বোলিং অনুশীলন শুরু করে দিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান। তবে মাঠে নয়, নিজের বাড়ির আঙিনায়। উঠানকে ২২ গজের ময়দান বানিয়েছেন কাটার মাস্টার! আর সেখানেই বল হাতে নিজেকে শানিয়ে নিচ্ছেন তিনি। মোস্তাফিজ এখন গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরায় অবস্থান করছেন। এতদিন বাসায় ফিটনেস নিয়ে কাজ করেছেন। এবার বল হাতে নেমে পড়েছেন জাতীয় দলের এ পেসার।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বোলিং করার একটা ভিডিও পোস্ট করেছেন মোস্তাফিজ। ক্যাপশন দিয়েছেন, ‘বাসায় বোলিং অনুশীলন।’ মুঠোফোনে মোস্তাফিজ বললেন, ‘এতদিন বাসায় ফিটনেস নিয়ে কাজ করেছি। এখন বোলিং অনুশীলন শুরু করেছি। ক্রিকেট বল দিয়ে প্রায় ১ ঘণ্টার মতো বোলিং অনুশীলন করি।’
করোনা ভাইরাসের শুরু থেকেই ঘরবন্দি ছিলেন টাইগাররা। মার্চে সব শেষ ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে খেলেছেন তারা। তবে সম্প্রতি মাঠে ফিরেছেন জাতীয় দলের বেশ কয়েক জন ক্রিকেটার। মোস্তাফিজও মাঠে ফিরতে মুখিয়ে আছেন। শেরেবাংলা স্টেডিয়ামকে খুব মিস করছেন তিনি। তবে কবে নাগাদ ঢাকায় ফিরবেন তা এখনই নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না। মোস্তাফিজ জানিয়েছেন, তিনি বিসিবির সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছেন। আপাতত সাতক্ষীরায় অনুশীলন করে নিজেকে ফিট রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
আইপিএল মাতিয়েছেন মোস্তাফিজ। সানরাইজার্স হায়দরাবাদ, মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে কাটার মাস্টারের। এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি লিগে অভিষেক হতো তার! তবে ১৮ আগস্ট থেকে শুরু হতে যাওয়া সিপিএলে না খেলার কথাই বলেছেন মোস্তাফিজ। তিনি বলেন, ‘ওই সময় ঢাকা লিগ শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সিপিএলের চেয়েও ঢাকা লিগে খেলাটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছি। তা ছাড়া করোনা ভাইরাসের কারণে বিদেশ ভ্রমণও ঝুঁকিপূর্ণ। সব কিছু মিলিয়ে সিপিএলে না খেলাটাই শ্রেয় বলে মনে করেছি।’
বাংলাদেশ জাতীয় দলের অপরিহার্য খেলোয়াড় মোস্তাফিজ। ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে অভিষেকে সব আলো কেড়ে নিয়েছিলেন বাঁ-হাতি এই পেসার। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পাঁচ বছর পূর্ণ করেছেন। একটা সময় ছিল যখন তিন ফরম্যাটেই সমান বিচরণ করতেন মোস্তাফিজ। এখন ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে নিয়মিত মুখ। এই পেসার সব শেষ টেস্ট খেলেছেন গত বছরের মার্চে নিউজিল্যান্ড সফরে। মোস্তাফিজের তিন ফরম্যাটই পছন্দ। ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টির মতো টেস্ট দলেও নিয়মিত হতে চান তিনি। মোস্তাফিজ বলেছেন, ‘বড় ক্রিকেটার হতে গেলে টেস্ট খেলতে হবে। এই ফরম্যাটে একজন ক্রিকেটার তার স্কিল প্রদর্শন করার সুযোগ পায়। আর ক্রিকেটের শেখরই তো টেস্ট। একজন বোলারের জন্য ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে যে সুযোগ থাকে না টেস্টে তা থাকে। এখানে এক সেশন খারাপ করলে পরের সেশনে তা পুষিয়ে নেওয়ার সুযোগ থাকে। আমি সব সময় লংগার ভার্সনে খেলতে ভালোবাসি।’
বাঁ কাঁধের সøাপে অস্ত্রোপচারের পর থেকে কিছুটা ছন্দ হারিয়ে ফেলেছিলেন মোস্তাফিজ। তবে সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে অনেকটাই ফিরে পেয়েছেন। বল হাতে আবারও আলো ছড়াচ্ছেন। বাঁ-হাতি এই পেসার জানিয়েছেন, হারানো ছন্দ ফিরে পেতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন তিনি। মোস্তাফিজের ভা-ারে রয়েছে কাটার, সেøায়ার, ইয়র্কার। কাটার তার সেরা অস্ত্র। আইপিএলে খেলার সুবাদে লাসিথ মালিঙ্গার কাছ থেকে ইয়র্কারটা আরও ভালোভাবে শিখে নিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘মালিঙ্গার কাছ থেকে পরামর্শ নিয়েছি। আগে যদি ১০টা বলের মধ্যে ৫টা ইয়র্কার মারতে পারতাম এখন ৮টা পারি।’ মোস্তাফিজ এটাও জানিয়েছেন যে, তার বোলিং ভা-ারে আপাতত নতুন আর কোনো অস্ত্র যোগ হচ্ছে না। বরং পুরনো অস্ত্রগুলো শানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।
মাঠে ফেরার অপেক্ষায় কাটার মাস্টার। সতীর্থ, ড্রেসিংরুম মিস করছেন তিনি। জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার পর এবারই প্রথম দীর্ঘসময় ক্রিকেটের বাইরে আছেন। মোস্তাফিজ বলেছেন, ইনজুরির কারণে ক্রিকেটের বাইরে ছিলাম। তবে এবারের প্রেক্ষাপট তো ভিন্ন। ক্রিকেটই বন্ধ। সবাইকে খুব মিস করি। আশা করি, সবাই আবার মাঠে ফিরতে পারব।