দেশের শেয়ারবাজার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে পারছে না। বিভিন্ন ইস্যুতে অস্থিরতা বিরাজ করছে বলে বিশেষজ্ঞরা জানান। এর আগে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশ দেওয়া নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিদ্ধান্তের কারণে বাজারে দরপতন হয়। এর পর লকডাউনে শেয়ারবাজার বন্ধ হবে এমন গুজবে টানা দরপতন হয়। বিএসইসির তরফ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয় ব্যাংক খোলা থাকলে শেয়ারবাজার চলবে। তার পরও আতঙ্ক দেখা দেয় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। লকডাউনের মধ্যে ঊর্ধ্বগতি ফিরে পায় শেয়ারবাজার। কিন্তু ৬৬ কোম্পানির শেয়ারের ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করে নেয় বিএসইসি। ফলে ফের আতঙ্ক দেখা দেয় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। একদিনের মাথায় তা সংশোধন করলেও বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে পারেনি বিএসইসি।
বাংলাদেশ বিনিয়োগকারী সম্মিলিত জাতীয় ঐক্যের সভাপতি আনম আতাউল্লাহ নাঈম বলেন, ফ্লোর প্রাইস দেওয়া হয়েছিল গত বছর করোনা মহামারীতে যেন পুঁজিবাজারের ক্ষতি না হয়। আবার সেটিকে পরিবর্তন করে দেওয়া হলো করোনার দ্বিতীয় পর্যায়ে। লকডাউনের মধ্যে পুঁজিবাজার ভালো চলছিল। কিন্তু হঠাৎ এমন সিদ্ধান্ত বিনিয়োগকারীদের সিদ্ধান্তহীনতায় ফেলে দিয়েছে। ফ্লোর প্রাইস যখন লেনদেন হচ্ছিল, তখন বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কোনো আতঙ্ক ছিল না। ধারণা ছিল, এর নিচে নামবে না, ফলে লোকসান হবে না। কিন্তু যখন ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে দেওয়া হলো, তখনই আতঙ্ক শুরু হয়। আর লোকসান হতে থাকল। তাই এ সময়ে ফ্লোর প্রাইসে ফিরে যাওয়াই ভালো হবে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গতকাল লেনদেন শুরুর ৫ মিনিটে সূচকের পতন হয় ৩৬ পয়েন্ট। ১৫ মিনিটে পতন হয় ৭০ পয়েন্টের বেশি। তবে লেনদেনের শেষ সময়ে সূচকের পতন আরও বেড়ে ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৯০ দশমিক শূন্য ৭ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ১৬৪ পয়েন্টে। শরিয়াহভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইএস ২০ দশমিক শূন্য ৪ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৭৭ পয়েন্টে। বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক কমেছে ৩৭ দশমিক ৪৭ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ২৪টির, কমেছে ২৬৪টির। দর পাল্টায়নি ৫২টির। মোট লেনদেন হয়েছে ৪৫৬ কোটি টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন ছিল ৪৭৫ কোটি টাকা। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান সূচক ডিএএসপিআই ২৪৭ দশমিক ৪৫ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৯৮৩ পয়েন্টে। লেনদেন হওয়া কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ২৬টির, কমেছে ১৩৯টির। দর পাল্টায়নি ২৭টির। লেনদেন হয়েছে মোট ১৪ কোটি টাকা।