করোনাভাইরাসের আরও একটি ভ্যাকসিনের অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহারের অনুমোদন পাওয়া জনসন অ্যান্ড জনসনের এ ভ্যাকসিন এক ডোজের। অর্থাৎ করোনা প্রতিরোধে এর এক ডোজই যথেষ্ট। তাছাড়া এ ভ্যাকসিন দামেও তুলনামূলক সস্তা, সংরক্ষণেও সুবিধা রয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
বিবিসি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ) গতকাল শনিবার এ অনুমোদন দিয়েছে। এর আগে গত ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র ফাইজার ও মডার্নার ভ্যাকসিন অনুমোদন দেয়। যুক্তরাষ্ট্রে জনসনের ভ্যাকসিন আগামী সপ্তাহের শুরুতে পাওয়া যেতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও যুক্তরাজ্য, কানাডা ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন এ ভ্যাকসিনের অর্ডার দিয়েছে। এ ছাড়া কোভ্যাক্স কর্মসূচির অধীন দরিদ্র দেশগুলোয় করোনার ভ্যাকাসিন সরবরাহে জনসনের এই ভ্যাকসিনের ৫০ কোটি ডোজ অর্ডার দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
এর আগে নিজেদের ভ্যাকসিনের কার্যকারিতাসংক্রান্ত ফলাফল গত মাসে প্রকাশ করে জনসন অ্যান্ড জনসন। ওষুধ উৎপাদনকারী বৃহৎ প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী প্রতিষ্ঠান জ্যানসেন বলেছে, তারা যেসব তথ্য-উপাত্ত পেয়েছে, সে অনুযায়ী গুরুতর অসুস্থতার ক্ষেত্রেও এ ভ্যাকসিন উচ্চমাত্রায় কার্যকর।
জনসনের ভ্যাকসিনের অনুমোদন দেওয়ার বিষয়কে স্বাগত জানিয়ে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ‘এটি সব মার্কিনের জন্য দারুণ খবর। এটি উৎসাহব্যঞ্জক এক অগ্রগতি।’ তবে করোনার সংক্রমণ রোধে এখনো অনেক লড়াই চালিয়ে যেতে হবে বলে সতর্ক করেন তিনি।
তথ্য-উপাত্তে দেখা গেছে, গুরুতর অসুস্থতা প্রতিরোধে জনসনের ভ্যাকসিন৮৫ শতাংশের বেশি কার্যকর। তবে সার্বিকভাবে কার্যকর ৬৬ শতাংশ। সার্বিক অবস্থার মধ্যে মধ্যম মাত্রার অসুস্থতাও অন্তর্ভুক্ত। ভ্যাকসিন গ্রহণের ন্যূনতম ২৮ দিন পরের অবস্থাও বিবেচনায় আনা হয়েছে এখানে। যারা এ ভ্যাকসিনের ট্রায়ালে অংশ নিয়েছেন, তাদের কেউ ভ্যাকসিন নেওয়ার ২৮ দিন পর মারা যাননি বা হাসপাতালে ভর্তি হননি।
জনসন অ্যান্ড জনসন বলেছে, আগামী মাসের মধ্যে দুই কোটি ডোজ ভ্যাকসিন সরবরাহ করার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। আগামী জুনের মধ্যে ১০ কোটি ডোজ সরবরাহে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে করা একটি চুক্তির আওতায় তারা এ পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা প্রতিরোধে যেখানে ফাইজার ও মডার্নার ভ্যাকসিন দুই ডোজ প্রয়োজন, সেখানে জনসনের ভ্যাকসিন শুধু এক ডোজই লাগবে না; বরং এর কার্যকারিতার সুফল হিসেবে ভ্যাকসিন প্রয়োগে তুলনামূলক কম চিকিৎসাকর্মী নিয়োগ দেওয়াই যথেষ্ট হবে।