করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে যেসব দেশ সফল হয়েছে তারা বেশি বেশি টেস্ট করার ওপর গুরুত্ব দিয়েছে; কিন্তু সংক্রমণের চার মাস পেরিয়ে গেলেও এ দেশে এখনো ৬৪ জেলায় ল্যাব স্থাপন তো দূরের কথা টেস্ট সহজলভ্যও করতে পারেনি সংশ্লিষ্টরা। স্বাস্থ্য অধিদফতরের মারপ্যাঁচে সুস্থতার হার হঠাৎ করে বৃদ্ধি পেলেও টেস্টের সংখ্যা একই জায়গায় ঘুরপাক খাচ্ছে। মৃতের সংখ্যাও দিন দিন ঠিকই বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু টেস্ট করতে গেলে হাসপাতালগুলোতে দীর্ঘ লাইনে থেকেও টেস্ট করতে না পারা, প্রতিদিন নির্দিষ্টসংখ্যক মানুষের টেস্ট করা, পজিটিভ-নেগেটিভ বাণিজ্য ও হাসপাতালগুলোর ভুয়া রিপোর্ট ও দুর্নীতি, টেস্ট করতে গিয়ে হাসাপাতালের সামনে রাতযাপনসহ নানা হয়রানি ও ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে রোগী ও তার স্বজনদের। এতে ভুক্তভোগীরা হতাশ হয়ে পড়েছে। ফলে দিন যতই যাচ্ছে তারা করোনা পরীক্ষা করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। এতে সংক্রমণ ব্যাপকহারে বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে।
রাজধানীর দক্ষিণ সিটিতে বসবাস করেন হারুনর রশীদ। গত দুই সপ্তাহ ধরে জ্বর, সর্দি ও কাশিসহ করোনার নানা উপসর্গ দেখা দিলেও তিনি হাসপাতালের দ্বারস্থ না হয়ে বাসায় আইসোলেশনে রয়েছেন। নয়া দিগন্তকে তিনি বলেন, হাসাপাতালের সেবার মানের যে অবস্থা তাতে সেখানে করোনা টেস্ট করাতে গিয়ে আরো হয়রানি হতে হবে। তার থেকে বাসায় আইসোলশনে রয়েছি। এন্টিবায়োটিক খাচ্ছি। আগের থেকে সুস্থ আছি। গত মাসের মাঝামাঝি সময়ে নাসিমা বেগম ও তার মেয়ের করোনা উপসর্গ দেখা দিলেও নানা হয়রানির ভয়ে বাসায় হোম কোয়ারেন্টিনে থাকেন। এখন তারা সবাই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এর কিছু দিন আগে নাসিমা বেগমের শ্বশুরের করোনা পজিটিভ আসে। তিনিও বাসায় আইসোলোশনে থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন। পরীক্ষা করাতে গিয়ে হাসপাতালে দৌড়াদৌড়ি ও হয়রানির ভয়ে তারা আর করোনা টেস্টই করাতে যাননি বলে তিনি জানান।
একটি অসমর্থিত সূত্রে জানা গেছে, দেশে করোনাভাইরাস ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু টেস্ট পর্যাপ্ত না হওয়ায় বোঝা যাচ্ছে না কার মাঝে ভাইরাস বাসা বেঁধেছে। স্বাস্থ্য অধিদফতর বলছে, ভুক্তভোগীদের মধ্যে আতঙ্ক থাকায় অনেকেই করোনা টেস্ট করতে আসেন না।