বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩২ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
কলকাতায় বাংলাদেশি কনস্যুলেট ঘেরাওয়ের চেষ্টা, সংঘর্ষে আহত পুলিশ চলমান অস্থিরতার পেছনে ‘উদ্দেশ্যমূলক ইন্ধন’ দেখছে সেনাবাহিনী জাতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে যারাই যাবে, তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে : জামায়াত আমির বিচারপতিকে ডিম ছুড়ে মারার ঘটনায় প্রধান বিচারপতির উদ্বেগ ইসরাইলের বিরুদ্ধে জয় ঘোষণা হিজবুল্লাহর বাংলাদেশ ইস্যুতে মোদির সাথে কথা বলেছেন জয়শঙ্কর ইসকন ইস্যুতে কঠোর অবস্থানে সরকার : হাইকোর্টকে রাষ্ট্রপক্ষ আইনজীবী সাইফুল হত্যা : সরাসরি জড়িত ৮, শনাক্ত ১৩ র‍্যাবের সাবেক ২ কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ ছেলেসহ খালাস পেলেন বিএনপি নেতা খন্দকার মোশাররফ

১০০ টাকার খেলাপির মধ্যে ৮৮ টাকাই মন্দ ঋণ; বঞ্চিত হচ্ছেন শেয়ারহোল্ডাররা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ৬ মার্চ, ২০২২
  • ১২৬ বার

ব্যাংকিং খাতে মন্দ ঋণ বেড়ে যাওয়ায় প্রায় ৪২ হাজার কোটি টাকার মুনাফা স্থগিত করা হয়েছে। গত ৩১ ডিসেম্বর শেষে ১ লাখ ৩ হাজার ২৭৩ কোটি টাকার খেলাপি ঋণের মধ্যে ৯১ হাজার ৫৮ কোটি টাকাই মন্দ ঋণ। এ হিসাবে ১০০ টাকার খেলাপি ঋণের মধ্যে ৮৮.১৭ টাকাই মন্দ ঋণ, যা আদায় অযোগ্য বলে মনে করা হয়। যা বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী, এ মন্দ ঋণের বিপরীতে সুদ আয় স্থগিত করে রাখা হয়েছে। পাশাপাশি এ ঋণের বিপরীতে ব্যাংকগুলোর আয় খাত থেকে টাকা এনে প্রভিশন রাখতে হয়েছে। এর ফলে এক দিকে ব্যাংকগুলোর মুনাফা কমে যাচ্ছে, পাশাপাশি শেয়ারহোল্ডাররাও বছর শেষে প্রকৃত লভ্যাংশ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। একই সাথে টাকা আটকে যাওয়ায় ব্যাংকের বিনিয়োগ সক্ষমতা কমে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, এক বছর আগেও অর্থাৎ ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বরে ৮৮ হাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণের মধ্যে ৩৬ হাজার কোটি টাকার মুনাফা স্থগিত রাখা হয়েছিল। এক বছর পরে মুনাফা স্থগিতের পরিমাণ ৬ হাজার কোটি টাকা বেড়ে হয়েছে ৪২ হাজার কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী, খেলাপি ঋণের বিপরীতে সম্পদ থাকলেও ১৫ শতাংশ প্রভিশন রাখতে হয়। আগে সম্পদ থাকলে কোনো প্রভিশন রাখতে হতো না। আবার মন্দ ঋণ ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদ হিসাবে ধরা হয়। আর এ ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের বিপরীতে ব্যাংকগুলোকে ১০০ শতাংশ প্রভিশন রাখতে হয়। প্রভিশন ঘাটতি হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে ব্যাংকগুলোর জরিমানা বা তিরস্কার গুনতে হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তিরস্কার বা জরিমানার হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ব্যাংকের আয় খাত থেকে টাকা এনে প্রভিশন ঘাটতি পূরণ করে থাকে। পাশাপাশি, মন্দ ঋণের বিপরীতে অর্জিত সুদ ব্যাংকগুলোর আয় খাতে স্থানান্তর করা হয় না। অর্জিত সুদ ব্যাংকের আলাদা হিসেবে স্থগিত করে রাখা হয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ব্যাংকগুলোর ৯১ হাজার কোটি টাকার মন্দ ঋণের মধ্যে ছয় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকেরই প্রায় অর্ধেক অর্থাৎ ৪২ হাজার ২৪২ হাজার কোটি টাকা। মন্দ ঋণের কারণে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মুনাফা স্থগিত করা হয়েছে ২০ হাজার ১১৪ কোটি টাকা।

মন্দ ঋণ বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, বিগত কয়েক বছরে সরকারি ব্যাংকগুলোতে হলমার্ক, বিসমিল্লাহ, এনন টেক্স, থার্মেক্স, বেসিক ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারিসহ বড় বড় ঋণ কেলেঙ্কারি হয়েছে। এসব ঋণ দীর্ঘ দিন যাবৎ অনাদায়ী রয়েছে। মূলত ঋণকেলেঙ্কারি বেড়ে যাওয়াই মন্দ ঋণ বেড়ে গেছে। মন্দ ঋণ আদায়ের জন্য ব্যাংক আদালতে মামলা করে থাকে। কিন্তু আইনি জটিলতায় তা বছরের পর বছর অনাদায়ী থাকে। কেননা এসব ঋণ রাজনৈতিক বিবেচনায় বিতরণ করা হয়। আর এ ক্ষেত্রে ঋণের বিপরীতে পর্যাপ্ত জামানত নেয়া হয় না।

বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক আলোচ্য সময়ে সুদ স্থগিত করেছে ১৯ হাজার ৭৭৬ কোটি টাকা। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর ৫১ হাজার ৫২০ কোটি টাকার খেলাপি ঋণের মধ্যে ৪৩ হাজার ১৬৪ কোটি টাকাই মন্দ ঋণ। এ সময়ে বিদেশী ব্যাংকগুলো সুদ স্থগিত করেছে ৩৬০ কোটি টাকা। আর বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর সুদ আয় স্থগিত করে রাখা হয়েছে ১ হাজার ৫১১ কোটি টাকা।

মন্দ ঋণ বেড়ে যাওয়ায় প্রভিশন সংরক্ষণ করতে গিয়ে ব্যাংকগুলোর নিট আয় কমে গেছে। শুধু ব্যাংকগুলোর নিট লোকসানই বাড়েনি, ব্যাংকগুলোর ইতোমধ্যে মূলধন ঘাটতি বেড়ে গেছে। পাশাপাশি সাধারণ শেয়ারহোল্ডাররা বছর শেষে প্রকৃত লভ্যাংশ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com