শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৫৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
কলকাতায় বাংলাদেশি কনস্যুলেট ঘেরাওয়ের চেষ্টা, সংঘর্ষে আহত পুলিশ চলমান অস্থিরতার পেছনে ‘উদ্দেশ্যমূলক ইন্ধন’ দেখছে সেনাবাহিনী জাতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে যারাই যাবে, তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে : জামায়াত আমির বিচারপতিকে ডিম ছুড়ে মারার ঘটনায় প্রধান বিচারপতির উদ্বেগ ইসরাইলের বিরুদ্ধে জয় ঘোষণা হিজবুল্লাহর বাংলাদেশ ইস্যুতে মোদির সাথে কথা বলেছেন জয়শঙ্কর ইসকন ইস্যুতে কঠোর অবস্থানে সরকার : হাইকোর্টকে রাষ্ট্রপক্ষ আইনজীবী সাইফুল হত্যা : সরাসরি জড়িত ৮, শনাক্ত ১৩ র‍্যাবের সাবেক ২ কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ ছেলেসহ খালাস পেলেন বিএনপি নেতা খন্দকার মোশাররফ

বাড়ছে ভর্তুকি-সুদ বরাদ্দ

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ৫ জানুয়ারী, ২০২২
  • ১৩৪ বার

আর্থিক খাতে করোনার সংক্রমণে সৃষ্ট টানাপড়েনের মধ্যে চলতি বাজেট কাটছাঁট হচ্ছে। এরমধ্যে কমপক্ষে ১০ হাজার কোটি টাকা কাটছাঁটের লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ব্যয়ে।

সাশ্রয় হওয়া এ অর্থ ব্যয় করা হবে ভর্তুকি ও ঋণের সুদ খাতে। কারণ বিশ্ববাজারে জ্বালানি, এলএনজি গ্যাস, সার ও নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে ভর্তুকিতে। এ খাতের ব্যয় লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে।

একই সঙ্গে বেড়েছে সরকারের বিভিন্ন ঋণের সুদ পরিশোধ ব্যয়। পরিস্থিতি সামলাতে ভর্তুকি ও ঋণের সুদ খাতে আরও বরাদ্দের প্রয়োজন হবে।

তবে হাত দেওয়া হবে না রাজস্ব আয় ও পরিচালন খাতে। কাটছাঁটের এমন লক্ষ্যমাত্রা স্থির করে অর্থ মন্ত্রণালয় শুরু করেছে চলতি অর্থবছরের বাজেট সংশোধনীর কাজ। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।

চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের মোট বাজেটের আকার ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮২ কোটি টাকা। গত নভেম্বর বাজেটের টাকা খরচ হয়েছে ১ লাখ ৩২ হাজার ৮৭৮ কোটি টাকা। ধারাবাহিক নিয়মে অন্যান্য বছরের ন্যায় এবারও বাজেট কাটছাঁট করা হচ্ছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা যুগান্তরকে জানান, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) সরকারের নিজস্ব অর্থ এবং বৈদেশিক সহায়তার অংশ রয়েছে। সংশোধিত বাজেটে বৈদেশিক সহায়তার অংশ থেকে কাটছাঁট করা হবে। এ লক্ষ্যে সংশ্লিষ্টদের চিঠি দেওয়া হয়েছে অর্থ বিভাগ থেকে।

জানা গেছে, ২ লাখ ২৫ হাজার ৩২৪ কোটি টাকা এডিপির মধ্যে বৈদেশিক সহায়তার অংশ ৮৮ হাজার ২৪ কোটি টাকা। অর্থ বিভাগ এখান থেকে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা কাটছাঁটের লক্ষ্য স্থির করেছে।

তবে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের গতি যাতে না কমে সে জন্য নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এরই মধ্যে। বিশেষ করে উন্নয়ন প্রকল্পের বরাদ্দ শতভাগ ব্যয়ের ক্ষেত্রে কোনো বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়নি। যদিও আগের বছরে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত ব্যয় না করার ওপর বিধিনিষেধ ছিল।

এছাড়া মাঠপর্যায়ে অর্থ প্রবাহ বাড়াতে এডিপির তৃতীয় কিস্তির অর্থ স্বয়ংক্রিয়ভাবে ছাড় করা হয়েছে। কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই প্রকল্প পরিচালকরা তৃতীয় কিস্তির অর্থ ব্যয় করতে পারবে।

