোনা পরীক্ষায় আগ্রহ হারাচ্ছে ভুক্তভোগীরা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ১৫ জুলাই, ২০২০
  • ২১৯ বার

করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে যেসব দেশ সফল হয়েছে তারা বেশি বেশি টেস্ট করার ওপর গুরুত্ব দিয়েছে; কিন্তু সংক্রমণের চার মাস পেরিয়ে গেলেও এ দেশে এখনো ৬৪ জেলায় ল্যাব স্থাপন তো দূরের কথা টেস্ট সহজলভ্যও করতে পারেনি সংশ্লিষ্টরা। স্বাস্থ্য অধিদফতরের মারপ্যাঁচে সুস্থতার হার হঠাৎ করে বৃদ্ধি পেলেও টেস্টের সংখ্যা একই জায়গায় ঘুরপাক খাচ্ছে। মৃতের সংখ্যাও দিন দিন ঠিকই বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু টেস্ট করতে গেলে হাসপাতালগুলোতে দীর্ঘ লাইনে থেকেও টেস্ট করতে না পারা, প্রতিদিন নির্দিষ্টসংখ্যক মানুষের টেস্ট করা, পজিটিভ-নেগেটিভ বাণিজ্য ও হাসপাতালগুলোর ভুয়া রিপোর্ট ও দুর্নীতি, টেস্ট করতে গিয়ে হাসাপাতালের সামনে রাতযাপনসহ নানা হয়রানি ও ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে রোগী ও তার স্বজনদের। এতে ভুক্তভোগীরা হতাশ হয়ে পড়েছে। ফলে দিন যতই যাচ্ছে তারা করোনা পরীক্ষা করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। এতে সংক্রমণ ব্যাপকহারে বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে।

রাজধানীর দক্ষিণ সিটিতে বসবাস করেন হারুনর রশীদ। গত দুই সপ্তাহ ধরে জ্বর, সর্দি ও কাশিসহ করোনার নানা উপসর্গ দেখা দিলেও তিনি হাসপাতালের দ্বারস্থ না হয়ে বাসায় আইসোলেশনে রয়েছেন। নয়া দিগন্তকে তিনি বলেন, হাসাপাতালের সেবার মানের যে অবস্থা তাতে সেখানে করোনা টেস্ট করাতে গিয়ে আরো হয়রানি হতে হবে। তার থেকে বাসায় আইসোলশনে রয়েছি। এন্টিবায়োটিক খাচ্ছি। আগের থেকে সুস্থ আছি। গত মাসের মাঝামাঝি সময়ে নাসিমা বেগম ও তার মেয়ের করোনা উপসর্গ দেখা দিলেও নানা হয়রানির ভয়ে বাসায় হোম কোয়ারেন্টিনে থাকেন। এখন তারা সবাই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এর কিছু দিন আগে নাসিমা বেগমের শ্বশুরের করোনা পজিটিভ আসে। তিনিও বাসায় আইসোলোশনে থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন। পরীক্ষা করাতে গিয়ে হাসপাতালে দৌড়াদৌড়ি ও হয়রানির ভয়ে তারা আর করোনা টেস্টই করাতে যাননি বলে তিনি জানান।

একটি বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম বলেন, করোনার যেহেতু নির্ধারিত কোনো ওষুধ নেই, সুতরাং পরীক্ষা করলেই কী আর না করলেইবা কী। চিকিৎসা তো লক্ষণ অনুযায়ী করতে হবে। সুতরাং লক্ষণ দেখা দিলে অটোমেটিক আইসোলেশনে যাওয়াই ভালো। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া নয়া দিগন্তকে বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে সরকার যে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে তাতে দেশের লোকজন হতাশ হয়ে পড়েছে। হাসপাতালগুলোতে গিয়ে ভুক্তভোগীদের নানা ভোগান্তি পোহাতে হয়। তা ছাড়া যেসব হাসপাতাল করোনা পরীক্ষা করছে তাদের অসদাচরণ ও পজিটিভ-নেগেটিভ বাণিজ্য ও দুর্নীতির কারণে মানুষ বিরক্ত। হাসপাতালগুলোর ওপর একপ্রকার আস্থাহীনতা তৈরি হয়েছে। এ জন্য মানুষ করোনা টেস্ট করার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে।

একটি অসমর্থিত সূত্রে জানা গেছে, দেশে করোনাভাইরাস ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু টেস্ট পর্যাপ্ত না হওয়ায় বোঝা যাচ্ছে না কার মাঝে ভাইরাস বাসা বেঁধেছে। স্বাস্থ্য অধিদফতর বলছে, ভুক্তভোগীদের মধ্যে আতঙ্ক থাকায় অনেকেই করোনা টেস্ট করতে আসেন না।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com