নিজের বাবুর্চিকে পেঁয়াজ ছাড়া রান্না করতে বলেছেন জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ভোট ছাড়া যদি সংসদ হয় পেঁয়াজ ছাড়া তরকারি হবে না কেন?
আজ শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের আকরাম হলে নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরাম আয়োজিত সাদেক হোসেন খোকার স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এ কথা বলেন।
গয়েশ্বর বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলছেন পেঁয়াজ খাবেন না। আমি আমার বাবুর্চিকে বলে দিয়েছি পেঁয়াজ ছাড়া রান্না করেন। এখন অন্যায় অত্যাচারের প্রতিবাদ করলে বলবে, দেশে থাকেন কেন? যদি বলা হয় সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নাই, তাহলে বলবে সংবাদপত্রে চাকরি করেন কেন? উনি এসবই বলবেন।’
পেঁয়াজের সিন্ডিকেটেদের প্রসঙ্গে টেনে গয়েশ্বর বলেন, ‘তবে পেঁয়াজের অপ্রতুলতা থেকে পেঁয়াজের অভাবের প্রচারটা সিন্ডিকেটকে আরো সুযোগ করে দিয়েছে। পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির কারণ সিন্ডিকেটের কারসাজি। কারণ কোনো জিনিসের টান পড়লে তার দাম এমনিতেই বেড়ে যায়।’
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সরকারের ইচ্ছার বাইরে আদালতের মাধ্যমে খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে না। এ কথাটা আমরা আগে বুঝিনি।’
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ করে বিএনপির এ নীতিনির্ধারক বলেন, ‘নিজেকে জাহির করার মন-মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আন্দোলনে মনোনিবেশ করতে হবে। কিছু কিছু নেতাদের পত্রিকায় নাম, ছবি না আসলে ক্ষুব্ধ হন। পত্রিকায় নাম না আসলে কি আন্দোলন হয় না? এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের সময় এত প্রচারমাধ্যম ছিল না। তাহলে সেই সময় কি আন্দোলন হয় নাই?’
বিএনপি নেতাদের বর্তমান আন্দোলন প্রসঙ্গে গয়েশ্বর আরো বলেন, ‘বর্তমান সময়ে বিএনপির আন্দোলন দুই ধারায় প্রবাহিত হচ্ছে। একটি প্রেসক্লাবকেন্দ্রিক আন্দোলন, সংবাদ সম্মেলন এবং আরেকটি বিএনপি কার্যালয়কেন্দ্রিক আন্দোলন। বর্তমানে বিএনপির রাজনীতি হয়ে উঠেছে আত্মরক্ষামূলক রাজনীতি। এই মানসিকতা বাদ দিয়ে আক্রমণাত্মক রাজনীতি করলে জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।’
সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার বিষয়ে সাবেক এই যুবদল সভাপতি বলেন, ‘নির্বাচনের আগে বিএনপি সাতটি দফা দিয়েছিল। একদফা দাবি খালেদার মুক্তি যদি চাইতাম তাহলে খালেদার মুক্তি না হয়ে যেত না। নির্বাচনের ফলাফল যে এমন হবে এটা তো আমরা আগে থেকেই জানতাম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তো আমাদেরকে দাওয়াত দেননি। ড. কামাল হোসেন দাওয়াত চেয়েছেন। চেয়ে দাওয়াত নিলে সেখানে অতিথি আপ্যায়নও তেমনি হয়।’
সাদেক হোসেন খোকার স্মরণে খোকার সাবেক এই রাজনৈতিক সহকর্মী বলেন, উনি একজন আপসহীন নেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। বিএনপি নেতাকর্মী ছাড়াও অনেকেই তার কাছ থেকে নানা সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেছেন। সাদেক হোসেন খোকা ঢাকার অনেক রাস্তার নামকরণ করেছে মুক্তিযোদ্ধাদের নামে। শুধু একজন মুক্তিযোদ্ধার নামের ঢাকার রাস্তার কোনো নামকরণ করা হয়নি তিনি হলেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। উনার নামে বিমানবন্দর রয়েছে দেখে হয়তো উনি এই চিন্তা মাথায় আনেননি।’
স্মরণসভায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, সংসদ সদস্য মো: মোশারফ হোসেন, সাদেক হোসেন খোকার বড় ছেলে প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ফরিদ উদ্দিন, জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের যুগ্ম আহবায়ক ড. কাজী মনিরুজ্জামান মনির প্রমুখ।