এসব উদ্যোগের ফলে জুলাই-নভেম্বরে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে ৪৪ হাজার ৬১ কোটি টাকা। যা গত ৫ বছরের একই সময়ের তুলনায় বাস্তবায়ন হার বেশি।

জানতে চাইলে বিআইডিএসের সাবেক মহাপরিচালক এমকে মুজেরি যুগান্তরকে বলেন, বাজেট প্রণয়নের সময় কত টাকা বিদেশি সহায়তা মিলবে এর একটি হিসাব করা হয়। অর্থবছরের বছরের ৬ মাস চলে গেছে।

আগামী ৬ মাসে এ সহায়তা কতটুকু পাওয়া যাবে এর একটি বাস্তব হিসাব করা এখন সম্ভব। সে দৃষ্টিকোণ থেকে বাজেট সংশোধনের ক্ষেত্রে বৈদেশিক সহায়তার লক্ষ্যমাত্রা কমানো হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, দেশি সম্পদেরও একটি হিসাব বছরের শুরুতে করা হয়েছে।

ফলে সেটিও পর্যালোচনা করা দরকার। সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পে বৈদেশিক সহায়তা কমাতে যেয়ে দেশীয় এবং বিদেশি অর্থায়নের মধ্যে অসামঞ্জস্য সৃষ্টি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। চলতি বাজেটে ভর্তুকি ধরা হয়েছে ৪৮ হাজার কোটি টাকা।

কিন্তু অর্থ বিভাগ হিসাব করে দেখছে এর পরিমাণ আরও বাড়বে। বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম বৃদ্ধিতে দেশে জ্বালানি তেল, সার, গ্যাসের ভর্তুকি বেড়ে ৭০ হাজার কোটি টাকার বেশী হবে।

ভর্তুকির পরিমাণ কমিয়ে আনতে নতুন করে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর চিন্তা করা হচ্ছে। সূত্র জানায়, গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম সমন্বয়ের পরও ভর্তুকি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১০ হাজার কোটি টাকা বেশি হবে। যা শেষ পর্যন্ত ৭০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।

এছাড়া সুদের ব্যয়ও বাড়বে। সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমানোর পরও সুদ খাতে ব্যয় সামাল দেওয়া যাচ্ছে না। অন্যান্য সুদের ব্যয়ও বাড়ছে। সরকার এ বছর সুদ পরিশোধের জন্য ৬৮ হাজার ৬০৯ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছে। এ অর্থ দিয়েও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাচ্ছে না।

এ বছর সরকারের পরিচালনা ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ লাখ ২৮ হাজার ৮৪১ কোটি টাকা। বাজেট সংশোধন করতে গিয়ে পরিচালনা ব্যয় সর্ম্পকে মন্ত্রণালয়গুলোর কাছে কয়েকটি তথ্য চেয়ে চিঠি দিয়েছে অর্থ বিভাগ।

সেখানে বলা হয়, মন্ত্রণালয়গুলোতে বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি ও টেলিফোন খাতে কত টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে এবং বিপরীতে ব্যয়ের পরিমাণ লিখিত আকারে জানাতে হবে। এছাড়া ভূমিকর বাবদ বরাদ্দকৃত অর্থের মধ্যে ব্যয়ের পরিমাণও জানাতে হবে।

এছাড়া পেট্রোল, ডিজেল ও সিএনজি চালিত যানবাহনের সংখ্যা পৃথকভাবে উল্লেখ করে পেট্রোল ও লুব্রিকেন্ট খাতে প্রস্তাবিত বরাদ্দের পক্ষে যৌক্তিক কাগজপত্র উপস্থাপন করতে বলা হয়েছে।

আর সরকারি চাকরিজীবীদের মধ্যে যারা পিআরএল-এ যাবেন, তাদের তালিকা ও প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দের পরিমাণ এবং শ্রান্তি-বিনোদন ছুটিতে যাবেন- এমন কর্মকর্তাদের তথ্য চাওয়া হয়েছে।

এদিকে ব্যবসা বাণিজ্যে গতি ফেরায় রাজস্ব খাতেও আদায়ের পরিমাণ গত বছরের তুলনায় বেড়েছে। গত ৫ মাসে মোট রাজস্ব আয় হয়েছে ১ লাখ ২৩ হাজার ৫৫৮ কোটি টাকা। তবে এ বছর সংশোধিত বাজেটে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা কমানো হচ্ছে না।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com