করোনাভাইরাসের কার্যকর টিকা সহজলভ্য হওয়ার আগেই বিশ্বব্যাপী এ ভাইরাসে ২০ লাখ মানুষের মৃত্যু হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। গতকাল শুক্রবার সংস্থাটির জরুরি কার্যক্রম বিষয়ক প্রধান মাইক রায়ান বলেছেন, আন্তর্জাতিকভাবে পদক্ষেপ নেওয়া না হলে এ সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে করোনার প্রাদুর্ভাব হয়। এরপর এ যাবৎ করোনায় প্রায় ১০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বিশ্বে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ করোনায় সংক্রমিত হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ৩ কোটি ২০ লাখ মানুষ করোনায় সংক্রমিত হয়েছে। সম্প্রতি বিশেষ করে ইউরোপে সংক্রমণের সংখ্যা বেড়েছে। একে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ বলে মনে করা হচ্ছে। আর এর ফলে অনেকে দেশেই নতুন করে লকডাউন আরোপের ভাবনাচিন্তা চলছে।
ইউরোপের সংক্রমণ পরিস্থিতির বিষয়ে ড. রায়ান বলেন, ‘এই বিশাল এলাকায় করোনোর ভীতিকর বৃদ্ধি আমরা দেখছি। লকডাউন সংক্রমণ প্রতিরোধের একেবারে শেষ প্রায় উপায় বলা যায়। এ মাসে আমরা এই শেষ উপায় নিয়ে ভাবছি। এটা একটা উন্নত ভাবনাই বলা যায়।’
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি এবং মৃত্যুর মধ্যেই বিশ্বজুড়ে একটি কার্যকর টিকার জন্য মরিয়া প্রচেষ্টা চলছে। টিকার জন্য সারা বিশ্বে এখন ১৮০টির বেশি উদ্যোগ চালু আছে। এর মধ্যে ৯টি টিকা তৃতীয় ধাপের ট্রায়ালে আছে। এ পরিস্থিতিতে টিকার এসব প্রচেষ্টার মধ্যে ২০ লাখ মৃত্যু কীভাবে সম্ভব?-এমন প্রশ্নের জবাবে রায়ান বলেন, ‘এটা অসম্ভব নয়।’ তবে তিনি এও বলেন, মৃত্যুর সংখ্যা কিছু কমছে কারণ করোনার চিকিৎসার মান উন্নত হচ্ছে।
তবে রায়ান বলেন, উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা এবং একটি কার্যকর টিকা ২০ লাখ মুত্যু ঠেকাতে সক্ষম নাও হতে পারে। তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার প্রধানদের উদ্দেশে বলেন, ‘মৃত্যুর এ সংখ্যা কমানোর জন্য যা করার দরকার তা করতে কী আমরা প্রস্তুত?’
এ সময় কোভিড-১৯ মোকাবিলায় সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতি আহ্বান জানান সংস্থাটির জরুরি কার্যক্রম বিষয়ক প্রধান। তিনি বলেন, ‘আমরা যদি আমাদের প্রচেষ্টা না বাড়াই তবে আপনারা যেটা অসম্ভব বলছেন , দুঃখজনকভাবে সেটা ঘটবে।’
উল্লেখ্য, চীনের বাইরে করোনাভাইরাসের প্রকোপ ১৩ গুণ বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষাপটে গত ১১ মার্চ দুনিয়াজুড়ে মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। ওয়ার্ল্ডোমিটারস-এর তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৭২ লাখ ৬ হাজার ৭৬৯। মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ৭ হাজার ৯২৩ জনের।