‘গণতন্ত্রকে বাঁচাতে হলে আওয়ামী লীগকে বাঁচাতে হবে’ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শনিবার সকালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২১ তম জাতীয় সম্মেলনের কাউন্সিল অধিবেশনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
কাদের বলেন, আমাদের একমাত্র অপরিহার্য হচ্ছে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। আমরা কেউ অপরিহার্য নই। বাংলাদেশের রাজনীতিতে বাংলাদেশের ক্ষমতার মঞ্চে শেখ হাসিনার কোন বিকল্প নেই। বিকল্প নাই সেজন্য নৌকার পক্ষে সারা দেশে জোয়ার উঠেছে। তার উন্নয়নের পক্ষে তার অর্জনের পক্ষে এবং তার সততার পক্ষে স্বতঃস্ফুর্ততা রয়েছে।
তিনি বলেন, সুনামগঞ্জ থেকে সুন্দরবন, কুতুবদিয়া থেকে পঞ্চগড় সারা বাংলা আজ উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে। নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছি।
কাদের বলেন, আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা একটা কথা মনে রাখতে হবে। আমাদের রাজনীতি এবং যে শিক্ষা আমরা বঙ্গবন্ধু কন্যা আমাদের সভাপতি শেখ হাসিনার কাছ থেকে শিখেছি, মানুষকে ভালবাসলে মানুষও ভালবাসে। মানুষের ভালবাসাই আওয়ামীলীগকে এগিয়ে নিয়ে গেছে। আমাদের শক্তির উৎস বাংলাদেশের জনগণ।
সেতুমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ কারো বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেনি। বারে বারে আমরা ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি। আমাদের নেত্রীর জীবনে ২০ বার প্রাণনাশের হুমকি এসেছে। আল্লাহ পাকের অশেষ রহমত তিনি বেঁচে আছেন। যদি শেখ হাসিনা সে দিন বেঁচে না থাকতেন, যদি শেখ হাসিনা না ফেরার দেশে চলে যেতেন। তাহলে কি বাংলাদেশের সমুদ্র বিজয় হতো। ভারতের সাথে, মিয়ানমারের সাথে সমুদ্রসীমা বাংলাদেশ বিজয় করতে পারতো? বঙ্গবন্ধু কন্যা যদি ফিরে না আসতেন তখন কি হতো এদেশে?
কাদের বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে কোথাও ছিটমহল শান্তিপূর্ণভাবে হস্তান্তর হয়নি। ভারতের সাথে সেই অসম্ভব কাজকে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সেই অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন। তিনি না হলে মহাকাশ বিজয় করতে পারতাম না। সীমান্ত বিজয় করতে পারতাম না।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক নেতাদের উদ্দেশে বলেন, সরকারের মধ্যে দলকে গুলিয়ে ফেলা যাবে না। সরকার কোন দিনও শক্তিশালী হবে না যদি দল শক্তিশালী না হয়। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক শক্তি অপরিহার্য। কিছু কিছু জায়গায় মাঝেমাঝে বিশৃঙ্খলা হয়। বিশৃঙ্খলা মুক্ত করতে হবে। আমাদের হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ কর্মীদেরও দুঃসময়ে পাশে থাকতে হবে। সুসময়ে আসবে আর দুঃসময়ে থাকবে না সেই মৌসুমী অতিথিদের আমাদের দরকার নেই। আজকে যারা মাদক ব্যবসা করে যারা লুটপাট করে যারা জমি দখল করে টেন্ডারবাজি চাঁদাবাজি করে, তাদের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার অ্যাকশন শুরু হয়ে গেছে। এ অ্যাকশন শুধু ঢাকায় নয় সারাবাংলায় চলবে। কেউ যদি মনে করেন স্তিমিত হয়ে গেছে, না অপকর্ম যারা করেন তারা নজরদারিতে আছেন। কখন ধরা খেয়ে যাবেন, ধরা পড়বেন অপেক্ষা করেন। দল থেকে দূষিত রক্ত বের করে দিতে হবে। বিশুদ্ধ রক্ত সঞ্চালন করতে হবে দলের প্রতিটি পর্যায়ে।
তিনি কলেন, বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে বাঁচাতে হলে আওয়ামী লীগকে বাঁচাতে হবে। বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে বাঁচাতে হলে আওয়ামী লীগকে বাঁচাতে হবে। আওয়ামী লীগের কর্মীদের কে বাঁচাতে হবে। অসুস্থ কর্মীদের পাশে দাঁড়াতে হবে। আজ বাংলাদেশের উন্নয়নকে বাঁচাতে হলে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে বাচাতে হবে। শেখ হাসিনা অপরিহার্য তার কোনো বিকল্প নেই।
১৯৪৯ সালের ২৩ জুন রোজ গার্ডেনে জন্ম আওয়ামী লীগের। এখন ঐতিহ্যবাহী এই দলটির বয়স ৬৭ বছর। এ পর্যন্ত দলটির ২০টি জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর আগে দুই দিনব্যাপী আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলন ২০১৬ সালের ২২ ও ২৩ অক্টোবর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে শেখ হাসিনা সভাপতি ও ওবায়দুল কাদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।