নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলীর আগামী প্রাইমারী নির্বাচনে ডিষ্ট্রিক্ট ৩৭ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশী আমেরিকান মেরী জোবাইদাকে একজন যোগ্য প্রার্থী হিসেবে তাকে বিজয় করার আহ্বান জানিয়েছেন। নিউইয়র্কে আয়োজিত পৃথক দু’টি ফান্ড রেইজিং অনুষ্ঠানে বক্তারা এই আহ্বান জানান।
জ্যামাইকাতে বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সভাপতি ও ফোবানা কনভেনশ-২০১৯ এর কনভেনর নার্গিস আহমেদ তার বাসায় গত ৪ জানুয়ারী শনিবার মেরী জোবাইদার সমর্থনে আয়োজিত ব্যতিক্রমী ফান্ড রেইজিং অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রবীণ প্রবাসী ড. দেলোয়ার হোসেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন আয়োজক নার্গিস আহমেদ নিজেই। এতে বক্তব্য রাখেন নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সভাপতি ডা. ওয়াজেদ এ খান, ডা. দিলরুবা হোসেন, ডা. আব্দুল লতিফ, বিশিষ্ট রিয়েল এস্টে ইনভেস্টর আনোয়ার হোসেন, ওয়েল কেয়ার কর্মকর্তা সালেহ আহমদ, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট আসাদুল বারী, ফেরদৌস খান, আসিফ বারী, মুনমুন হাসিনা, আনোয়ার হোসেন, শানিম আহমদ, ডা. ফারুক আজম, পলাশ পিপলু, ড. বিলকিস রহমান, সাহেলা আজিম, রুপা আব্দুল্লাহ, রুকসানা আরা, মুশতাক আহমদ, লুৎফুর রহমান, আহসান হাবিব, ফার্মাসিস্ট আব্দুল্লাহ নাসিম. ড. মোজাফফর হোসেন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে মেরী জোবাইদা তার বক্তব্যে আমেরিকায় তার শেকড়ের কথা জানিয়ে বলছেন, নিজ এলাকা তথা নিউইয়র্কবাসীর ক্ষমতাকে জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার কথা। তিনি বলেন, মাত্র কতিপয় ব্যক্তি নিজেদের খেয়াল খুশিমত আইন প্রণয়ন করছে। সাধারণ মানুষের আবেগ অনুভুতি চাহিদার সাথে যার কোন সম্পর্ক নেই। তারা বিশেষ মহল এবং কর্পোরেট অর্থের কাছে নিজেদের বন্ধক রেখেছে। যার ফলে নিম্ব মধ্যবিত্ত দরিদ্র, সাধারণ মানুষের স্বার্থ নিয়ে মাথা ব্যাথা নেই তাদের। এসবের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন তিনি।
মেরী মনে করেন, জনগনের ক্ষমতা জনতার হাতে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে আলেজান্দ্রিয়া ওকাসিও কর্টেজ এক নজীরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। যিনি কোটি প্রাণে নতুন আশার প্রদীপ জালিয়েছেন।
সাধারণনের স্বার্থ সংরক্ষণে মেরী জোবাইদা তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে বলেছেন, তারা কোন কর্পোরেট, রিয়েল এস্টেট ডেভোলাপার বা লবিষ্টদের অর্থ নেবেন না। সাধারণ মানুষের ক্ষুদ্র অনুদানই হচ্ছে তাদের মুখ্য শক্তি। এদের নিয়েই তারা একটি আন্দোলন শুরু করতে চান। যে আন্দোলনে এখন অভাবনীয় সাড়া পড়েছে পুরো নিউইয়র্কে।
অনুষ্ঠানে বক্তারা মেরী জোবাইদার বিভিন্ন কর্মসূচী এবং তার বক্তব্যে আমেরিকার রাজনীতিতে গুনগত পরিবর্তন আনার জন্য এধরনের নতুনদের সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
