আনতারা মোকারমা আনিকা। কিশোরগঞ্জ অঞ্চলে জনপ্রিয় এক নাম। জেলার বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গান গেয়ে বেড়ায় সে। তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডির ইন্ট্রোতেও লেখা ছিল গান নিয়ে স্বপ্নের কথা। তিনি লিখেছেন, ‘আমি গান গাইতে ভালোবাসি। গান দিয়ে জীবনের সব কষ্ট-দুঃখ ভুলতে চাই, ভুলাতেও চাই।’ এমন স্বপ্নবাজ তরুণীর মৃত্যু হলো ট্রেনে কাটা পড়ে।
আজ শুক্রবার মা-খালার সঙ্গে ঢাকায় যাওয়ার কথা ছিল আনতারা মোকারমা আনিকার। মা আসমা বেগমকে সঙ্গে নিয়ে আজ সকাল সাড়ে ৬টার দিকে যখন কিশোরগঞ্জ রেলস্টেশনে পৌঁছে, তখন আন্তঃনগর ‘এগারোসিন্দুর এক্সপ্রেস’ হুইসেল বাজিয়ে ঢাকার উদ্দেশে চলতে শুরু করেছে। মাকে নিয়ে ট্রেনটিতে উঠতে দৌড় শুরু করে আনিকা। একপর্যায়ে ট্রেনটির নির্ধারিত কম্পার্টমেন্টের নাগাল পেলেও তাতে উঠতে গিয়ে চলন্ত ট্রেনের নিচে চলে যায় আনিকার দুই পা। মুহূর্তেই আনিকার দেহ ছিন্ন-ভিন্ন হয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই মারা যায় আনিকা।
নিজের সামনে মেয়ের এমন মৃত্যুতে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন মা আসমা বেগম। শহরের ৩২ পানির ট্যাংকি এলাকার বাসায় লাশ নিয়ে যাওয়ার পর সেখানে কান্নার রোল পড়ে যায়। স্বজন আর বন্ধুবান্ধবদের কান্না, আহাজারিতে ভারি হয়ে ওঠে পরিবেশ।
যেখান থেকেই আনিকার আমন্ত্রণ আসত, সেখানেই ছুটে যেত গানের নেশায়। কিশোরগঞ্জের আনিকাকে ফেসবুক লাইভেও গাইতে দেখা যেত। নিজের গাওয়া গান দিয়েই ইউটিউবে একটি চ্যানেলও সাজিয়েছিল। এসব কারণে কিশোরগঞ্জের শিল্প-সংস্কৃতির ভুবনে আনতারা মোকারমা আনিকা ছিল এক পরিচিত ও প্রিয় নাম। উদীয়মান কণ্ঠশিল্পী আনতারা মোকারমার আনিকার এমন মৃত্যুতে কাঁদছে তার বন্ধু-স্বজন-শুভাকাঙ্ক্ষীরা। ফেসবুকের ওয়ালে ওয়ালে তার জন্য দেখা যাচ্ছে শোকগাথা।
কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহমান বিশ্বাস বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।