তাবলিগ জামাতের দুই গ্রুপের বিরোধ না মেটায় এবারো দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হবে বিশ্ব ইজতেমা। ২০২০ সালের ১০, ১১ ও ১২ জানুয়ারি প্রথম পর্ব এবং ১৭, ১৮ ও ১৯ জানুয়ারি দ্বিতীয় পর্বে তাবলিগ জামাতের এই বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম পর্বে মাওলানা জুবায়েরপন্থী এবং দ্বিতীয় পর্বে মাওলানা সাদপন্থীদের বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে।
আজ সোমবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে তাবলিগের দুই পক্ষের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। বৈঠকে ইজতেমার তারিখ চূড়ান্ত করা হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (রাজনৈতিক ও আইসিটি) আবু বকর ছিদ্দিক গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সভায় ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আব্দুল্লাহ, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, তাবলিগের এক গ্রুপের শুরা সদস্য সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম, অপর গ্রুপের শুরা সদস্য মাওলানা জুবায়ের আহমেদসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। তাবলিগ জামাতের দিল্লির আমির মাওলানা সাদ কান্ধলভী বাংলাদেশে আসবেন না বলেও সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
মাওলানা সাদ কান্ধলভীর বিভিন্ন সময়ে দেয়া বক্তব্য নিয়ে দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে বাংলাদেশের তাবলিগ জামাত। আলেমরা সাদবিরোধী ও সাদপন্থী দুই গ্রুপে বিভক্ত হয়ে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন। এক গ্রুপে রয়েছেন সাদ কান্ধলভীপন্থী বাংলাদেশে তাবলিগের শূরা সদস্য সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম। অপর গ্রুপে রয়েছেন মাওলানা সাদবিরোধী কওমীপন্থী শুরা সদস্য মাওলানা জুবায়ের আহমেদ।
দুই গ্রুপের বিভক্তি চরম আকার ধারণ করে ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে বিশ্ব ইজতেমার সময় মাওলানা সাদের বাংলাদেশে আসার পর। বিরোধীদের বাধার মুখে ইজতেমায় অংশ না নিয়েই মাওলানা সাদকে ওই সময় বাংলাদেশ ছাড়তে হয়েছিল। গত বছরের ১ ডিসেম্বর ইজতেমা মাঠে দুই পক্ষের হতাহতের ঘটনাও ঘটে।
টঙ্গীতে তুরাগ নদীর তীরে বিশ্বের মুসলমানদের দ্বিতীয় বড় ধর্মীয় সম্মেলন ‘বিশ্ব ইজতেমা’র আয়োজন করে আসছে তাবলিগ জামাত। ব্যবস্থাপনার সুবিধার্থে ২০১১ সাল থেকে অঞ্চলভেদে দুই পর্বে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়।
তবে চলতি বছরের (২০১৯) জানুয়ারিতে দুই পক্ষ আলাদাভাবে ইজতেমার তারিখ ঘোষণা করে। নির্বাচনের আগে হওয়ায় সরকার দুই পক্ষের সঙ্গে সভা করে ইজতেমা স্থগিত করে। সরকারের পক্ষ থেকে তখন জানানো হয়, নির্বাচন শেষে দু্ই পক্ষের সঙ্গে বসে অভিন্ন ইজতেমার তারিখ নির্ধারণ করা হবে। এরপর বিবদমান দুই পক্ষ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করলেও বিরোধ মেটেনি। পরে দুই পক্ষের ইজতেমা দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হয়।