নার্গিস আহমেদ বলেন, মেরী জোবাইদা একজন তরুনী। তিনি একজন পরিক্ষিত কমিউনিটি অ্যাক্সিভিস্ট হিসেবে ইতোমধ্যেই নিজেকে যোগ্য হিসেবে প্রমাণ করেছেন। সাহস ও সততাকে পুঁজি করে সামনে এগুলো জনগণের ভালবাসায় সিক্ত হওয়ার উৎকৃষ্ট উপমা হচ্ছেন মেরী জোবাইদা।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ড. দেলোয়ার হোসেন বলেন, প্রচলিত রাজনীতির বার্তাবরণ থেকে আমরা কোনভাবেই বেরিয়ে আসতে পারছিলাম না। মেরী জোবাইদার কথায় আমি নতুন সুর্যোদয়ের সম্ভাবনা দেখছি। কমিউনিটির সবাইকে আহ্বান করবো এধরনের একজন সৎ ও যোগ্য তরুণীর সাহায্যে সবাই এগিয়ে আসুন। আমরা অনেক দিয়েছি। এখন আমাদের নেয়ার সময় এসেছে। আইন সভায় আমাদের নিজস্ব লোকজনের উপস্থিতি প্রয়োজন। এক্ষেত্রে মেরী জোবাইদা কমিউনিটির জন্য এক নতুন সম্ভাবনার সৃষ্টি করেছেন বলে আমরা মনে করি।
মেরী জোবাইদাকে ওজন পার্ক ইস্ট নিউইয়র্ক ডেমোক্রেট ক্লাবের এনডোর্সমেন্ট
অপরদিকে নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলীর ডিস্ট্রিক্ট ৩৭ থেকে আগামী প্রাইমারী নির্বাচনে প্রার্থী মেরী জুবাইদা-কে এনডোর্স করেছে ওজন পার্ক ইস্ট নিউইয়র্ক ডেমোক্রেট ক্লাব। ক্লাব-এর আয়োজনে ওজনপার্কের এভিনিউ হলে আয়োজিত এক ফান্ড রেইজিং অনুষ্ঠানে তাকে এনডোর্স করা হয়।
ফান্ড রেইজিং কমিটির কনভেনর মূলধারার রাজনীতিক আনোয়ার হোসেন, সদস্য সচিব আল আমান মসজিদ পরিচালনা কমিটির প্রেসিডেন্ট কবীর চৌধুরী ও প্রধান সমন্বয়ক রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী খায়রুল ইসলাম খোকনের সার্বিক তত্বাবধানে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মেরী জোবাইদার সাফল্য কামনা করে বক্ত্যব রাখেন সাপ্তাহিক পরিচয় সম্পাদক নাজমুল আহসান, মূলধারার রাজনীতিক গিয়াস আহমেদ, প্রিন্সিপ্যাল মোহাম্মদ সুলতান কবীর, কমিউনিটি নেতা সামসুদ্দিন সোনাই, আবদুল মান্নান, মুজাহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন মাওলানা রশিদ আহমদ। অনুষ্ঠানের মডারেটর ছিলেন আনোয়ার খান। অনুষ্ঠানে ডেমোক্রেটিক ক্লাবের পক্ষ থেকে মেরী জোবইদা-কে এনডোর্সমেন্ট করা হয়। বক্তারা মেরী জোবাইদাকে একজন সৎ ও যোগ্য প্রার্থী হিসাবে উল্লেখ করে কমিউনিটির স্বার্থে তাকে বিজয়ী করতে সবার সহযোগিতা কামনা করা হয়। এই ফান্ড রেইজিং কমিটির কো কনভেনার ছিলেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী পারভেজ সাজ্জাদ, নিজাম উদ্দিন ও রশিদ আহমেদ। বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের বক্তারা মেরী জোবাইদাকে এই সময়ের একজন সাহসী বাংলাদেশী নারী হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, তিনি মূলধারার নির্বাচনে অংশ নিয়ে সাহসের পরিচয় দিয়েছেন। আসন্ন এই নির্বাচনে মেরী জোবাইদাকে বিজয়ী করতে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। মনে রাখতে হবে মেরীর জয় মানে বাংলাদেশী কমিউনিটির জয়। এজন্য বক্তারা নিউইয়র্কের ষ্টেট ডিস্ট্রিক্ট ৩৭ এর মধ্যে লং আইল্যান্ড সিটি, এস্টোরিয়া, সানি সাইড, উডসাইড, মাসপ্যাথ ও রিজউডে বসবাসরত বাংলাদেশীদের মেরীর সমর্থনে এগিয়ে আাসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে মেরী জোবাইদাকেও বিজয়ী করা অসম্ভব কিছু নয়।